ট্রাম্পের অভিষেকের প্রতিবাদে ওয়াশিংটনে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের প্রতিবাদ জানাতে স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভে নারী অধিকার, জাতিগত ন্যায়বিচারসহ নানা বিষয়ে সোচ্চার গোষ্ঠীর কর্মীরা রয়েছেন। প্রতিবাদকারীদের আশঙ্কা, রিপাবলিকান পার্টির এই নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।
বিক্ষোভকারীদের অনেকে গোলাপি টুপি পরেছেন। ২০১৭ সালে প্রথম মেয়াদে ট্রাম্পের ক্ষমতাগ্রহণের সময় এই রঙের টুপি পরে বিপুলসংখ্যক মানুষ বিক্ষোভ করেছিলেন।
গতকাল সকালে প্রতিবাদকারীরা যখন হোয়াইট হাউস ও ন্যাশনাল মলের পাশ দিয়ে লিংকন মেমোরিয়ালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল।
ট্রাম্পের অভিষেকের বিরুদ্ধে এবারের প্রতিবাদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পিপলস মার্চ’। ২০১৭ সালে ট্রাম্পের অভিষেকের যে প্রতিবাদ হয়েছিল, সেটার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘উইমেন মার্চ’। তখন থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন অধিকার গোষ্ঠীর উদ্যোগে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের মধ্যে নানা অধিকার গোষ্ঠীর কর্মীরা রয়েছেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
তবে এবার ২০১৭ সালের তুলনায় প্রতিবাদকারীর সংখ্যা কম। ট্রাম্পের কাছে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হেরে যাওয়ার পর দেশটির নারী অধিকার আন্দোলন বিভক্ত হয়ে পড়ায় এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আয়োজকেরা পূর্বাভাস করেছেন, এবারের প্রতিবাদে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অংশ নিতে পারেন। তবে স্থানীয় পুলিশের ধারণা, প্রতিবাদকারীর সংখ্যা ২৫ হাজারের মতো হতে পারে।
ট্রাম্পবিরোধীরা ওয়াশিংটন ডিসিতে কংগ্রেস ভবন এলাকায় প্রতিবাদের পাশাপাশি আগামীকাল সোমবারের অভিষেক অনুষ্ঠানকে ঘিরে দেশজুড়ে তিন শতাধিক মিছিলের পরিকল্পনা করেছেন। নাগরিক অধিকার, পরিবেশ অধিকার ও প্রজনন অধিকার গোষ্ঠীগুলো এসব মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
ট্রাম্প ২০১৬ সালে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে থাকা হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করেন। এবারও তিনি একজন নারী প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
ক্ষমতাগ্রহণের প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের অভিবাসন আইনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ঐতিহাসিকভাবে খোলা স্থানে হয়ে থাকে। কিন্তু এবার ওয়াশিংটনে তীব্র ঠান্ডার পূর্বাভাস থাকায় কংগ্রেস ভবনের ভেতরে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কংগ্রেস ভবনের রোটুন্ডায় এবারের অভিষেক অনুষ্ঠান হবে বলে গত শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন।
৪০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট হিসেবে রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮৫ সালে ক্যাপিটল ভবনের অভ্যন্তরে শপথ নিয়েছিলেন। তখনো তীব্র ঠান্ডার কারণে শপথ অনুষ্ঠান ক্যাপিটলের রোটুন্ডায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।