Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

মার্চে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আবার বসবে ঐকমত্য কমিশন

সংস্কার ইস্যুতে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই চার্টার’ ঘোষণা করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মার্চ মাসের শুরুতেই রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাদা আলাদাভাবে আলোচনায় বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদনের লিখিত কপিও এরইমধ্যে দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এবং নিজেদের মধ্যে আলাপের পরই তারা মতামত জানাবে।

বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে কথা বলে বিবিসি বাংলা জানতে পেরেছে, তারা এখন এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করছে। এরপর কমিশনের সাথে তাদের বৈঠক হবে। তখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তারা তুলে ধরবে।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, দ্রুতই দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করবেন তারা। তার আশা, নির্ধারিত সময়ের আগেই এই কমিশন তাদের কাজ শেষ করতে পারবে।

কমিশন সূত্র বলছে, সংস্কার ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট মতামতের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে একটি ফরম পাঠানো হবে। এ ফরমে দলগুলো মতামত দেবে যে কোন কোন সংস্কার তারা এখনি চায় কিংবা কোনগুলো তারা পরে বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী।

আগামী মাসের মাঝামাঝি দলগুলো ও জোটের সাথে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলাদা আলাদা বৈঠক শুরু করতে পারে বলে জানা গেছে।

সংবিধান, নির্বাচনী ব্যবস্থা, বিচারবিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ বিভাগের সংস্কারের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম দফায় যে ছয়টি কমিশন গঠন করেছে সেই কমিশনগুলোর প্রধানদের নিয়েই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। এর প্রধান ইউনূস নিজেই।

দলগুলো এখন কী করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংস্কার কতটা হওয়া দরকার এ নিয়ে বড় দুটি দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য রয়েছে, যা দলটির নেতারা প্রকাশ্যেই বলে আসছেন।

বিএনপি বরাবরই জরুরি সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের দাবি করে আসছে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বক্তব্য-বিবৃতিতে ‘আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন’ নীতিই উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে সরকারের কাছেও তারা তা উপস্থাপন করেছেন।

এমন প্রেক্ষাপটে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঐকমত্য কমিশনের সাথে দলগুলোর প্রথম বৈঠকে কয়েকটি দল বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টগুলো পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার জন্য এগুলোর ‘হার্ড কপি’ দেয়ার প্রস্তাব করেছিল।

সে আলোকে কমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই সব দলের কাছেই রিপোর্টগুলোর কপি পাঠানো হয়েছে। তারা এগুলো পর্যালোচনার কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে কয়েকটি দল।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, সরকারের কাছ থেকে পাওয়া প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর তারা কমিশনের কাছে তাদের মতামত জানাবেন।

‘তাতে যেসব বিষয় এখনি বাস্তবায়নের জন্য ঐকমত্য হবে সেগুলো করা হবে। আর যেগুলো নিয়ে এখনি ঐকমত্য হবে না, সেগুলোর বিষয়ে নির্বাচনের পর সংসদে আলোচনা-পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে- এটিই আমাদের অবস্থান,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

আমির খসরু বলছেন, নির্বাচনে প্রতিটি দল তাদের সংস্কার প্রস্তাবগুলো জনগণের কাছে উপস্থাপনের সুযোগ পাবে এবং জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সেগুলো নিয়ে পরবর্তী সংসদে আলোচনা হবে।

‘আমরা মনে করি, এটিই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। যেসব বিষয়ে এখন একমত হওয়া যাবে না সেগুলোর বিষয়ে নির্বাচিত সংসদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে,’ বলছিলেন তিনি।

এখানে বলে রাখা দরকার যে বিএনপি শুরু থেকেই জরুরি সংস্কার বাস্তবায়নের পাশাপাশি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে।

যদিও সরকার গঠনের পর ছয় মাসেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও সরকার এখনো ‘বাস্তবায়নযোগ্য’ সংস্কার প্রস্তাবগুলোও চূড়ান্ত করতে পারেনি।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, তারাও সরকারের পাঠানো সংস্কার প্রতিবেদনগুলোর কপি পেয়েছেন।

‘রিপোর্টগুলো রাজনৈতিক দলগুলোকে দেয়ার জন্য আমরা আগেই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সেটি আমরা এখন পর্যালোচনা করছি। এরপর যখন কমিশনের সাথে ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠক হবে তখন আমরা আমাদের অভিমত তাদের জানিয়ে দেব,’ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন তিনি।

তিনি বলেন, তারা এখন বিভিন্ন কমিশন তাদের প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করেছে সেগুলোর সাথে তাদের দলীয় প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখছেন। এর ভিত্তিতেই তারা কমিশনের সাথে বৈঠকে উত্থাপনের জন্য তাদের প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করবেন।

জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের আগেই সংস্কার বাস্তবায়নের পক্ষে তাদের মত দিয়ে আসছে। এর ফলে সংবিধানসহ আরো কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য চূড়ান্তভাবে কী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়- তার প্রতি অনেকের আগ্রহ আছে।

আবার জামায়াতের অবস্থানের সাথে মিল আছে আন্দোলনকারী ছাত্রদের সংগঠক জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরও। এ ক্ষেত্রে তারা যুক্তি হিসেবে দেখাতে চান যে- সংস্কার শেষ না করে নির্বাচন হলে রাজনীতি আবার পুরো ধারাতেই ফিরে যাবে।

অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের একটি প্রস্তাবও মাঠে আছে। বিশেষ করে জামায়াত ও আন্দোলনকারী ছাত্রদের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রস্তাবকে সমর্থন করা হচ্ছে। আবার এটি তীব্রভাবে বিরোধিতা করছে বিএনপি।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হতে পারে না।

গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলছেন, তারা আশা করছেন- তাদের জোটভুক্ত দলগুলোর সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

‘সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের আগের কিছু অবস্থান আছে। সে আলোকেই সরকারের কমিশনগুলোর রিপোর্ট আমরা পর্যালোচনা করবো। সংস্কার ইস্যুতে দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কিভাবে কমিয়ে আনা যায় সেটিই হবে তাদের প্রধান লক্ষ্য,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন সাইফুল হক।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কার প্রশ্নে একটি সনদ তৈরির লক্ষ্য নিয়ে যে সূচনা বৈঠক করেছিল তাতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ এখনকার সক্রিয় দলগুলো যোগ দিয়েছিল।

শুধু গত বছর আগস্টে আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ, ১৪ দলীয় জোট এবং এর মিত্র হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টিকে এ প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে।

এর আগে গত বছর ডিসেম্বরে বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মূহাম্মদ ইউনুস তার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এই কমিশনের কাজের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি তখন বলেছিলেন, জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশনের কাজ হবে রাজনৈতিক দলসহ সব পক্ষের সাথে আলোচনা করে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপন হবে, সেগুলো চিহ্নিত করা ও বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করা।

পরে ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ কমিশনকে ছয় মাসের সময় দেয়া হয়েছে তাদের সুপারিশমালা চূড়ান্ত করার জন্য।

যদিও এর মধ্যেই ডিসেম্বরেই নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য থাকার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচন কমিশনও জানিয়েছে, আপাতত ডিসেম্বরকে সামনে রেখেই নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ চালাচ্ছেন তারা।

তবে চূড়ান্তভাবে এসব কিছুই নির্ভর করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দলগুলোর সাথে আলোচনা করে কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে তার ওপর।

ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দলগুলোকে বলেছিলেন, ‘এই জিনিসটা করা হচ্ছে কারণ যাতে করে একটা সনদ তৈরি হয়। যেটা হবে জুলাই সনদ বা জুলাই চার্টার। এটিতে যেন আমরা সবাই মিলে একমত হতে পারি।’

একই বৈঠকে কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে আমরা আলাদা আলাদাভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলবো। আমরা জোটগতভাবে কথা বলবো। একপর্যায়ে হয়তো আবার সকলকে একত্রিত করে ফিরে আসবো।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto