International

ফ্রান্সের মায়োতে ঘূর্ণিঝড় চিডোর তাণ্ডব, হাজারে পৌঁছাতে পারে মৃত্যু

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ফরাসি দ্বীপ মায়োতে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় “চিডো”র আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে কয়েকশ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা কয়েক হাজারেও পৌঁছাতে পারে। অঞ্চলটির দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারী মানুষজন এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

স্থানীয় সময় গত শনিবার ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট সাইক্লোন মায়োতে তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড় চিডো।শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার (১৪০ মাইল)। ঝড়টি পুরো বসতিগুলো ধ্বংস করে দেয়, বিশেষত যারা অস্থায়ী আশ্রয়ে বসবাস করতেন তাদের জন্য এই আঘাত ছিল সবচেয়ে মারাত্মক। মায়োতের ৩ লাখ ২০ হাজার জনসংখ্যার একটি বড় অংশ দরিদ্র এবং ফরাসি আর্থিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।

ঘূর্ণিঝড় চিডো মায়োতে বহু বসতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনও দুর্গম এলাকায় পৌঁছে বেঁচে থাকা মানুষদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। রাজধানী মামৌদজুর এক বাসিন্দা বলেন, “তিন দিন ধরে পানির অভাব, এটি অসহনীয় হয়ে উঠেছে।” আরেকজন বলেন, “ঝড়ের সময় আমি ভেবেছিলাম আমি মারা যাব।”

মায়োতের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং আশ্রয়প্রার্থীরা, যারা অস্থায়ী এবং দুর্বল ঘরবাড়িতে থাকেন, এই বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, হতাহতের সংখ্যা কয়েকশ থেকে হাজারেও পৌঁছাতে পারে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মায়োতের জনগণের জন্য শোক প্রকাশ করেছেন এবং সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

মায়োতের বাইরেও ঘূর্ণিঝড় চিডো মোজাম্বিকের বিভিন্ন অঞ্চলকে প্রভাবিত করেছে। এখানে ঝড়ের কারণে ঘরবাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল ধ্বংস হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় পরিষ্কার পানি, স্বাস্থ্যসেবা এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দ্রুত প্রয়োজন।

ঘূর্ণিঝড় চিডোর প্রভাব মায়োতে ও মোজাম্বিকের জন্য এক ভয়াবহ বিপর্যয়। আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা এ অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি নতুন আশার আলো নিয়ে আসতে পারে। দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে এই দুর্যোগ আরও বড় মানবিক সংকটে রূপ নিতে পারে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button