সমুদ্রের গভীর থেকে ভেসে আসা মাছ নিয়ে রহস্য
ক্যালিফোর্নিয়ার গ্র্যান্ডভিউ বিচে সম্প্রতি বিরল একটি গভীর সমুদ্রের প্রাণী পাওয়া গেছে, যা ‘ডুমসডে ফিশ’ নামে পরিচিত। স্ক্রিপস ইনস্টিটিউশন অব ওশেনোগ্রাফির পিএইচডি গবেষক অ্যালিসন লাফেরিয়েরে কুকুর নিয়ে হাঁটার সময় এটি দেখতে পান। প্রথমে এটিকে ভেসে আসা আবর্জনা মনে করলেও পরে তিনি বুঝতে পারেন এটি একটি ওরফিশ।
ওরফিশ একটি গভীর সমুদ্রের মাছ, যা লম্বা, সাপের মতো শরীর, উজ্জ্বল লাল পৃষ্ঠপাখনা এবং বিস্তৃত মুখ রয়েছে। এটি সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে থাকে এবং খুব কমই ভেসে ওঠে। এই মাছটি ৯ থেকে ১০ ফুট লম্বা ছিল। স্ক্রিপস ইনস্টিটিউশন জানায়, আগস্ট মাসে লা জোলায় পাওয়া একটি ওরফিশের তুলনায় এটি ছোট।
স্ক্রিপস মেরিন ভার্টিব্রেট কালেকশনের ব্যবস্থাপক বেন ফ্রেবল মাছটি উদ্ধার করে জাতীয় মহাসাগরীয় ও বায়ুমণ্ডলীয় প্রশাসন (NOAA)-এর দলের কাছে হস্তান্তর করেন। ফ্রেবল জানান, মাছটির নমুনা সংগ্রহ করে হিমায়িত রাখা হয়েছে। এটি সংরক্ষণ ও বিস্তারিত গবেষণার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
চলতি বছর ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে এটি দ্বিতীয়বারের মতো ওরফিশ ভেসে আসার ঘটনা। ফ্রেবল মনে করেন, পরিবর্তনশীল সমুদ্র পরিস্থিতি এর কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এল নিনো বা লা নিনার মতো প্রাকৃতিক পরিবর্তনগুলো কখনও গভীর সমুদ্রের মাছকে উপকূলে ভাসিয়ে আনে। এছাড়া লাল জোয়ার বা সান্তা আনা বাতাসের মতো পরিবেশগত পরিবর্তনও ভূমিকা রাখতে পারে।’
জাপানি লোককাহিনীতে ওরফিশকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আগাম বার্তাবাহক বলে মনে করা হয়। বিশেষত ভূমিকম্পের আগে এটি দেখা দিলে দুর্যোগের ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০১১ সালের ভূমিকম্পের আগে জাপানের উপকূলে একাধিক ওরফিশ পাওয়া যাওয়ায় এই বিশ্বাস আরও প্রসারিত হয়।
বিজ্ঞানীরা ওরফিশ নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে এর আচরণ এবং পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে সম্পর্ক খুঁজে বের করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।