পোশাক শ্রমিকদের জীবনে গণঅভ্যুত্থান
পোশাক শ্রমিকের জীবনেও যে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান বিরাট সাহস হয়ে প্রভাব ফেলেছে, সেটা হয়তো অনেকেরই অজানা।
কাজ বা জান হারানোর ভয় কিংবা হয়রানির দমবন্ধ পরিবেশে আটকা পোশাক শ্রমিকের জীবন—এমনটাই সবাই জেনে এসেছে। সেই জীবনেও যে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান বিরাট সাহস হয়ে প্রভাব ফেলেছে, সেটা হয়তো অনেকেরই অজানা।
ইতিহাস সবসময় ক্ষমতাশীলরা নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং বরাবরই শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের লড়াইয়ের ইতিহাস আরও বেশি চাপা পড়েছে, এটিও সত্য। কিন্তু আমরা চাই, ইতিহাস একপাক্ষিক না হয়ে অর্থনীতির চালিকা শক্তি শ্রমজীবীর লড়াই ও আত্মত্যাগ যুক্ত হোক। শ্রমজীবীদের স্বর জাতীয় নীতি পর্যায়েও উচ্চারিত হোক।
সেই আগ্রহ থেকে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির চলমান অনুসন্ধান ও গবেষণায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন পোশাক শ্রমিকের গণঅভ্যুত্থানে মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। প্রতিদিনের খোঁজ-খবরে এই তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। যার ভার শ্রমিক পরিবার ও আমাদের সবার জন্য বহন করা কঠিন।
গুলিবিদ্ধ একেকজন শ্রমিকের গল্প এর তীব্রতার সাক্ষ্য দেয়। সাক্ষ্য দেয় ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের প্রবল স্রোত কীভাবে শ্রমিকের কারখানায় চার দেয়ালেও প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। জানান দেয়, কীভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার লড়াই পাড়া-মহল্লায় শ্রমিকদের মধ্যে সাহস সঞ্চার করেছিল।
সেই অভূতপূর্ব সাহস ও হাজারো ছাত্র-শ্রমিক-জনতার প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া নতুন বাংলাদেশে এখন পোশাক শ্রমিকরাও নতুন করে ভয়হীন মুক্ত কর্ম পরিবেশে মর্যাদার জীবনের স্বপ্ন দেখছে। যার নজির সাম্প্রতিক কারখানাভিত্তিক শ্রমিকদের আশু দাবি ও দীর্ঘ মেয়াদের দাবির আন্দোলনের মধ্য থেকে বোঝা যায়।
যদিও শ্রমিকদের আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নস্যাতকারীদের নানা তৎপরতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে মাসজুড়ে। শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধতাই সব অপচেষ্টা রুখে দেবে—সেই ভরসা আমরা রাখি।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রভাব সমাজের সব প্রান্তে বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদ-বিরোধী চেতনা ছড়িয়েছে, যা সবাইকে একবিন্দুতে দাঁড় করিয়েছে। নিপীড়ন-নির্যাতন কোনোভাবেই চিরস্থায়ী হয় না এবং তার ওপর ভর করে চিরস্থায়ীভাবে টিকে থাকা যায় না—সেটাই প্রমাণ করেছে ছাত্র-জনতা।
সব নির্যাতন-নিপীড়নের ভয় উপেক্ষা করে আবু সাঈদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক হয়ে সব ভয়-জড়তা ভেঙে চুরমাচুর করে সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। সবার দায়বোধকে প্রশ্ন করেছে। বাধ্য করেছে আন্দোলনে নামতে। আবু সাঈদের ডাক শ্রমিকের জীর্ণ ঘরেও কীভাবে পৌঁছেছে, সেটা গুলিবিদ্ধ সুমনের মৃত্যুর আগের কথাগুলোয় স্পষ্ট।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমার খুব ইচ্ছা, আবু সাঈদ যেমন দেশের জন্য জীবন দিসে, আমিও যদি সেরকমভাবে দেশের পাশে দাঁড়াতে পারি, তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করবো। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন, যাতে দেশ স্বাধীন করতে পারি! স্বাধীনভাবে চলতে পারি! আর যদি বেঁচে না ফিরি, আমার দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করবেন।’
মৃত্যুর আগে ঢাকা ইপিজেডের শান্তা গার্মেন্টের শ্রমিক সুমনের কথাগুলো কেমন গায়ে কাটা দিয়ে যায়। কীভাবে আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ফারহান, নাঈমার মতো করে পোশাক শ্রমিকরাও আমাদের সাহসের প্রতীক হয়েছে, তারই দৃষ্টান্ত সুমনসহ প্রাণ হারানো শ্রমিকরা।
জুলাই আন্দোলনের শুরুতে আন্দোলন ঢাকার আশেপাশে শ্রমিক এলাকাগুলোতেও ছাত্র-জনতার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকার পাশে আশুলিয়া-সাভার, ভেতরে বাড্ডা-মহাখালী-উত্তরা, একপ্রান্তে গাজীপুর, আরেকপ্রান্তে নারায়ণগঞ্জ—প্রত্যেকটিই পোশাক শ্রমিক এলাকা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে একপর্যায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের প্রশ্নও যুক্ত হয়। এরইসঙ্গে যখন নিপীড়ন, নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ক্রমশ বাড়তে শুরু করে, তখন সব ভয়কে প্রতিহত করে শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। কারখানায় যাওয়া আর বাড়ি ফেরার পথে আশেপাশে আন্দোলনে সতর্ক ও উৎসুক নজর বাড়ে শ্রমিকদের। কখনো সুযোগ পেয়েই যুক্ত হয়েছে মিছিলে। কখনো ছবি তুলেছে, ভিডিও করেছে—ছড়িয়ে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেই ছড়িয়ে দেওয়া ভিডিও মৃত শ্রমিকদের শনাক্ত করতে সহায়তা করে। ছাত্র-জনতার ওপর নির্মম-নিষ্ঠুর নির্যাতন মেনে নিতে পারেনি শ্রমিকরাও। নানা মাত্রায়, কায়দায় আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে, সমর্থন জুগিয়েছে।
একইসঙ্গে মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকার সস্তা মজুর এই পোশাক শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত তাদের জীবনে যে বঞ্চনার শিকার হন, সেই বঞ্চনা থেকেই মুক্ত হতে ঐক্য বোধ করেন ছাত্র-জনতার সঙ্গে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভাবে পোশাক শ্রমিকরা সবসময় কথা বলার অধিকার হারিয়েছে, নিপীড়ন-নির্যাতন হামলা-মামলা-হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ২০২৩ সালের মজুরি আন্দোলনে এবং রানা প্লাজা ও তাজরীন হত্যাকাণ্ড তার উদাহরণ।
এসব থেকে মুক্তির ইচ্ছা ও মর্যাদার জীবন পাওয়ার বাসনা তাদেরও যুক্ত করে এই আন্দোলনে। সেটা সবসময় সংখ্যায় হিসাব না করা গেলেও তাদের অংশগ্রহণের গুণগত গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি। বিশেষ করে, এই আন্দোলন এক দফায় পরিণত হওয়ার পরপর ২ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।
গণভবনের দিকে রওনা হতে গিয়ে এবং ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগ ও দেশছাড়ার পর বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকরা মিছিলে যোগ দিলে সবচেয়ে বড় হত্যাকাণ্ড চলে। শ্রমিকদের ওপরে সবচেয়ে বড় হত্যাকাণ্ড হয়েছে ৫ আগস্ট। শ্রমিকদের বড় অংশ গুলিতে প্রাণ হারায় ওই দিন।
আশুলিয়া থানার সামনে যখন মরদেহের স্তূপ, ভ্যানে তুলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখনও পোশাক শ্রমিক সুমন তার আশেপাশে। পরিবার থেকে বোন মনিজা ও স্ত্রী মরিয়ম তাকে বাড়ি যেতে বললেও তার মন সায় দিচ্ছিল না। বাড়ি ফেরার আশ্বাস দিয়েও সুমন ওইখানে দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর গুলিবিদ্ধ হয় এবং লাশ হয়ে নিজ গ্রাম পঞ্চগড়ে বাবা-মায়ের কাছে ফেরে।
৫ আগস্ট পর্যন্ত নানা সময়ে সুমনের মতোই শাকিনুর, নাজমুল, নাঈম, তৌহিদুর, রহমত, শুভশীল, রাসেল, মিনারুল, সোহেল, রহমত, রবিউল, ইয়ামীন, আয়াতুল্লাহ, শরীফুল, সোহাগ, রাশেদুল, আসিফুরসহ অনেক শ্রমিক নিহত হন। তাদের কারো পিঠে, কারো মাথায়, কারো বুকে লাগে গুলি।
বর্তমানে নতুন বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকরাও নতুন কর্ম পরিবেশ চায়। যেখানে তাদের দাবিগুলো দমনের ভাষায় পাঠ না করে, উদ্যোক্তা ও সরকার হৃদয় দিয়ে শুনবে।
শ্রমিকরাও শিক্ষার্থীদের মতো নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় প্রাণ খুলে তাদের দাবি দাওয়া সামনে আনার সাহস পাচ্ছে, যা ইতিবাচক। ২৫ হাজার টাকার মজুরি মূল্যায়নসহ কারখানাভিত্তিক আশু দাবি ও দীর্ঘমেয়াদের দাবি তুলছে শ্রমিকরা। যার মধ্যে আছে গণঅভ্যুত্থানে হত্যা ও ২০২৩ সালে মজুরি আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও ক্ষতিপূরণ এবং নিহতদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদের সম্মান প্রদানের দাবি।
গাজীপুরের টঙ্গীতে আমট্রানেট গ্রুপের মালিকানাধীন একটি পোশাক কারখানার সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।
মজুরি আন্দোলনসহ নানা সময়ে শ্রমিক নেতৃত্ব ও শ্রমিকদের ওপর করা দমনমূলক সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো। পোশাক কারখানার ইতিহাসে ভয়াবহতম ঘটনা হচ্ছে তাজরীন ও রানা প্লাজায় কাঠামোগত শ্রমিক হত্যা। এর বিচার প্রক্রিয়া পুনরায় শুরুর দাবি জানিয়েছে তারা।
বর্তমান বাজারে বেঁচে থাকা কঠিন হওয়ায় রেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবিসহ কারখানাভিত্তিক কিছু দাবিও উঠে আসছে। সেগুলো হলো—শ্রমিকদের টিফিন বিল, নাইট বিল, হাজির বোনাস, মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি, যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা, অভিযোগ সেল গঠন ইত্যাদি। আছে আন্দোলন করার কারণে কালো তালিকাভুক্ত না করার দাবিও।
ইতোমধ্যে মালিকরা হাজিরা বোনাস ও টিফিন বিল বাড়িয়েছে। কিন্তু অনেক কারখানায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন আটকে আছে। স্বৈরাচারী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিশাল কারখানা বেক্সিমকোতে শ্রমিকরা কাজ হারানোর শঙ্কায় আছে। এরই মাঝে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নস্যাৎ করতে শ্রমিক এলাকায় ঝুট ব্যবসায়ীসহ বিগত ক্ষমতাশীলদের সহযোগীদের নানা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।
শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার ন্যায্যতাকে নতুনভাবে বিচার করা এখন নতুন বাংলাদেশে একটি জরুরি দিক। শ্রমিকের দাবির প্রতি উত্তরে দমনের ভাষা বা কৌশল ব্যবহার করলে সেটি নেতিবাচক বার্তাই সামনে আনবে। দমন নয়, শ্রমিকদের মন জয় করার চেষ্টা করতে হবে। দমনের পথে গেলে তার পরিণতি কী হয়, তা গণঅভ্যুত্থানই প্রমাণ করেছে।
পোশাক শ্রমিকরা দীর্ঘদিন প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন করা, শ্রমিক এলাকায় দাবি-দাওয়া তোলা, সংগঠন করার অধিকার ও মতপ্রকাশের অধিকার থেকে বঞ্চিত। নিম্ন মজুরির পাশাপাশি শ্রমিক এলাকায় আন্দোলনের সবচেয়ে বড় বাধা শ্রমিক এলাকাগুলোতে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের আমলে এবং তার আগেও মালিক-সরকারের যৌথ তৎপরতায় নিয়ন্ত্রণ ও দমন।
সরকারগুলো সবসময় মালিকদের পাশে থেকে শিল্প-পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে শ্রমিক আন্দোলন দমনের চেষ্টা করেছে। শ্রমিক নেতৃত্ব দূষিত করতে ভয় ও প্রলোভন জারি রেখেছিল সবসময়। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আর সবার মতো শ্রমিকদেরও অনেক প্রত্যাশা। যে প্রত্যাশায় শেকড়ে-বাকড়ে জেঁকে থাকা শ্রমিক আন্দোলন দমনের সংস্কৃতি ও আয়োজনের আছে, সেই সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলা জরুরি।
কিন্তু সেটি খুব সহজ কাজ নয়। সে কারণে শ্রমিকদের যেমন সতর্ক থাকতে হবে, তেমনি সরকারকে আরও বেশি শ্রমিক-বান্ধব উদ্যোগের স্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। সরকারকে প্রমাণ করতে হবে, পোশাকখাতে উন্নয়ন বলতে কেবল কারখানার ভবন ও ইটপাথর, গ্রিন ফ্যাক্টরির সৌন্দর্য্য বা মালিকের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন নয়; বরং শ্রমিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবন, কথা বলা অধিকার এবং জাতীয় পর্যায়ে নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখার মধ্যে নিহিত।
গণঅভ্যুত্থানের শিক্ষায় নতুন বাংলাদেশে নতুন করে শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন ও শিল্পখাত উন্নয়নে নতুন সরকারকে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা শ্রমিকরা প্রত্যাশা করে। সৎ নেতৃত্ব ও সচেতন দক্ষ পোশাক শ্রমিক তৈরিতে কোনো আইনি বাধা, রাষ্ট্রীয় বাধা এবং মালিকের বাধা যাতে আবারও শেকড় গাড়তে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
শ্রমিকরা কখনোই আন্দোলন না করে কিছু পায়নি। সেই আন্দোলন যাতে শক্ত ভীতের ওপর দাঁড়িয়ে শানিত হয়, সেদিকে খোয়াল রাখতে হবে। শ্রমিকের আন্দোলনের পাশে থাকতে হবে সমাজের দেশপ্রেমিক সচেতন শিক্ষিত তরুণ, নারী, বুদ্ধিজীবী, গবেষকসহ সব অংশকে। কারণ, শ্রমিকের আন্দোলন কেবল শ্রমিকের না, এরসঙ্গে জড়িয়ে আছে গণতান্ত্রিক রূপান্তর, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও জনগণের মর্যাদাপূর্ণ জীবনের প্রশ্ন।
বর্তমানে নতুন রাজনৈতিক হাওয়ায় যাতে কেউ আমাদের গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধূলিসাৎ করতে না পারে, সে বিষয়ে শ্রমিক ও মালিক সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো, শ্রমিকদের নতুন কর্ম পরিবেশ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন, মজুরি ও গণতান্ত্রিক আইনের পথ প্রশস্ত করা।
রাষ্ট্র সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক আন্দোলনের ধরন, গঠন ও চর্চার মধ্যেও নতুন চিহ্ন ফেলতে হবে। সংস্কার, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা অন্তর্বর্তী সরকারসহ সব সরকারের উদ্যোগের মধ্যে প্রতিফলিত হতে হবে। সেটাই শ্রমিক ও শ্রমিক আন্দোলনেরও প্রত্যাশা।
উদ্যোক্তাদের শিল্পের স্বার্থে শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন বিষয়ে সচেতন হতে হবে। শ্রমিকদের প্রকৃত ইউনিয়ন করার সুযোগ প্রশস্ত করতে হবে উদ্যোক্তাদের এবং দমনের পথ পরিহার করতে হবে। এসব প্রত্যাশার বাস্তবায়নে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই সময়ে নতুন করে আন্দোলন সংগঠন সংগঠিত করা এবং মজবুত ঐক্য গড়া এখন সময়ের দাবি।