বর্ষসেরা শিশু
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার ১৫ বছরের শিশু হেমান বেকেলে ক্যান্সারের চিকিৎসায় সাবান আবিষ্কার করে টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের বর্ষসেরা শিশু নির্বাচিত হয়েছেন। স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিতে তিনি প্রায় তিন বছর ধরে বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আসছেন। বাড়িতে যা কিছু পেতেন তা মিশ্রিত করতেন। আশা করতেন এসব মিশ্রণে কিছু হয় কি-না তা দেখার অপেক্ষায় থাকতেন। টাইম ম্যাগাজিনের শনিবার প্রকাশিত বিশেষ সংস্করণের শিরোনাম এবং প্রচ্ছদে তার ছবি ছাপা হয়। শুধু মাত্র ত্বকের ক্যান্সার চিকিৎসায় খুব সস্তা সাবানের বার আবিষ্কার করে তার এই অর্জন। শুধু তাই নয়, সাবানের বার আবিষ্কারের জন্য ২০২৩ সালের অক্টোবরে তাকে ‘আমেরিকার সেরা তরুণ বিজ্ঞানী নির্বাচিত করা হয়েছিল।
তিনি বলেছেন, ‘এগুলো ছিল কেবল ডিশ সাবান, লন্ড্রি ডিটারজেন্ট এবং সাধারণ গৃহস্থালীর রাসায়নিক উপাদান।’ তিনি যে উপাদানগুলো ব্যবহার করতেন সে সম্পর্কে বলেন, ‘আমি এসব মিশ্রণ আমার বিছানার নিচে লুকিয়ে রাখতাম এবং দেখতাম রেখে দিলে কী হবে। এলোমেলোভাবে একসঙ্গে অনেকগুলো রাসায়নিকের মিশ্রণ ছিল।’ বিষয়টির কিছুটা আঁচ করতে পেরে তার বাবা-মা তার ওপর কড়া নজর রাখতেন। দেখা গেল, প্রাপ্তবয়স্কদের দেখে দেখে সে এমন কিছু করে তা হেমনকে অভ্যস্ত করে তোলে।
আজকাল, অনেক লোক তাকে সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ করে। গত অক্টোবরে, ৩-এম নামক একটি কোম্পানি এবং ডিসকভারি এডুকেশন ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টির উডসন হাই স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র হেমনকে তরুণ বিজ্ঞানী বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত করেছে। তাকে ২৫ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমন একটি সাবান আবিষ্কার করেছে যা ত্বকের ক্যান্সারের একাধিক রূপকে প্রতিরোধ করতে পারে।
এই ধরনের পণ্য বাজারে আসতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে, কিন্তু এই গ্রীষ্মে হেমান ইতোমধ্যেই বাল্টিমোরের জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের একটি ল্যাবে কাজ করে প্রতি সপ্তাহের কিছু অংশ ব্যয় করছেন, তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার আশায়। যখন স্কুলের অ্যাসেমব্লি শুরু হয়, তখন সে সেখানে প্রায়ই অনুপস্থিত থাকে।
তিনি বলেছেন, ‘আমি ত্বক-ক্যান্সার গবেষণার বিষয়ে সত্যিই উৎসাহী।’ ‘সেটা আমার নিজস্ব গবেষণা হোক বা অন্য কোনো ক্ষেত্র থেকে হোক। এটা ভাবা একেবারেই অবিশ্বাস্য যে, একদিন আমার সাবানের বার অন্য কারও জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। এই কারণেই আমি এই সাবান তৈরিতে মশগুল ছিলাম।’
এটা সেই উচ্চাকাক্সক্ষা সেই নিঃস্বার্থতার প্রমাণ হেমনকে ২০২৪ সালের জন্য টাইমের ‘কিড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।