মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে: জাতিসংঘ
মিয়ানমারের সংঘাত বিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্য দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে বলে জাতিসংঘ গতকাল বৃহস্পতিবার সতর্ক করেছে। কারণ গৃহযুদ্ধর কারণে দেশটির বাণিজ্য ও কৃষি উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে।
জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রাখাইনের অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে। যদি বর্তমান খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সমস্যার সমাধান না করা হয়, তাহলে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি হতে পারে।
এতে আরো বলা হয়, ‘প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ অনাহারে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।’
ইতিমধ্যেই দেশটিতে যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য রুটগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, যেগুলো বিশেষ করে মিয়ানমারের দরিদ্র রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। ফলে সেখানে সাহায্য এবং পণ্য প্রবেশ মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে গেছ। তীব্র লড়াইয়ের পাশাপাশি রাখাইনের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, উল্লেখযোগ্যভাবে অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদন হ্রাস এবং মানুষের আয় কমে গেছে বলে ইউএনডিপি প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে শাসক জান্তা বাহিনী অং সান সু চি’র নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং জান্তা বিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে আরাকান আর্মি (এএ) নিরাপত্তা বাহিনীকে আক্রমণ করার পর থেকে পশ্চিম রাখাইন সংঘর্ষে কাঁপছে। কৃষি অর্থনীতি সংকটে থাকায় ইউএনডিপি ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছে, বর্তমানে স্থানীয় খাদ্য উৎপাদন মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে রাজ্যের চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ পূরণ করবে। তারা আরো জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ ধানের উৎপাদন কমে আসছে বীজ, সার এবং পরিস্থিতির কারণে।
ইউএনডিপির মতে, রাখাইনে এ বছর প্রায় ৯৭ হাজার টন ধান চাষ করা হবে, যা গত বছর ছিল ২ লাখ ৮২ হাজার টন। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, রাখাইন রাজ্যে অগাস্ট মাসে ৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা ২০২৩ সালের অক্টোবরে ছিল ২ লাখেরও কম। দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘু এবং বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর সদস্যসহ জনসংখ্যা বিশেষ ঝুঁকির সম্মুখীন।