যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: জর্জিয়ায় আগাম ভোটে রেকর্ড
আর্লি ব্যালটে নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত দিনের আগে বুথে গিয়ে আগাম ভোট দেওয়ার সুবিধা পান মার্কিন ভোটদাতারা। জর্জিয়ায় বুধবার দুই লাখ ৫২ হাজার ভোটদাতা আর্লি ব্যালটের সুবিধা নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। গতবার এক লাখ ৩৬ হাজার ভোটদাতা এই আর্লি ব্যালটের দিন ভোট দিয়েছিলেন। জর্জিয়াকে বলা হয় সুইং স্টেট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কিছু অঙ্গরাজ্য আছে, যারা সচরাচর রিপাবলিকানদের দিকে হেলে থাকে।
কিছু অঙ্গরাজ্য আবার ডেমোক্র্যাটদের দিকে থাকে। আর কিছু অঙ্গরাজ্য আছে, যারা যে কোনো দিকেই যেতে পারে। সেগুলোকেই সুইং স্টেট বলা হয়। এই অঙ্গরাজ্যগুলোই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করে দেয়। জর্জিয়া তেমনই একটা অঙ্গরাজ্য। খবর সিএনএনের।
জর্জিয়ার নির্বাচনী কর্মকর্তা গ্যাব্রিয়েল স্টার্লিং সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেছেন, অসাধারণ ভোট হয়েছে। কিছু জায়গায় ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে পেরেছেন ভোটাররা। কিছু জায়গায় অবশ্য গিয়েই ভোট দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ২০২০ সালেও দেখা দিয়েছিল এই আর্লি ব্যালট ব্যবস্থা মানুষ পছন্দ করছেন। এবারও জর্জিয়ার অভিজ্ঞতা সেটাই। জর্জিয়ায় যখন আর্লি ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলছে, তখন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ডেট্রয়েটে প্রচারে ব্যস্ত, আর রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন আটলান্টায়।
হ্যারিস একটি রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মারিজুয়ানা-সেবনকে অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেবেন এবং পুলিশ সংস্কার করবেন। বুধবার হ্যারিস রক্ষণশীলদের দিকে ঝুঁকে থাকা ফক্স নিউজে সাক্ষাৎকার দেন। রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফক্স নিউজ আয়োজিত আটলান্টায় একটি ইভেন্টে অংশ নেন। সেই ইভেন্টে শুধু নারীরাই ছিলেন। সেখানে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি কম আয়ের মানুষদের জন্য কর ছাড় দেবেন। তিনি বলেছেন, বর্তমান কর কাঠামো ন্যায্য নয়।
এরপর তিনি ব্লুমবার্গে সাক্ষাৎকার দেন। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্যাম্পেনের জন্য প্রায় সাড়ে সাত কোটি ডলার অনুদান দিয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। প্রকাশিত রাষ্ট্রীয় নথিপত্রে দেখা যায়, গত তিন মাসে ট্রাম্পপন্থি ব্যয় গোষ্ঠীকে (স্পেন্ডিং গ্রুপ) এই পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন তিনি। দেশটির নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য থেকে দেখা গেছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা পিএসি প্রায় সাত কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে।
এই প্রতিষ্ঠানটি ট্রাম্পের প্রচারে সমর্থনের জন্য কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে মিলে গঠন করেছেন ইলন মাস্ক। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতে কাজ করে থাকে আমেরিকা পিএসি। ট্রাম্পপন্থি অন্য যেকোনও সুপার পিএসি (পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি) থেকে বহুগুণ বেশি অনুদান দিয়েছে আমেরিকা পিএসি। ফলে মার্কিন নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক ও ট্রাম্পের মিত্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন টেসলা ও স্পেস এক্সের মালিক।
আগের নির্বাচনগুলোতে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন মাস্ক। তবে এবার পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে রক্ষণশীলদের সঙ্গে হাত মেলালেন। জুলাইতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পের প্রতি নিজের সমর্থন প্রকাশ করেছেন মাস্ক। চলতি মাসে পেনসিলভিনিয়াতে রিপাবলিকান প্রার্থীর জনসভাতেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।