এবার ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে দলীয় কর্মীদের পাঠানোর অভিযোগে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, লেবার পার্টি মার্কিন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।
গত সপ্তাহে এক লেবারকর্মী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে জানান, তাদের অন্তত ১০০ কর্মী আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে প্রচার চালাতে আটলান্টিক পাড়ি দিচ্ছেন। তারা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে প্রচারে অংশ নেবেন।
গতকাল বুধবার পলিটিকো অনলাইনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। লেবার পার্টির পক্ষ থেকে জোর দিয়ে বলা হয়, কর্মীদের ভ্রমণ বা আবাসনে তাদের দলের পক্ষ থেকে কোনো অর্থায়ন নেই। তাদের এ প্রচেষ্টা মার্কিন ফেডারেল নির্বাচনী নিয়মের মধ্যেই রয়েছে। নিয়মানুযায়ী, বিদেশি স্বেচ্ছাসেবকরা প্রার্থীদের সাহায্য করতে ১ হাজার ডলারের বেশি ব্যয় করতে পারবেন না। কিন্তু ট্রাম্পের প্রচার শিবির ফেডারেল নির্বাচন কমিশনের (এফইসি) কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠিতে এ অর্থ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের অভিযোগ, লেবার পার্টি কর্মীদের অর্থের জোগান দিয়ে কমলা হ্যারিসের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে পাঠিয়েছে।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের আইনজীবী গ্যারি লকোস্কি বলেন, যারা আমাদের নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ খুঁজছেন, তাদের (লিংকডইন) পোস্ট ছাড়া আর কিছু দেখার প্রয়োজন নেই। হস্তক্ষেপটি খোলামেলা ঘটছে। এ ঘটনায় এফইসিকে অবিলম্বে তদন্ত শুরু করার দাবি জানান লকোস্কি। তিনি বলেন, ইয়র্কটাউনের যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর আত্মসমর্পণের ২৪৩তম বার্ষিকী গত সপ্তাহে উদযাপন করা হয়। একটি সামরিক বিজয়, যা নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেট ব্রিটেন থেকে রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন। মনে হচ্ছে, লেবার পার্টি ও কমলা হ্যারিস বার্তাটি ভুলে গেছেন। এর আগে যুক্তরাজ্য সরকার জোর দিয়ে বলে, দলীয় কর্মীরা ব্যক্তিগত ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন। তাদের কার্যক্রম যুক্তরাজ্যের সরকারের অবস্থানকে প্রতিনিধিত্ব করে না। গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে পলিটিকো জানায়, কীভাবে যুক্তরাজ্যের লেবার ও যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট এবং ওয়াশিংটন ও লন্ডনের মধ্য-বামপন্থি থিঙ্ক ট্যাঙ্করা তাদের নির্বাচনী সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য সমন্বয় করছেন। গতকাল বুধবার লেবার পার্টির এক মুখপাত্র বলেন, বিশ্বব্যাপী সব রাজনৈতিক অনুপ্রেরণার প্রচারকদের জন্য মার্কিন নির্বাচনে স্বেচ্ছাসেবক হওয়া সাধারণ বিষয়।
এ নিয়ে কথা বলেছেন খোদ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও। বুধবার তিনি বলেন, আইনি বিরোধ সত্ত্বেও তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ‘ভালো সম্পর্ক’ উপভোগ করেন। ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন স্টারমার। তিনি বলেন, লেবারের স্বেচ্ছাসেবীরা ‘প্রতিটি নির্বাচনের মতো’ এবারও আটলান্টিক অতিক্রম করেছে। সামোয়াতে কমনওয়েলথ সম্মেলনে যাওয়ার ফ্লাইটে ওঠার আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা অবসর সময়ে এটা করছেন; স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে করছেন। আগের নির্বাচনে তারা যা করেছেন, এ নির্বাচনে সেটাই করছেন। বিষয়টি সত্যিই সোজাসাপ্টা। গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের সঙ্গে দুই ঘণ্টার ডিনার করেন স্টারমার। তিনি বলেন, আমি ট্রাম্পের সঙ্গে নিউইয়র্কে সময় কাটিয়েছি; তাঁর সঙ্গে ডিনার করেছি। এর উদ্দেশ্য ছিল আমাদের দু’জনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক স্থাপন নিশ্চিত করা, যা আমরা করেছি।
বুধবার সিএনএন জানায়, ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করেছেন হোয়াইট হাউসে তাঁর সাবেক চিফ অব স্টাফ জন কেলি। তিনি বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য ‘ফ্যাসিস্ট’ শব্দটিই মানানসই।