ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ৩০ বছর করতে চীনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘‘লো-কস্ট (কম সুদে) ঋণ আনা আমাদের সব সময়ই অগ্রাধিকার, আমরা চাই ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়াতে। আমরা চীনকে বলেছি, তাদের দেওয়া ঋণের রি-পেমেন্ট পিরিয়ড বাড়িয়ে ৩০ বছর করতে। আমরা বলেছি, গ্রেস পিরিয়ড বাড়াতে।’’
বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ বছর নির্ধারণের জন্য চীনকে প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আজ রোববার সচিবালয়ে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিনিধি এবং ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ”লো-কস্ট (কম সুদে) ঋণ আনা আমাদের সব সময়ই অগ্রাধিকার, আমরা চাই ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়াতে। আমরা চীনকে বলেছি, তাদের দেওয়া ঋণের রি-পেমেন্ট পিরিয়ড বাড়িয়ে ৩০ বছর করতে। আমরা বলেছি, গ্রেস পিরিয়ড বাড়াতে।”
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জাপানি ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ৩০ বছর আছে। তাদের দেওয়া ঋণের গ্রেস পিরিয়ডও ১০ বছর।
অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত সর্বশেষ ডেট বুলেটিন এর তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে বাংলাদেশে চীনা ঋণের স্থিতি ৫৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। চীন সাধারণত বাংলাদেশকে ঋণের গ্রেস পিরিয়ড সাধারণত পাঁচ বছর ও রি-পেমেন্ট পিরিয়ড ১৫ বছর দিয়ে থাকে।
গত জুন মাসে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরের সময় এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) ঋণের সুদহার কমানোর পাশাপাশি পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেছেন, জাপানি ঋণের পরিশোধের মেয়াদ ৩০ বছর আছে। আমরা সিংহভাগ জনগণের কল্যাণের চিন্তা করে প্রকল্প নেব। তবে অতীত নিয়ে আমরা কোন পোস্টমর্টেম করতে চাই না।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশকে ৪০০ মিলিয়ন (৪০ কোটি) ডলার সহায়তা দেবে জানিয়ে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এডিবি, জাইকা, অস্ট্রেলিয়াসহ সবার কাছেই সহায়তা চাচ্ছি। তারা এতদিন যেভাবে সহায়তা করেছে, এখন তার চেয়ে বেশি সহায়তা চাচ্ছি। তিনটি উন্নয়ন অংশীদারই এক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছেও আমরা নতুন করে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা চেয়েছি। এ মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় আইএমএফ এর বার্ষিক সম্মেলনে এই ঋণ নিয়ে আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে বাংলাদেশে বিদেশি ঋণের প্রবাহ ঠিক ছিল জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “এসব ঋণ ব্যবহারে কোন দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা বড় বিষয়। অনেক মনোমেন্ট প্রজেক্ট হয়। মসজিদ, মন্দির, বড় প্রজেক্ট এগুলোকে মনোমেন্ট প্রজেক্ট বলা হয়। ইন্ডিয়াতে একটা প্রবণতা আছে– বড় প্রজেক্ট তৈরি করার। আমাদের দেশেও এ ধরণের একটা সিমটম ছিল।”
বর্তমানে কোনও প্রকল্পের কাজ একদম থেমে নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা একনেক এর মিটিং এরপর কিছু প্রকল্প মূল্যায়ন করবো। এডিবি, জাইকা বলেছে, তারা প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বাড়াবে।
”আমরা সবার কাছেই সহযোগিতা চেয়েছি। জাইকা, এডিবি, অস্ট্রেলিয়া- তিনটিই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। তারা যে পরিমাণ সহযোগিতা করছে, সেটা আরও বাড়াতে বলেছি।”
জাইকার অর্থায়নে বড় বড় প্রকল্প আছে- পোর্ট, মেট্রোরেলের মতো প্রকল্প আছে। এসব প্রকল্প অব্যাহত রাখতে বলেছি। তাছাড়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তাদের সহযোগিতা চেয়েছি – জানান অর্থ উপদেষ্টা।