International

একনজরে গাজার ক্ষয়ক্ষতি

গাজায় আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। ১৫ মাসের এই ভয়াবহ যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার খবরে সর্বস্ব হারানো গাজাবাসী উল্লাসে ফেটে পড়েন। যুদ্ধে অবরুদ্ধ উপত্যকাটির প্রায় প্রতিটি পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। অনেক পরিবার নির্বংশ হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ঘর-বাড়ি, স্কুল-হাসপাতাল এবং রাস্তা-ঘাটসহ নানা অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগবে। 

এক নজরে গাজায় ইসরায়েলি হামলার ধ্বংসযজ্ঞ সংখ্যায় দেখে নেওয়া যাক- 

গাজায় নিহত মোট ফিলিস্তিনি নাগরিক: ৪৬ হাজার ৭০৭ জন। 

গাজায় নিহত শিশু : ১৩ হাজার ৩১৯টি। 

গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করার হচ্ছে এমন মানুষ : প্রায় ১১ হাজার। 

গাজায় আহত ফিলিস্তিনি : ১ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জন। 

গাজায় বাস্তুচ্যুত মানুষ: প্রায় ১৯ লাখ, যা  উপত্যকাটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ। 

যুদ্ধের সময় গাজার স্বাস্থ্য অবকাঠামো খাতে হামলা : ৬৫৪টি। 

নিহত স্বাস্থ্যকর্মী : ১ হাজার ৬০ জন। 

ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হওয়া স্কুল : ৫৩৪টি, যা মোট স্কুলের প্রায় ৯৫ শতাংশ। 

আনুষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে ছিটকে পড়া শিশু : ৬ লাখ ৬০ হাজার। এতে সব বয়সী স্কুলগামী শিশুদের ধরা হয়েছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হওয়া বাড়ি-ঘর : ৪ লাখ ৩৬ হাজার, যা উপত্যকাটির মোট বাড়ি-ঘরের প্রায় ৯২ শতাংশ। 

যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করা হয়েছে, এই অভিযোগে বিক্ষোভ করছিলেন একদল মানুষ। তাঁদের সরিয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। জেরুজালেমে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশে, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করা হয়েছে, এই অভিযোগে বিক্ষোভ করছিলেন একদল মানুষ। তাঁদের সরিয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। জেরুজালেমে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশে, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

হামাসের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে হামলা চালানো হয়। এর প্রতিক্রিয়া গাজায় সর্বাত্মক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর  ইসরায়েল মোট নিহত : প্রায় ১ হাজার ২০০ জন। 

জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসা হয় : ২৫১ জনকে। 

গাজায় এখনো থাকা জিম্মি : ১০১ জন। এর মধ্যে ৩৭ জন মারা গেছে বলে ধারণা করা হয়। 

এখানে হতাহতের যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে তা গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। এই হিসেবের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে ইসরায়েল; কিন্তু জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যান বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে। 

তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেট গাজা যুদ্ধের প্রথম ৯ মাসে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি নাগরিকের প্রকৃত সংখ্যা উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উল্লিখিত সংখ্যার চেয়ে প্রায় ৪১ শতাংশ বেশি বলে মনে করে। গত ৯ জানুয়ারি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে সাময়িকীটি এই অনুমান প্রকাশ করেছে। 

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতিতে মূল মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আলাদা বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতির কথা নিশ্চিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়েছে। 

আগামী রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া যুদ্ধবিরতি কয়েক ধাপে কার্যকর হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button