আরব-আমেরিকানদের মধ্যে এগিয়ে ট্রাম্প
দরজায় কড়া নাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। শেষ সময়ে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই মধ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আবাস পাওয়া যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ জরিপেই ট্রাম্পের চেয়ে স্বল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কমলা। তবে আরব-আমেরিকান ভোটারদের মধ্যে সমর্থনের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। আরব নিউজ ও ইউগভ জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য। এতে দেখা গেছে, আরব-আমেরিকান ভোটারদের ৪৫ শতাংশ ট্রাম্পকে সমর্থন দিচ্ছেন। আর ৪৩ শতাংশ সমর্থন দিচ্ছেন কমলা হ্যারিসকে।
জরিপে দেখা গেছে, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের প্রশ্নেও কমলা হ্যারিসের তুলনায় এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। এক্ষেত্রে ৩৯ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে আর ৩৩ শতাংশ কমলার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত সফলভাবে সমাধানের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রতি বেশি আস্থা রাখছেন ভোটাররা।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে কে বেশি ভালো করবেন-জরিপের এমন প্রশ্নে দুই প্রার্থীই ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আরব-আমেরিকানদের কাছে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় কোনটি?
এক্ষেত্রে ২৯ শতাংশ ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতকে বেছে নিয়েছেন। ২১ শতাংশ বলেছেন অর্থনীতি ও জীবনযাপনের ব্যয়ের কথা। আর ১৩ শতাংশের মতে বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিষয়টি।
জরিপের তথ্যমতে, আরব-আমেরিকানদের মধ্যে ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও ইসরাইলের বর্তমান সরকারের প্রতি কমলা হ্যারিসের তুলনায় তার (ট্রাম্প) সমর্থনই বেশি। গাজা যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরাইলের প্রতি সমর্থন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নির্বাচনে জয়ের আশাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে বলে ওই জরিপে ডেমোক্র্যাটদের সতর্ক করা হয়েছে।
৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশটির দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো ভোটের ফলাফল নির্ধারণে বড় প্রভাব রাখবে। এসব রাজ্যের একটি মিশিগান। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় সেখানকার আরব-আমেরিকান ভোটারদের কমলা হ্যারিসের জন্য গুরত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এদিকে ট্রাম্প গত মাসে বিতর্কের সময় সেন্ট্রাল পার্কে ১৯৮৯ সালের একটি হত্যা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন। এই অভিযুক্তদের বলা হয় সেন্ট্রাল পার্ক ফাইভ। প্রথমে তাদের পাঁচ থেকে ১৩ বছরের জেল হয়। তবে আরেকজনের সাক্ষ্য ও ডিএনএ তথ্যের ভিত্তিতে তারা ছাড়া পায়।
ট্রাম্প প্রচারে বলেছিলেন, তারা একজনকে খুন করেছিল এবং দোষ স্বীকারও করেছিল। তদন্তের প্রথম দিকে পাঁচ কিশোর অপরাধ স্বীকার করে। তারপরেই তারা জানায়, তারা চাপের মুখে এই কথা বলেছিল এবং বিচারের সময় তারা বলে, তারা নির্দোষ। এই বিষয়টি নিয়েই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে।
ট্রাম্পের প্রচারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আরেকটি অসার মামলা করা হয়েছে। কমলা হ্যারিস প্রচার করলেন পেনসিলভানিয়া, উইসকন এবং মিশিগানে। তার সঙ্গে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে ছিলেন লিজ চেনি। বাবা, মেয়ে দুজনেই রিপাবলিকান নেতা, কিন্তু তারা প্রকাশ্যে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেছেন। রিপাবলিকানদের দিকে ঝুঁকে থাকা ভোট যাতে তার দিকে আসে, লিজকে নিয়ে সেই চেষ্টা করলেন হ্যারিস। হ্যারিস বলেন, অনেক ভাবেই ট্রাম্প সিরিয়াস মানুষ নন। কিন্তু তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে তা গুরুতর হতে বাধ্য।
তিনি বলেছেন, ট্রাম্প যদি নভেম্বরের নির্বাচনে জেতেন, তাহলে রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের পতন হতে বাধ্য। পররাষ্ট্র নীতির প্রসঙ্গে চেনিও বহুবার ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। চেনি মিশিগানের ইভেন্টে বলেছেন, তিনি অনেক রিপাবলিকানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারাও ট্রাম্পকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, কী কথা হয়েছে, তা তিনি প্রকাশ্যে জানাতে পারবেন না। তবে তারা যে ঠিক কাজটা করবেন, তা নিয়ে চেনির মনে কোনো সংশয় নেই। চেনি বলেছেন, ‘আমি শুধু এটা মনে করিয়ে দিতে চাই, যদি আপনারা উদ্বিগ্ন হন, তাহলে আপনারা নিজেদের বিবেক অনুযায়ী ভোট দিন। কাউকে কিছু বলার দরকার নেই।’