ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক এক্সচেঞ্জ বা সমঝোতা স্মারক নতুন করে সই হবে না। যেগুলো আছে, সেগুলোও স্থগিত থাকবে।’ ২০১৫ সালে নেওয়া ঢাবির তৎকালীন উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রশাসনের এমন নিষেধাজ্ঞা সম্প্রতি তুলে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও আজ বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।
এর ফলে পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে যেতে পারবে। পাকিস্তানের সঙ্গে শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে মতবিনিময় করতে পারবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অর্থাৎ ২০১৫ সালের আগের সেই স্বাভাবিক সম্পর্কে ফিরেছে ঢাবি ও পাকিস্তান।
এর আগে ২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এক সিন্ডিকেট সভায় পাকিস্তানের সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক ছিন্নের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৫ পাকিস্তানির বিচার করার জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। আর পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে সিন্ডিকেট সভা থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করায় এবং যুদ্ধাপরাধী রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের সদস্যপদ বাতিল করতে সিন্ডিকেট সার্ক ও জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ করে।
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা কালবেলাকে বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় একটা সিদ্ধান্ত হয় যে, পাকিস্তানের সাথে কোনোরকম একাডেমিক সম্পর্ক রাখবে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেদিন এ সম্পর্ক ছিন্ন হয়। কিন্তু বর্তমান উপাচার্যের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ, ভর্তি ও কনফারেন্সসহ শিক্ষা সংবলিত নানা বিষয়ে স্বাভাবিকীকরণে চিঠি এসেছে। যেহেতু এ ব্যাপারে পূর্ব নিষেধাজ্ঞা ছিল চাইলেই তো এটা করা যায় না। সেক্ষেত্রে গত সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্য বিষয়টি আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, আলোচনার পর ২০১৫ সালের সেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদি তা তুলে নেওয়া হয় তাহলে ২০১৫ সালের আগে পাকিস্তানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে একাডেমিক সম্পর্ক ছিল সে সম্পর্কটা বজায় থাকবে। বিষয়টি পুরোটাই একাডেমিক, এর বাইরে কোনো কিছু নেই।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ প্রায় এক দশক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে তার কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।