International

দক্ষিণ কোরিয়ায় নোবেলজয়ী হান কাং-এর বই হুড়মুড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে

কিয়োবো বুক সেন্টারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যমতে, কিয়োবো বুক সেন্টারে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ১০টি বইয়ের ৯টিই ছিল হান কাংয়ের লেখা।

এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সাহিত্যিক হান কাং। পুরস্কার জয়ের ঘোষণা আসার পর থেকে হান কাংয়ের বই কিনতে দক্ষিণ কোরিয়ায় বইয়ের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। শুধু দোকানই নয়, বই বিক্রয় সংক্রান্ত ওয়েবসাইটগুলোতেও বেড়েছে ক্রেতাদের আনাগোনা। 

দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় বইয়ের দোকান কিয়োবো বুক সেন্টার বলেছে, শুক্রবার হান কাংয়ের বই ব্যাপক বিক্রি হয়েছে। এমনকি স্টকে থাকা বইগুলোও শেষ হয়ে গেছে।

মধ্য সিউলের একটি বইয়ের দোকানে আসা ইয়ুন কি-হিওন নামে ৩২ বছর বয়সী এক যুবক বলেন, সাহিত্যে এই প্রথম কোনো কোরিয়ান নোবেল পুরস্কার পেলেন। আমি সত্যিই বিস্মিত।

তিনি বলেন, নোবেল পুরস্কার জয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্জন খুব একটা সমৃদ্ধ নয়। তাই আমি এ খবরে বিস্মিত হয়েছিলাম যে ইংরেজি ভাষায় রচিত নয় এমন এক বইয়ের লেখক এত বড় পুরস্কার জিতেছেন!

গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) নোবেল পুরস্কারের জন্য হান কাংয়ের নাম ঘোষণা করেছে সুইডিশ একাডেমি। এর পর থেকেই বইয়ের ওয়েবসাইটগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনো বেড়ে যায়। ফলে ওয়েবসাইটগুলোতেও ঠিকভাবে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না।

কিয়োবো বুক সেন্টারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যমতে, কিয়োবো বুক সেন্টারে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ১০টি বইয়ের ৯টিই ছিল হান কাংয়ের লেখা।

হান কাংয়ের বাবা হান সিউং-ওনও একজন প্রখ্যাত লেখক। তিনি বলেন, হান কাংয়ের ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ উপন্যাসের অনুবাদ তাকে ২০১৬ সালে ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার ও এবার নোবেল পুরস্কার জিততে সহায়তা করেছে।

হান কাংয়ের লেখা আরও কিছু বই রয়েছে, যেগুলোতে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার দুঃখগাঁথা ইতিহাস তুলে ধরেছেন। এমনই একটি বই ‘হিউম্যান অ্যাক্টস’। এতে তিনি ১৯৮০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়াংঝু শহরে সেনাবাহিনীর হাতে শত শত বেসামরিক মানুষ নিহতের গল্প এঁকেছেন।

তার লেখা আরেকটি উপন্যাস হলো ‘উই ডু নট পার্ট’। বইটিতে তিনি ১৯৪৮-৫৪ সাল পর্যন্ত জেজু দ্বীপের গণহত্যার কাহিনি বর্ণনা করেছেন।

গতকাল পুরস্কার ঘোষণায় নোবেল কমিটি বলেছে, হান কাংকে নোবেল দেওয়া হয়েছে ‘তার গভীর কাব্যিক গদ্যের জন্য, যা ঐতিহাসিক দুঃখ-যন্ত্রণা তুলে ধরে এবং মানুষের জীবনের নাজুকতা প্রকাশ করে।’
হান কাংয়ের জন্ম ১৯৭০ সালে, দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়াংজু শহরে। নয় বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে তিনি সিউলে চলে যান।

হান কাং ১৯৯৩ সালে ‘সাহিত্য ও সমাজ’ শীর্ষক পত্রিকায় বেশ কয়েকটি কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে তার সাহিত্যজীবন শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে ছোটগল্প সংকলন ‘ইয়েসুর প্রেম’ দিয়ে গদ্যজগতে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এর পরেই উপন্যাস এবং ছোটগল্প উভয় ধরনের লেখা শুরু করেন তিনি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button