মঙ্গল গ্রহে হাস্যোজ্জ্বল এই কাঠামো কী দিয়ে তৈরি
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) তোলা ছবিতে মঙ্গল গ্রহে অদ্ভুত এক কাঠামোর সন্ধান মিলেছে, যা দেখতে অনেকটা স্মাইলি ইমোটিকন বা হাস্যোজ্জ্বল মুখের মতো। দৃশ্যগত বিভ্রান্তি মনে হলেও বিষয়টি আসলে কী, তা নিয়ে গবেষণা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মঙ্গল গ্রহে অতীতে কোনো এক সময় জীবনের উপস্থিতি ছিল। দেখতে হাস্যোজ্জ্বল কাঠামোর দুটি চোখ আসলে এক জোড়া গর্ত। আর লবণ জমে তৈরি হয়েছে মুখাবয়বটি। এই কাঠামো প্রাচীন কোনো পানির উৎসও হতে পারে। অনেক আগে শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ইমোজি-সদৃশ কাঠামো দেখা যাচ্ছে মঙ্গলের বুকে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির তথ্য মতে, এই নমুনা আসলে মঙ্গল গ্রহের প্রাচীন কোনো জলাশয়ের অবশিষ্টাংশ। কোটি কোটি বছর আগের মঙ্গল গ্রহ যে বাসযোগ্য ছিল, এটি তা নির্দেশ করছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন, হাস্যোজ্জ্বল এ কাঠামোটি ঠিক কতটা বড়। মঙ্গল গ্রহে সম্প্রতি ৩৬৫টি লবণের কাঠামো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এসব কাঠামোর কোনোটির আকার এক হাজার ফুট আবার কোনোটির আকার ১০ হাজার ফুট চওড়া। লবণ পাহাড় আসলে জমে থাকা ক্লোরাইড। মঙ্গল গ্রহে বহু বছর আগে জলবায়ু পরিবর্তনের সময় পানির উৎস শুকিয়ে গেলে এসব কাঠামো তৈরি হয়। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ধারণা, এসব লবণের কারণে মঙ্গল গ্রহ একসময় অণুজীবের অভয়ারণ্য ছিল।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী ভ্যালেনটিন বিকেল জানিয়েছেন, অতীতে মঙ্গল গ্রহে নদী, খাল-বিল, উপত্যকা—সবই ছিল। ২০০ থেকে ৩০০ কোটি বছর আগে তীব্র জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই গ্রহের পানির উৎস শুকিয়ে যায়। চরম জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মঙ্গল গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্র বদলে যাওয়ার কারণে তরল বাষ্প বাষ্পীভূত হয়ে হারিয়ে গেছে। মঙ্গল গ্রহের প্রাচীন জলাশয়ের একমাত্র প্রমাণ বলা হচ্ছে এসব লবণ পাহাড়কে।