International

মণিপুরে রণক্ষেত্র, বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট

গত দু’দিনে ছ’জনের দেহ উদ্ধারের পরে গোলমালের আশঙ্কায় ইম্ফল পশ্চিম এবং ইম্ফল পূর্বে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে মণিপুরের সাত জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা।

শুক্রবার ও শনিবার, মণিপুরে উদ্ধার হয়েছে আরও তিন দেহ। রাজ্যের সরকারি একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এই দাবি করেছে একটি সংবাদমাধ্যম।

পাঁচ দিন আগেই জিরিবাম জেলা থেকে একই পরিবারের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। ওই ছ’জন ছিলেন মেইতেই সম্প্রদায়ের। তাঁদের খোঁজ শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনী।

শুক্রবার রাতে তিন জনের দেহ উদ্ধারের পর শনিবার উদ্ধার হল আরও তিন জনের দেহ। দেহগুলি এখনও শনাক্ত করা যায়নি। এর পরেই প্রশ্ন উঠছে, উদ্ধার হওয়া দেহগুলি কি অপহৃত ছয় মহিলা ও শিশুর? ছ’জনের দেহ উদ্ধারের পর গোলমালের আশঙ্কায় ইম্ফল পশ্চিম এবং ইম্ফল পূর্বে কার্ফু জারি করা হয়েছে। বন্ধ সাত জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় অসম-মণিপুর সীমানায় জিরি নদীতে তিনটি দেহ ভাসতে দেখা যায়। জিরিঘাট এলাকা থেকে ওই তিন দেহ উদ্ধার করে শুক্রবার রাতে অসমের শিলচরের মর্গে পাঠানো হয়। সেখানে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সেই দেহগুলির ময়নাতদন্ত করা হয়।

প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, ওই দেহ তিনটি প্রাপ্তবয়স্কদের। শনিবার ওই হাসপাতালের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া দেহগুলির একটি মহিলার। বাকি দুই দেহ শিশুদের। জলে ভেসে ফুলে ওঠায় তদন্তকারীরা বয়স বুঝতে পারেননি।

শনিবার দুপুরে সরকারি একটি সূত্র ওই সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে, আরও তিনটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি এখনও শনাক্ত করা যায়নি। শিলচরের হাসপাতালে ময়াতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। উল্লেখ্য, জিরিবাম থেকে ওই হাসপাতালের মর্গের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার।

মণিপুরের জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ১০ কুকি জঙ্গি। যদিও কুকি সম্প্রদায়ের দাবি, নিহত ১০ জন ছিলেন ‘গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী’। তাঁদের দেহ মিজ়োরামে নিতে চেয়ে গত সোমবার থেকে শিলচরের হাসপাতালের মর্গ ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কুকিরা।

শনিবার সকালে পুলিশ ১০ জনের দেহ নিয়ে কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরের দিকে রওনা হলে তাদের ঘেরাও করেন কুকিরা। বিক্ষোভ দমন করতে লাঠি চালায় পুলিশ। এই ঘটনার পরে সতর্ক অসমের পুলিশও।

২০২৩ সালের মে মাস থেকে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের সংঘাতে উত্তপ্ত মণিপুর। ঘরছাড়া হাজার হাজার মানুষ। নিহত হয়েছেন ২০০ জনেরও বেশি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button