যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত মানলে জিএসপি সুবিধা পাবে বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ-অর্থ উপদেষ্টার বৈঠক কৃষি-জ্বালানি-জলবায়ু খাতে বিনিয়োগের আহবান
বাংলাদেশের কৃষি, জ্বালানি, জলবায়ু খাতসহ অন্যান্য খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের আরো বেশি বিনিয়োগ আহবান জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ এর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
অর্থনৈতিকভাবে তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বড় বিনিয়োগ রয়েছে। আপনারা দেখবেন বাগেরহাট, পিরোজপুরসহ উপকূলীয় অঞ্চলের বিনিয়োগ রয়েছে। তারা কিন্তু কৃষিখাতসহ বিভিন্ন জায়গায় সহায়তা করছে। মূলকথা হচ্ছে কৃষি, এনার্জি, জলবায়ু খাতসহ অন্যান্য খাতে আরো বেশি বিনিয়োগ করার কথা বলেছি। তিনি বলেন, বিশেষ করে বন্যা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বলেছি। সবচেয়ে বেশি বেসরকারিখাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশেষ করে বিজিএমইএ ও জিএসপি নিয়ে তাদের কিছু শর্ত আছে সেগুলো পালনের তাগিদ দিয়েছে। এছাড়া আমাদের রফতানি, বিনিয়োগ বা সরাসরি বিনিয়োগ এবং যৌথ বিনিয়োগ যদি করতে চায় তাহলে করবে। বিশেষ করে বেসিসসহ যেসব টেকনিক্যাল খাত রয়েছে সেখানে কি করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তারা বলেছে এতো দিন নেগোসিয়েশন একটু সেøা ছিল। আমরা তাদের বলেছি আমরা বিরাট একটা ঋণে আছি। তবে ইউএসএর সাথে আমাদের ঋণ নেই। তারা যেসব সাহায্য করেছে সবগুলো কিন্তু ঋণ নয় সবই গ্রান্ড। সেদিক থেকে তাদের ঋণে আমরা ভারাক্রান্ত না। সেজন্য তাদের বলেছি সাহায্য করতে। তারা দ্রুতই কৃষিখাতে সাহায্য করবে। আর কিছু কিছু বিষয়ে তাদের হাই লেভেলের ভিজিটর আসবে। তাদের সাথে আলোচনা করা হবে। তবে কে আসবে সেটা এখনই বলা যাবে না। আসলে জানতে পারবেন।
ইউএস কোম্পানিগুলো কিছু অভিযোগ ছিলো যে তারা তাদের টাকা নিতে পারছে না এবং আমাদের অনেক কোম্পানির নিষেধাজ্ঞা ছিলো এসব বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এতো গভীরে আলোচনা করিনি, তবে তারা বলেছে আমাদের যেসব বিষয় ঝুলে আছে সেগুলোর কিছু কিছু ইস্যু নিয়ে তাদের আপত্তি আছে। যেমন, শ্রম আইন। এবিষয়ে বলেছি এটা আমরা দ্রুতই দেখবো। এছাড়া অন্যান্য ঝুলে থাকা ইস্যুগুলো দ্রুত সমাধান করবে বলে আস্বস্ত করেছেন। সামনের বিশ্ব ব্যাংকের মিটিং রয়েছে সেখানে এসব বিষয় নিয়ে আবার আলোচনা করবো। জিএসপি নিয়ে কি আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জিএসপির সব শর্ত আমরা পালন করতে পারছি না। শর্ত প্রতিপালন না হলে তাদের হাই লেভেলের কংগ্রেস এগুলো অনুমোদন করবে না। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত মানলে জিএসপি সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে জিএসপি উঠিয়ে নেয়া হয়েছিলো সে রকম কোনো বিষয় কি না এমন প্রশ্নের জাবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ইউএসএর যে শর্ত সেটা রাজনীতির না। তাদের অনেকগুলো ডিপার্টমেন্ট আছে তারা যদি অনুমোদন না দেয় তাহলে কংগ্রেসম্যান কিছু করতে পারে না। তবে বিভিন্ন সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ বাণিজ্য ও সরাসরি বিনিয়োগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক অগ্রগতি আশা করছে বাংলাদেশ। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কেন এসেছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি এসেছেন অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া উপদেষ্টা বলেন, উপকূলীয় এলাকার উন্নয়নের অর্থায়ন নিয়েও কথা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। মার্কিনিদের নিয়ে বাংলাদেশ ভারাক্রান্ত না, কারণ তাদের বেশিরভাগই ঋণ নয় বরং অনুদান।