যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টায় প্রতি ঘণ্টায় গ্রেফতার ১০ ভারতীয়! ১ বছরে আটক ৯০ হাজার
উন্নতমানের জীবনযাত্রা এবং মোটা মাইনের কাজের খোঁজে প্রথম বিশ্বের দেশে পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন দেখতে গিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা এবং প্রাণ হারানোর সংখ্যা নেহাত কম নয়। আর অধিকাংশই ধরা পড়ে যান। তা সত্ত্বেও ভারতীয়দের, বিশেষত গুজরাতিদের মধ্যে আমেরিকায় প্রবেশের চেষ্টার কোনো কমতি নেই! তথ্য বলছে, গত এক বছরে প্রত্যেক ৬০ মিনিটে ১০ জন ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে আমেরিকায় ঢুকতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দফতর (ইউএস-সিবিপি) একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে। সেখানে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে তথ্য দেয়া হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, অনুপ্রবেশের অভিযোগে এক বছরের মধ্যে প্রায় ২৯ লাখ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বেশিভাগই মেক্সিকো এবং কানাডার সীমান্ত দিয়ে আমেরিকায় প্রবেশের চেষ্টায় ছিলেন। আর তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশই নাকি গুজরাতের বাসিন্দা। ওই পরিসংখ্যানেই বলা হচ্ছে, প্রতি ঘণ্টায় অনুপ্রবেশের চেষ্টায় ১০ জন করে ভারতীয় পাকড়াও হন আমেরিকায়। আর ভারতের একটি সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে ‘টাইমস্ অফ ইন্ডিয়া’ একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আমেরিকা এবং কানাডা সীমান্তে গত এক বছরে ৪৩,৭৬৪ জন গ্রেফতার হয়েছেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ৯০ হাজার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানাচ্ছে, ২০২৩ সালে মোট ৯৬,৯১৭ জন ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীকে মেক্সিকোর পথে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০২৪ সালে আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে গ্রেফতার হন ২৫,৬১৬ জন। বস্তুত, আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপে পৌঁছনোর জন্য বিপুলসংখ্যক ভারতীয় ডাঙ্কি রুট ধরে যাত্রা করেন। এটা শুধু বেআইনিই নয়, ভয়ঙ্করও বটে।
তবে এখন নাকি ওই রুট দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা কমছে। কারণ, ওই পথে আগে মেক্সিকোয় যেতে হলে কয়েক দিন দুবাই বা তুরস্কে থাকতে হয়। আর গত কয়েক বছরে আমেরিকার গোয়েন্দা এবং এজেন্সিগুলো চোরাকারবারি এবং অনুপ্রবেশে সাহায্যকারী দালালচক্রকে ভেঙে দিয়েছে। ডাঙ্কি রুটের উপর সব সময়ই কড়া নজরদারি করছে গোয়েন্দা সংস্থা। সে জন্য গুজরাতিদের মধ্যে কানাডার রাস্তা দিয়ে আমেরিকায় প্রবেশের চেষ্টা বেড়েছে বলে সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছে ‘টাইমস্ অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদনে।
তাতে এ-ও বলা হচ্ছে, অনুপ্রবেশকারীদের বড় অংশ ট্যাক্সি ভাড়া করে আমেরিকা বেড়াতে গিয়ে সেখানে থেকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের অধিকাংশের কাছে কানাডার ভিজিটর ভিসা থাকে। তবে অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষুদ্র অংশই প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে ‘ডলারের দেশে’ থাকতে পারেন।