Hot

জুতা থেকে ঘড়ি, তাহাদের বিলাসী জীবন

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। ছিলেন হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী। নীতিকথা বলতেন প্রায়ই। মাঝে মাঝে বিভ্রম হতো। বুঝি মসজিদের ইমাম। আল-জাজিরার ক্যামেরায় বন্দি তার হাসিটা দেখার মতো। গর্বভরে বলেছেন নিজের বিলাসী জীবনের কথা। কুমিরের চামড়া দিয়ে তৈরি জুতা পরেন তিনি। বিলাতে গেলে কেবল সুট কিনতে খরচ করেন কয়েক কোটি টাকা।    

ওবায়দুল কাদের। সাবেক সেতুমন্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সেতুমন্ত্রী। ফেসবুকে একের পর এক সুটেড-বুটেড ছবি দিয়ে আলোচনায় থাকতেন। এ নিয়ে সমালোচনাও হতো অনেক। কিন্তু ওবায়দুল কাদের তা পাত্তা দিতেন না। ছবি শেয়ার করতেন আরও বেশি করে। তার ঘড়ি বিলাস নিয়ে নেত্র নিউজের একটি রিপোর্ট রীতিমতো তোলপাড় তৈরি করেছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, একজন মন্ত্রী ঘড়ি কেনার জন্য লাখ লাখ টাকা পান কোথায়।

বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদও। দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে এরইমধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তার ঘড়ি বিলাস নিয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চর্চা হয়েছে অনেক। 

আল জাজিরার কাছে জাভেদের স্বীকারোক্তি: আল জাজিরার অনুসন্ধানী রিপোর্টে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদকে তার বিলাসী জীবনের স্বীকৃতি দিতে দেখা যায়। তিনি একজনকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, তোমার জুতা আমার পছন্দ হয়েছে। ওই ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেন, সত্যিই পছন্দ হয়েছে? সম্মতি জানিয়ে সাইফুজ্জামান জানতে চান জুতা কোন ব্র্যান্ডের? এটি টেইলর ব্র্যান্ডের। সাইফুজ্জামান বলেন, আমিও আমার জুতা হেরডস থেকে অর্ডার করেছি। এটি তৈরি হতে চার মাস সময় লাগে। প্রতিটি জুতার দাম ৩ হাজার পাউন্ড। এক্ষেত্রে এক জোড়া জুতার দাম ৬ হাজার পাউন্ড বা ৯ লাখ টাকা। এগুলো বাচ্চা কুমিরের পেটের চামড়া দিয়ে তৈরি করা হয়। যদি পুরো জুতায় কুমিরের পেটের চামড়া ব্যবহার করা হয় তাহলে একটি জুতার দাম দাঁড়ায় ৬ হাজার পাউন্ড, এক্ষেত্রে এক জোড়া জুতার দাম ১২ হাজার পাউন্ড বা ১৮ লাখ টাকা। অর যদি জুতায় অর্ধেক কুমির এবং অর্ধেক গরুর বাছুরের চামড়া ব্যবহার করা হয় তাহলে একটি জুতার দাম পড়ে ৩ হাজার পাউন্ড। প্রতিবার লন্ডন গেলে সাইফুজ্জামান সুট কিনতে ২ থেকে ৩ লাখ পাউন্ড খরচ করেন। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা। সাইফুজ্জামান বলেন, আমি সুট ভালোবাসি। আমি সুপার ২০০, সুপার ১৮০ এর সুট ক্রয় করি। সুপার ২০০ এর দাম ৬ হাজার পাউন্ড বা ৯ লাখ টাকা।

ওবায়দুল কাদেরের ঘড়ি ও সেলফি: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ই আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ওবায়দুল কাদেরকে জনসম্মুখ দেখা যায়নি। ২০১৯ সালের ২৭শে ডিসেম্বর তার ঘড়ি বিলাস নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নেত্র নিউজ। ওই রিপোর্টে বলা হয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। নির্বাচন কমিশনে কাদেরের নিজের দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ীই ২০০৮/২০০৯ সালে তার বিরুদ্ধে অন্তত ছয়টি দুর্নীতির মামলা চলমান ছিল। এই মামলাগুলো হয়েছিল মূলত সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আদালতে মামলাগুলো বাতিল হয়ে যায়। এরপর ২০১৯ সালে তৎকালীন এই প্রভাবশালী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আবারো দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, আর এই অভিযোগে নতুনত্বও ছিল বটে।

ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে নেত্র নিউজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন একজন হুইসেলব্লোয়ার। তিনি দাবি করেছিলেন যে উৎকোচ হিসেবে বিশ্ব-বিখ্যাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি হাতঘড়ি উপহার পেতে পছন্দ করেন কাদের। মোটা অঙ্কের একটি কন্ট্রাক্ট পাস করে দেয়ার বিনিময়ে মন্ত্রী কাদের বিলাসবহুল একটি ব্র্যান্ডের খুবই দামি একটি হাতঘড়ি উৎকোচ হিসেবে নিয়েছেন, এমন একটি লেনদেন খুবই কাছে থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন এই অভিযোগকারী। অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে তিনি আমাদের ঘড়িটির বিশেষ সিরিয়াল নম্বরসহ ছবি ও এই ঘড়ির আসল উৎস সংক্রান্ত দলিলও দেখিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈঠকে ওবায়দুল কাদের ঘড়িটি পরে আছেন এমন ছবিও এই হুইসেলব্লোয়ার আমাদের দেখাতে সক্ষম হন। তিনি দাবি করেন যে ওবায়দুল কাদেরের ‘মন্ত্রণালয়ের বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করা’ লোকজনের কাছে, বিশেষ করে দেশি-বিদেশি ঠিকাদারদের কাছে, মন্ত্রীর এই হাতঘড়ির লোভ একটি ‘ওপেন সিক্রেট’।

এই হুইসেলব্লোয়ারের সঙ্গে নেত্র নিউজের সমঝোতা অনুযায়ী এবং আমাদের এই সংবাদ সূত্রের গোপনীয়তা রক্ষার্থে আমরা উল্লিখিত হাতঘড়িটির বা উক্ত লেনদেনের ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করতে পারছি না, কারণ তাহলে অভিযোগকারী ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ হয়ে যেতে পারে এবং তিনি বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন।

তবে এই হুইসেলব্লোয়ারের অভিযোগটির সত্যতা যাচাই করতে গিয়েই আমরা ওবায়দুল কাদেরের দামি হাতঘড়ির এক চমকপ্রদ সংগ্রহের সন্ধান পেয়েছি। এই ঘড়িগুলো, যার এক একটির মূল্য কয়েক লাখ টাকা, এতদিন আমাদের চোখের সামনেই ছিল। কেতাদুরস্ত পোশাক পরে ওবায়দুল কাদের যে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকের প্রোফাইলে নিয়মিত ছবি পোস্ট করেন সেখান থেকেই তার হাতঘড়ি পরা কয়েকশ’ ছবি আমরা সংগ্রহ করি।

সংগৃহীত ছবিগুলো থেকে দামি ব্র্যান্ডের হাতঘড়িগুলো খুঁজে বের করতে আমরা সাহায্য নেই ঘড়ি বিশেষজ্ঞ, ঘড়ি সংগ্রাহক আর রেডিটে হাতঘড়ি সংক্রান্ত বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যদের। দাশি অলঙ্কারের বাজার হিসেবে প্রসিদ্ধ লন্ডনের হ্যাটন গার্ডেনের হাতঘড়ির দোকানদারদের সঙ্গেও আমরা কথা বলি। এই বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় আমরা ওবায়দুল কাদেরের কব্জিতে শোভা পাওয়া কয়েকটি ঘড়ি মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই চিহ্নিত করতে সক্ষম হই। রোলেক্স, উলিস নাদা আর লুই ভিতন ব্র্যান্ডের এই ঘড়িগুলোর সর্বমোট মূল্য কোটি টাকারও বেশি।

ওবায়দুল কাদের তার নিজের টাকা দিয়েই এই হাতঘড়িগুলো কিনেছেন এমনটি অবশ্যই হতে পারে, কিন্তু তার আয়ের যে হিসাব আর সম্পদের যে বিবরণ আমরা সংগ্রহ করেছি তাতে হিসাব ঠিক মিলছে না।

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনে মন্ত্রী কাদের ২০১৮ সালে যে হলফনামা দাখিল করেছেন সেখানে তিনি তার আয়কর সনদও জুড়ে দিয়েছেন। দেখা যাচ্ছে তার মোট বাৎসরিক আয় ছিল ৩১,১৭,৬৫১ টাকা। তার মধ্যে ১২,৬০,০০০ টাকা তিনি মন্ত্রীর বেতন-ভাতা হিসেবে পেয়েছেন আর ৪,৮৯,৬৫১ টাকা পেয়েছেন বই লেখার রয়্যালিটি বাবদ। অন্যদিকে তার একটি রোলেক্স ডে ডেট ঘড়ির দামই ২৮,৮৬,০০০ টাকা। আবার তার দাখিল করা হলফনামা বা আয়কর সনদে এই দামি হাতঘড়িটির বা অন্য ঘড়িগুলোর কোনো উল্লেখই নেই, যা নির্বাচনী বিধিমালা আর আয়কর আইনের লঙ্ঘন বটে।

ওবায়দুল কাদেরের হাতঘড়িগুলো নকল বা রেপ্লিকা কিনা সেটাও আমরা যাচাই করার চেষ্টা করেছি। এই ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি নকল ঘড়ির বিষয়ে ওয়াকিবহাল এমন একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যার রেপ্লিকা ঘড়ির ব্যবসাও আছে। তিনি আমাদের জানিয়েছেন যে, কাদেরের হাতঘড়িগুলোর মধ্যে কয়েকটি নকল বা রেপ্লিকা হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। তবে তার সবচেয়ে দামি হাতঘড়িগুলো নকল বা রেপ্লিকা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, কারণ এগুলো বেশ নতুন মডেলের যা এখনও রেপ্লিকা হয়নি। আবার তার কয়েকটি ঘড়ি এমন যে, সেগুলোর রেপ্লিকার দামও কয়েক হাজার মার্কিন ডলার।

বিশ্ব-বিখ্যাত ব্র্যান্ডের দামি এই হাতঘড়িগুলোর ব্যাপারে ওবায়দুল কাদেরের নিজের ব্যাখ্যা জানতে ও তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাপারে তার বক্তব্য জানতে আমরা তার কাছে একটি প্রশ্নমালা পাঠাই তার জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে। কিন্তু এখনও আমরা তার কাছ থেকে কোনো জবাব পাইনি।

বেশ কিছুদিন ধরেই ওবায়দুল কাদের দুর্নীতির ব্যাপারে উচ্চকণ্ঠ হয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সদ্যঘোষিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের একজন পৃষ্ঠপোষক হিসেবে। 
অক্টোবর মাসের প্রথম দিকেই এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের দলের ও সরকারের কোনো মন্ত্রী ও এমপি’র বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের খোঁজ পেলে আপনারা তা লিখুন, তুলে ধরুন। আমাদের তথ্য দিন। আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।’ সেই সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী কাদেরের কব্জিতে ঠিক কোন ঘড়িটি শোভা পাচ্ছিলো সেটি আমরা এখনও চিহ্নিত করতে পারিনি।

সেলফির বাহার: টানা তৃতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা ওবায়দুল কাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ সরব ছিলেন। ফেসবুকে তিনি নিয়মিত ছবি প্রকাশ করতেন। সেটা নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে বেশ আলোচনা, সমালোচনা ও হাস্যরসের জন্ম দিতো। তবে সরকার পতনের আগে সর্বশেষ গত ৫ই জুলাই তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ৮টি ছবি পোস্ট করেন। কালো মুজিব কোট ও সাদা পাঞ্জাবি পরে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় এসব ছবি পোস্ট করেন। এরপর ফেসবুকে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি এই সাবেক মন্ত্রীকে। 

প্রতিনিয়ত একই স্টাইলের ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিতেন সাবেক এই মন্ত্রী। কখনো ঘড়ি দেখা, কখনো টেলিফোনে কথা বলা, কখনো ম্যাগাজিন পড়া, কখনো ফুল বাগানে দাঁড়িয়ে ছবি- এই রকম নানা রকম ছবি তুলতেন তিনি। অনেক সময় একসঙ্গে একশ’টির বেশি ছবি পোস্ট দিয়ে আলোচনার জন্ম দেন ওবায়দুল কাদের। নানা ক্যাপশান লেখা এসব ছবির নিচে অনেকের বিভিন্ন রকমের ইতিবাচক ও নেতিবাচক মন্তব্য দেখা যেতো। 

এ ছাড়াও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বিদেশি কূটনৈতিকদের সঙ্গে ছবি পোস্ট করতেন তিনি। মন্ত্রীর মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে থেকে এমন ছবি বিলাস সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে ইতিবাচক সাড়ার থেকে নেতিবাচক প্রভাব বেশি ফেলতো বলে মনে করতেন অনেকে।

বেনজীর আহমেদের ঘড়ি বিলাস: আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে বেশ আলোচনায় ছিলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। গত ৩১শে মার্চ একটি গণমাধ্যমে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি অবৈধ টাকায় কেনা হয় বলে সেই প্রতিবেদনে উঠে আসে। তবে এটাই প্রথম নয়, এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ঘড়ি বিলাস নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। 
২০২০ সালের ১৫ই এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি পদে দায়িত্বে থাকা বেনজীর আহমেদের ঘড়ি বিলাস নিয়ে সমালোচনার জন্ম দেয়। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দামি রোলেক্স ঘড়ি ব্যবহার নিয়ে সেই সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। 

২০২১ সালের ২২শে ডিসেম্বর রোলেক্স ঘড়ি পরা বেনজীর আহমেদের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট দেন নেত্র নিউজ সম্পাদক তাসনীম খলিল। সেখানে তিনি ওই ঘড়ি মূল্য ৯ লাখ টাকা বলে দাবি করেন। এরপর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। 

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে, একজন সরকারি কর্মচারী এখন ৯ লাখ টাকার রোলেক্স ঘড়ি পরে। উনার কালেকশনে আর কী আছে দেখা দরকার।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
Toto Gacor
bacan4d
bacansport login
slot gacor
pasaran togel resmi
bacan4d
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
bacan4d toto
Slot Casino
bacan4d toto
slot gacor
bacan4d
bacan4d
Slot Toto
bacan4d
bacan4d login
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto slot
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
Slot Gacor
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo
bacan4d toto slot
bacan4d toto slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacansports
bacansports
bacansports
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d
slot gacor
pasaran togel resmi
situs toto
bacan4d login
pasaran togel
pasaran togel
situs toto
bacan4d
bacan4d gacor
bacan4d slot
bacan4d rtp
bacan4d rtp
bacan4d slot gacor
toto slot
situs toto
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor