Science & Tech

রোবোট্যাক্সি আনলেন ইলন মাস্ক

আলোচিত সাইবার ট্রাকের পর এবার স্বয়ংক্রিয় রোবোট্যাক্সি নিয়ে এলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। বৃহস্পতিবার লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে রোবোট্যাক্সিটির প্রোটোটাইপ উন্মোচন করে মার্কিন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা। নতুন এই রোবট্যাক্সিতে দুটি দরজা এবং আসন রয়েছে। দরজা দুটি অনেকটা প্রজাপতির পাখার মতো। কোনো স্টিয়ারিং হুইল বা প্যাডেল ছাড়া-ই ডিজাইন করা হয়েছে এই গাড়ি।
মাস্ক জানান, ‘সাইবারক্যাব’ নামের এই রোবোট্যাক্সির উৎপাদন শুরু হবে ২০২৬ সালে এবং এর মূল্য ৩০ হাজার ডলারের নিচে থাকবে। তিনি বলেন, এই গাড়ি চালাতে প্রতি মাইলে ২০ সেন্ট খরচ হবে এবং কোনো প্লাগ ব্যতীতই, ‘ইনডাকটিভ’ পদ্ধতিতে চার্জ হবে এটি।
ইলন জানান, এই গাড়ি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ক্যামেরা ব্যবহার করে রাস্তায় চলাচল করবে। প্রচলিত স্বয়ংক্রিয় গাড়িগুলোর থেকে কিছুটা ব্যতিক্রম। তবে এই কৌশলটি প্রযুক্তিগত এবং নিয়ন্ত্রক দিক থেকে চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকরা।
মাস্ক বলেন, ‘স্বয়ংক্রিয় গাড়ির ভবিষ্যৎ এখানে। আজকে রাতে এখানে ৫০টি পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় গাড়ি রয়েছে। আপনি এখানে ওয়াই ও সাইবার ক্যাব মডেলের গাড়িগুলো দেখতে পাবেন। সবগুলো ড্রাইভারবিহীন।’
এছাড়াও, অনুষ্ঠানে ২০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম ‘রোবোভ্যান’ এবং মানবসদৃশ টেসলা ‘অপটিমাস’ রোবটেরও উন্মোচন করেন মাস্ক।
রোবোট্যাক্সি ট্যাক্সি হচ্ছে এক ধরনের স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত গাড়ি, যা অনলাইনে ট্যাক্সি হিসেবে ভাড়া করা যায়। বিশেষ সফটওয়্যারে সজ্জিত এসব গাড়ি কোনো মানবচালক ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচল করে। যাত্রীরা স্মার্টফোন অ্যাপ ব্যবহার করে রাইড বুক করতে পারবেন।
মাস্কের পরিকল্পনা হলো একটি স্বয়ংক্রিয় টেসলা ট্যাক্সির বহর পরিচালনা করা। এছাড়া, ব্যক্তিগতভাবে টেসলা মালিকরাও অ্যাপের মাধ্যমে তাদের গাড়িগুলোকে রোবট্যাক্সি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
এর আগে, ২০২৩ সালের মধ্যে রোবোট্যাক্সি বাজারে আনার পরিকল্পনা থাকলেও নানা কারণে তা আনতে পারেনি টেসলা। গত এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছিলেন, টেসলার তৈরি রোবোট্যাক্সি বাজারে আসবে আগামী ৮ আগস্ট। নানা কারণে এই তারিখও পিছিয়ে যায়
শেষমেষ বৃহস্পতিবার লস অ্যাঞ্জেলেসের কাছাকাছি ওয়ার্নার ব্রাদার্স স্টুডিওতে ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হয়। মার্কিন লেখক আইজ্যাক অ্যাসিমভের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির সাথে মিলিয়ে ইভেন্টের নাম দেয়া হয় ‘উই, রোবট’।
জটিল প্রযুক্তি এবং কঠোর নিয়মাবলির জন্য অন্য কোম্পানিগুলো রোবট্যাক্সি বাজারে খুব একটা লাভের মুখ দেখেনি, বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিতে কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তবে জেনারেল মোটরস (জিএম.এন) এর ক্রুজ, অ্যামাজনের (এমজিএন.ও) জুক্স এবং চীনের প্রতিষ্ঠান ওয়েইরাইডসহ কিছু কোম্পানি এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মাস্ক বলছেন, তিনি ব্যয়বহুল হার্ডওয়্যারের পরিবর্তে কেবল ক্যামেরা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে খরচ কম রাখার চেষ্টা করছেন। তবে, তার ফুল সেলফ-ড্রাইভিং ( স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং প্রযুক্তি) সিস্টেমটি নিয়ন্ত্রক ও আইনগত সমস্যায় পড়েছে এবং এর সঙ্গে দুটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মাস্ক বলেন, ‘আমরা আশা করছি পরের বছর টেক্সাস এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং শুরু করতে পারব’।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button