সিগন্যালে আরেকটি গ্ৰুপে ইয়েমেনে হামলার তথ্য প্রকাশ করেছিলেন হেগসেথ

বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ সিগন্যালে আরেকটি আলাপচারিতায় ইরান–সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তথ্য প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। এ বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন একটি সূত্র গতকাল রোববার রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রে বলেছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথের স্ত্রী, ভাই ও ব্যক্তিগত আইনজীবী ওই গ্রুপে যুক্ত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বার্তা আদান-প্রদানের একটি জনপ্রিয় অ্যাপ সিগন্যাল। সাধারণ মানুষও এ অ্যাপটি ব্যবহার করেন।
এমন একটি অরক্ষিত অ্যাপে কেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ ইয়েমেনে হামলার মতো খুবই সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করেছেন, তা নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন উঠেছে। ইরান–সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের দমনে চলতি বছরের মার্চে ইয়েমেনে বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
ওই হামলার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনায় নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ। অভ্যন্তরীণ তথ্য ফাঁসের ঘটনা নিয়ে তদন্তের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে পেন্টাগন ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছে।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য আটলান্টিক প্রথম ইয়েমেনের হুতিদের ওপর মার্কিন হামলার পরিকল্পনা নিয়ে সিগন্যালে হওয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি আলাপচারিতার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেছিল। সিগন্যাল অ্যাপে আলাপচারিতার সময় সেই গ্রুপে ভুল করে সাময়িকীটির সম্পাদক জেফ্রি গোল্ডবার্গকে যুক্ত করা হয়েছিল।
আটলান্টিক ম্যাগাজিনে গ্রুপ চ্যাটের তথ্য ফাঁস হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অস্বস্তিতে পড়ে। বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতারা প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎসের পদত্যাগ দাবি করেন।
দ্বিতীয় যে আলাপচারিতা, সেখানেও হেগসেথ হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানা আছে, এমন একজন নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেছেন, সিগন্যাল অ্যাপে দ্বিতীয় আলাপচারিতাতেও বেশ কয়েকজন যুক্ত ছিলেন।
সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য নয়, বরং প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য হেগসেথ ওই গ্রুপটি খুলেছিলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তাঁর নিয়োগ পাওয়ার প্রক্রিয়ার সময় সিগন্যালে গ্রুপটি খোলা হয়।
দ্বিতীয় গ্রুপে আলাপচারিতার সময়ও কখন ইয়েমেনে বিমান হামলা চালানো হবে, তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন ওই সূত্র।
হেগসেথের স্ত্রী জেনিফার টেলিভিশন চ্যানলে ফক্স নিউজের সাবেক প্রযোজক। জেনিফার বিদেশি প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে সংবেদনশীল বৈঠকগুলোতে উপস্থিত থাকেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পেন্টাগন থেকেই এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পেন্টাগন প্রকাশ করা এক ছবিতে দেখা গেছে, মার্চে হেগসেথ যখন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন, তখন তাঁর পাশে স্ত্রী জেনিফার বসে আছেন।
আর হেগসেথের ভাই পেন্টাগনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
দ্বিতীয় আলাপচারিতা ফাঁসের বিষয়ে কথা বলতে রয়টার্স থেকে পেন্টাগন এবং হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু কোথাও থেকে সাড়া মেলেনি।