Bangladesh

ভোট হবে গণপরিষদে

আগামী সংসদ নির্বাচন এবং সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শহীদ পরিবার এবং আহত যোদ্ধারা ঘোষণা দিয়েছেন নতুন সংবিধান তৈরি করতে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। তারা আরও হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তাড়াহুড়ো করে নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি। শুধু নির্বাচনের জন্য প্রায় ২৫ হাজার মানুষ গুলিতে পঙ্গু হয়নি। মানুষ স্বৈরাচারের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য জীবন দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ৭২ এর সংবিধানে অধিকারের কথা নেই। তারা সেই সংবিধান চান না। ৭২ এর সংবিধান বাতিল করতে হবে। নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলায় হেফাজত হত্যাকান্ড ,সবশেষ চব্বিশের জুলাইয়ে গণহহত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত  আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগের বিচারের আগে দেশে কোনো ভোট হবে না। এই মুহূর্তে দরকার ছাত্রজনতার বিচার আর সংস্কার বলেও জানানো হয়। 

১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে সরকারকে ডেটলাইন জানিয়ে দেন তারা। ১৫ দিনের মধ্যে ঘোষণা না হলে তারা আবারও অগ্রিম সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে রাখেন। কর্মসূচীতে বক্তারা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই নতুন সংবিধান হবে। আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে নির্বাচিতরাই সংবিধান সংশোধন করবে। ঘোষণাপত্রে আমাদের দাবি না থাকলে সেটি মেনে নেয়া হবে না।  ৯০, ৭১ এ যারা শহিদ হয়েছেন রক্ত দিয়েছেন তাদের মতো করে ২৪শে যারা আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহিদ হয়েছেন রক্ত দিয়েছেন তাদের চেতনা আগামীতে লেখা থাকতে হবে। 

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা এসব দাবী তুলে ধরেন। শহিদ মিনার এলাকায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে শহিদ মিনারে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এ সময় ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি-আজাদি’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে শোনা যায়।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান চায়, নতুন সংবিধান প্রত্যাশা করে।  আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই নতুন সংবিধান হবে। আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে নির্বাচিতরাই সংবিধান সংশোধন করবে। বাংলাদেশের মানুষের অসংখ্য চাওয়া আছে, আগামীর নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন তাদের সেই চাওয়াগুলো পূরণ করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠের আয়োজনের ঘোষণা দেয় তখন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ঘোষণাপত্র পাঠের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে বলতে চাই, অবিলম্বে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button