USA

ট্রাম্পের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে প্রযুক্তিদুনিয়ার শীর্ষ তারকারা আগ্রহী কেন

আগামীকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই প্রযুক্তিদুনিয়ায় এক অভাবনীয় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। প্রযুক্তিদুনিয়ার যেসব তারকা একসময় ট্রাম্পের কঠোর সমালোচক ছিলেন, তাঁরাই এখন তাঁর দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াচ্ছেন। ট্রাম্প নিজেও বিষয়টি নিয়ে মজা করে বলেছেন, ‘প্রথম মেয়াদে মনে হতো, সবাই আমার বিরুদ্ধে। এখন সবাই আমার বন্ধু হতে চাইছে। হয়তো আমার ব্যক্তিত্ব বদলে গেছে!’
প্রযুক্তিদুনিয়ার তারকাদের এই বন্ধুত্বের হাত বাড়ানো নিছক সৌজন্যের নয়; বরং তা কঠোর বাস্তববাদী কৌশলের অংশ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ ও একচেটিয়া বাজারব্যবস্থার বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ প্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাই ব্যবসার স্বার্থ রক্ষায় ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠতা অর্জনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন তাঁরা।

জাকারবার্গের অবস্থান বদল

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও থ্রেডস অ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি হামলার ঘটনার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছিলেন। তবে এখন তাঁর অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত। ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত নৈশভোজে অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে মেটার ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রাম বন্ধসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রাম্পের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছেন জাকারবার্গ।

ইলন মাস্কের কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা

টেসলা, স্পেসএক্স ও এক্স এআইয়ের মালিক ইলন মাস্ক এবার ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। প্রচারণার জন্য বড় অঙ্কের অর্থ অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ট্রাম্পের অনানুষ্ঠানিক প্রযুক্তি উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন। সরকারি চুক্তির বিশাল অংশ তাঁর কোম্পানিগুলোর আয়ের সঙ্গে যুক্ত, তাই ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা মাস্কের জন্য খুবই প্রয়োজন।

টিম কুকের কৌশলগত ভারসাম্য

অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক বরাবরই কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছেন। বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মতবিরোধ থাকলেও কুক তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতা দিয়ে অ্যাপলের বৈশ্বিক কার্যক্রম সুরক্ষিত রেখেছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক নৈশভোজও সেই কৌশলের ধারাবাহিকতা।

বেজোসের বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি

অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস একসময় ট্রাম্পের কঠোর সমালোচক ছিলেন। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের জন্য ১০ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়ে তিনি সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন। ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় এটি বেজোসের বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।

গুগলের উদ্যোগ

গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই ও সহপ্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। অ্যান্টি ট্রাস্ট মামলার কারণে কোম্পানির বিভাজনের ঝুঁকি থাকায় প্রশাসনের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি করাকে তাঁরা এখন অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

জেনসেন হুয়াংয়ের কৌশল

এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেনসেন হুয়াং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) বিস্তারে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে চান। যদিও বাণিজ্য শুল্ক তাঁর ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এআই খাতে বিশ্বনেতৃত্বে রাখতে ট্রাম্পের সঙ্গে সহযোগিতার ওপর জোর দিচ্ছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button