শুক্র গ্রহে সত্যিই কি সাগর ছিল
আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী গ্রহ শুক্র। দুই গ্রহের আকার একই রকম বলে এই গ্রহকে কখনো কখনো পৃথিবীর যমজ গ্রহ নামেও ডাকা হয়। আগে ধারণা করা হতো, শুক্র গ্রহে অতীতে কোনো এক সময় সাগর ছিল। তবে শুক্র গ্রহের বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক গঠন পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শুক্র গ্রহে কখনই কোনো সাগর ছিল না। শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠের নিচে কোনো ধরনের পানির আধার নেই। আর তাই শুক্র গ্রহ প্রথম থেকেই কঠিন ও শুষ্ক। নেচার অ্যাস্ট্রোনমি সাময়িকীতে শুক্র গ্রহবিষয়ক একটি গবেষণাপত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্র গ্রহের অভ্যন্তরের গ্যাসীয় পদার্থ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতে থাকা আগ্নেয়গিরির গ্যাসে ৬০ ভাগের বেশি জলীয় বাষ্প থাকে। এই বাষ্প থেকে বোঝা যায় পৃথিবী পানিসমৃদ্ধ। অন্যদিকে গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে দেখা গেছে, শুক্র গ্রহের অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সৃষ্ট গ্যাসে ৬ শতাংশের বেশি জলীয় বাষ্প নেই। এতে বোঝা যায় শুক্র গ্রহের অভ্যন্তর বেশ শুষ্ক।
যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোনমির বিজ্ঞানী টেরেজা কনস্টান্টিনো বলেন, শুক্র গ্রহের বর্তমান অভ্যন্তরীণ অবস্থা বেশ শুষ্ক, যা অতীতেও ছিল। বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, শুক্র গ্রহে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি ভীষণ কম। এই গ্রহ আসলে কখনই বাসযোগ্য ছিল না।
শুক্র গ্রহের ব্যাস প্রায় ৭৫০০ মাইল আর পৃথিবীর ৭৯০০ মাইল। বিবর্তনের পথ দুই রকম হলেও শুক্র ও পৃথিবীর ভর, ব্যাসার্ধ, ঘনত্ব ও সূর্য থেকে দূরত্বের মিল রয়েছে। শুক্র গ্রহের বায়ুমণ্ডলীয় চাপ পৃথিবীর চেয়ে ৯০ গুণ বেশি এবং তাপমাত্রা প্রায় ৪৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখানে সালফিউরিক অ্যাসিডযুক্ত মেঘের বিষাক্ত বায়ুমণ্ডল দেখা যায়।