Bangladesh

দূরত্ব কমছে বিএনপি জামায়াতের

বেশ কিছুদিন ধরে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছিল। নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে দল দুটির নেতারা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে দুই দলের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পাল্টাপাল্টি প্রচার চালান। এতে অনেকে মনে করেছিলেন বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। কিন্তু লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমীরের সাক্ষাতে এসব ধারণা অনেকটা পাল্টে গেছে। রোববার জামায়াত আমীর লন্ডনে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরের দিন দেশে ফিরেন। গতকাল ঢাকায় সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর জামায়াত আমীর নির্বাচন নিয়ে দলের অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন। এতদিন দলটি বলে আসছিল নির্বাচনের আগে রাষ্ট্র সংস্কারে প্রয়োজনীয় সময় দিতে চায় তারা। কিন্তু গতকাল একটি সময়সীমা উল্লেখ করে জামায়াত আমীর বলেন, আগামী রমজানের আগেই তারা নির্বাচন চান এবং এই সময়ে নির্বাচন হলেই ভালো হবে। জামায়াত আমীরের এই বক্তব্যের সঙ্গে অনেকে লন্ডনে খালেদা জিয়ার বৈঠকের যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছেন। তারা বলছেন, ওই বৈঠকের পরই জামায়াতের অবস্থান পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। যদিও জামায়াতের তরফে বলা হয়েছে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎটি ছিল সৌজন্য। সেখানে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা না হলেও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সাক্ষাতের বিষয়ে গতকাল মানবজমিনকে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এটা কোনো বৈঠক ছিল না। উনিও মজলুম, আমরাও মজলুম। উনি অসুস্থ। বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেজন্য উনাকে দেখতে যাওয়া। তিনি বলেন, আমি ইউরোপ সফরে ছিলাম, ওই সফরকালেই উনাকে দেখতে যাই। তারেক রহমান সাহেবের বাসায় এক ঘণ্টার মতো ছিলাম। 
উনি আমাদের খোঁজখবর নিয়েছেন। আমরাও উনার খোঁজখবর নিয়েছি। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এ বিষয়ে কথা হয়নি, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের উপস্থিত ছিলেন। দলের আমীর সফর শেষে ঢাকা ফিরলেও ডা. তাহের এখনো লন্ডনে অবস্থান করছেন। গত ৪ঠা এপ্রিল জামায়াত আমীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ইউরোপ সফরে যান। তারা ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে একাধিক সাক্ষাৎ ও বৈঠকে অংশ নেন। সফরের বিষয়ে আজ দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করা হবে। 

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর আন্দোলনে থাকা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন-সংস্কারসহ নানা ইস্যুতে দ্বিমত তৈরি হয়েছে। এই দ্বিমত থেকে বাহাস হচ্ছে নেতাদের মধ্যে। এক্ষেত্রে বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে মতের বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে দুই দলের নেতাদের দুই রকমের বক্তব্য পাওয়া যায়। এতে রাজনীতির মাঠে ধারণা তৈরি হয়েছিল দল দুটি রাজনীতির স্বার্থেই আলাদা পথে হাঁটছে। কিন্তু সর্বশেষ লন্ডন বৈঠকের পর এ নিয়ে বিএনপি এবং জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝেও এক ধরনের পরিবর্তন দেখা গেছে। এ বৈঠকের পর নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যও দেখা যায়নি। এ ছাড়া নির্বাচন ইস্যুতে প্রায় কাছাকাছি অবস্থান থেকে নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন। এতে অনেকে বলছেন, লন্ডন বৈঠকে নির্বাচন ইস্যুতে দল দুটির মধ্যে বোঝাপড়া হয়ে থাকতে পারে। যার মাধ্যমে সামনে হয়তো দৃশ্যমান দূরত্বও কমে আসতে পারে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto