নাসার অত্যাধুনিক ভ্যাকুয়াম প্রযুক্তি চাঁদ থেকে মাটি সংগ্রহ করবে সেকেন্ডেই
চাঁদ এবং অন্যান্য গ্রহে মাটি ও পাথরের নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে নাসা। নতুন এই প্রযুক্তির নাম ‘লুনার প্ল্যানেটভ্যাক’ (LPV)। এটা অত্যাধুনিক ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মতো কাজ করে। এটি মাটি খনন বা মেশিনের হাতের (মেকানিক্যাল আর্ম) ব্যবহার ছাড়াই দ্রুত নমুনা সংগ্রহ করতে সক্ষম।
এই প্রযুক্তিটি তৈরি করেছে ব্লু অরিজিনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হানিবি রোবোটিক্স। লুনার প্ল্যানেটভ্যাক চাঁদের মাটি উত্তোলনে উচ্চচাপযুক্ত গ্যাস ব্যবহার করে। এতে একটি ক্ষুদ্র টর্নেডোর মতো ঘূর্ণি সৃষ্টি হয়, যা মাটিকে একটি নমুনা পাত্রে জমা করে।
ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেসের ব্লু ঘোস্ট ১ লুনার ল্যান্ডারের সঙ্গে যুক্ত এই সিস্টেমটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করবে। এর মাথার অংশ (সাম্পলিং হেড) থেকে চাঁদের মাটিতে উচ্চচাপযুক্ত গ্যাস ছাড়া হবে, যা মাটির ক্ষুদ্র কণা (১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত) তুলে নিয়ে একটি টিউবের মাধ্যমে নমুনা পাত্রে জমা করবে। সেখানে মাটির কণা ছাঁকা, ছবি তোলা এবং বিশ্লেষণ করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় সংগৃহীত ডেটা রিয়েল-টাইমে পৃথিবীর গবেষকদের কাছে পাঠানো হবে।
নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ডেনিস হ্যারিস জানিয়েছেন, এতে কোনো খনন বা মেকানিক্যাল আর্ম নেই, যা সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটি একেবারে ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মতো কাজ করে। এই প্রযুক্তি চাঁদে পানি, হিলিয়াম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের সন্ধানেও কাজে লাগবে। পাশাপাশি চাঁদের মাটিতে বসবাসযোগ্য আবাসন ও লঞ্চপ্যাড তৈরির সম্ভাব্য উপাদান সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা দেবে।
প্ল্যানেটভ্যাক মাত্র কয়েক সেকেন্ডে নমুনা সংগ্রহ করতে সক্ষম। এই প্রক্রিয়া কঠোর প্ল্যানেটারি সুরক্ষা নীতিমালা মেনে পরিচালিত হবে, যা নমুনার মান অক্ষুণ্ন রাখতে সাহায্য করবে। এ প্রযুক্তি সরাসরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা দেওয়ায় চাঁদের মাটির উপাদানগুলো তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে।
ফায়ারফ্লাইয়ের ব্লু ঘোস্ট ল্যান্ডারের দশটি পেলোডের একটি হলো এই লুনার প্ল্যানেটভ্যাক। এর মধ্যে সাতটি পেলোড নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টার দ্বারা পরিচালিত। চাঁদের মাটির নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে এই প্রযুক্তি মহাকাশ অভিযানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।