International

রানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: অবশেষে জানা গেল ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র

চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ইরানের ভয়াবহ হামলার পর ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য সরকারিভাবে স্বীকার করেনি ইহুদিবাদী দেশটি। হামলার পক্ষকাল পর অবশেষে জানা গেল, ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ইরান প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। সোমবার ব্লুমবার্গ ও জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে ওই হামলায় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরা হয়। তবে সামরিক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এখনও প্রকাশ করেনি ইসরায়েল সরকার।

জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের ওপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আনুমানিক ৪ কোটি থেকে ৫ দশমিক ৩ কোটি ডলারের ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। এই হিসাব খোদ ইসরায়েলের কর কর্তৃপক্ষের। ফলে এক বছর আগে যুদ্ধ শুরুর পর এটি সবচেয়ে ব্যয়বহুল হামলায় পরিণত হয়েছে।

ইরানের হামলার পর দুই সপ্তাহে প্রায় ২ হাজার ৫০০টি ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির দাবি জমা দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে। ক্ষয়ক্ষতির অর্ধেকেরও বেশি ইসরায়েলের প্রাণকেন্দ্র উত্তর তেল আবিবে। সেখানে অ্যাপার্টমেন্ট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হয়েছে।
তবে হামলার কেন্দ্রস্থল ছিল হড হাশারন শহর। সেখানে ১ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত আরেকটি হলো উত্তর তেল আবিবের উপকূলের কাছে একটি বাণিজ্যিক ও আবাসিক কমপ্লেক্স।  যেখানে কয়েক ডজন অ্যাপার্টমেন্ট এবং একটি রেস্তোরাঁ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলের অন্যান্য অংশেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে তেল নোফ এবং নেভাটিমের ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর ঘাঁটির ক্ষতি এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

গত বছর গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হলে হামাসের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে হামলা শুরু করে লেবাবনের হিজবুল্লাহ। এর ফলে ৬০ হাজার ইসরায়েলি উত্তরাঞ্চলে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছে।  কবে তারা বাড়িতে ফিরতে পারবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ এবং তেহরানে হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইরান গত ১ অক্টোবর চিরশত্রু ইসরায়েলে ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর আগে গত এপ্রিলে ৩০০টি ড্রোন এবং ১০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা চালানো হয়। তবে ১ অক্টোবরের আঘাত ছিল ইসরায়েলের ওপর ইরানের দ্বিতীয় সরাসরি আঘাত।

ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার ইরান উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করেছে এবং তার বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে। হামলায় পশ্চিম তীরের জেরিকো শহরের কাছে একজন নিহত এবং অন্যত্র বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা গত সপ্তাহে বৈঠকে মিলিত হয়। তবে ইসরায়েলের জবাব নিয়ে এখনও ভোটাভুটি হয়নি। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি চান ইরানের তেল এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা থেকে ইসরায়েল বিরত থাকুক।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button