নির্বাচনে আমার জয়ের ফলেই ‘মহাকাব্যিক’ যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি হয়েছে: ট্রাম্প
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গত নভেম্বরের নির্বাচনে তার ঐতিহাসিক বিজয়ের ফলেই গাজায় ‘মহাকাব্যিক’ যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে শেয়ার করা এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
ট্রাম্প লেখেন, গত নির্বাচনে জয় বিশ্বকে সংকেত দিয়েছে যে তার প্রশাসন শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে এবং সব আমেরিকান ও মিত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে।
তিনি আরও লেখেন, এই খবরে তিনি আনন্দিত যে আমেরিকান ও ইসরায়েলি জিম্মিরা বাড়ি ফিরতে পারবেন।
ট্রাম্প তার মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত হিসেবে স্টিভ উইটকফের নাম উল্লেখ করে বলেন, স্টিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা দল ইসরায়েল ও আমাদের মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে।
নবনির্বাচিত মার্কিন এ প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দল শক্তির মাধ্যমে শান্তি প্রচারের কাজ পুরো অঞ্চলে চালিয়ে যাবে এবং আব্রাহাম চুক্তির গতি কাজে লাগিয়ে আরও অগ্রগতি সাধন করবে। এটি আমেরিকার জন্য এবং প্রকৃতপক্ষে পুরো বিশ্বের জন্য মহান কিছু অর্জনের সূচনা মাত্র।
যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হামাস ও দখলদার ইসরায়েল। ১৫ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হামাস ও দখলদার ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়। তবে এখনও চুক্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ছয় সপ্তাহের পর্যায়ক্রমিক যুদ্ধবিরতি করা এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করাসহ ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলা আছে।
এই চুক্তির বিষয়ে অবহিত একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যকে উত্তাল করে তোলা ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধের সম্ভাব্য অবসানের পথ খুলে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে মিশরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যস্থতায় মাসব্যাপী আলোচনার পর এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের ঠিক আগে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো।
আশা করা হচ্ছে, এই চুক্তির ফলে যুদ্ধ থামবে এবং ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে সংঘটিত সবচেয়ে মারাত্মক এবং ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের অবসান ঘটবে।
বিবিসির গাজা প্রতিনিধি রুশদি আবু আলোফ বলেন, চুক্তিটি গাজার কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষের ঘরে ফিরে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বাধীন বন্দুকধারীরা নিরাপত্তা বাধা ভেঙে ইসরায়েলি সম্প্রদায়ে প্রবেশের পর ইসরায়েলি সেনারা গাজায় আক্রমণ চালায়, যেখানে ১,২০০ সৈন্য ও বেসামরিক লোক নিহত হয় এবং ২৫০ জনেরও বেশি বিদেশি ও ইসরায়েলি জিম্মি অপহরণ করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে ৪৬,০০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং সংকীর্ণ উপকূলীয় ছিটমহলটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।