Hot

এনবিআরের দুই সচিবের পদ কি ‘সোনার হরিণ’ আমলাতন্ত্রের জালে বন্দি জনস্বার্থ

যার হাতে রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা তাকে পলিসি প্রণয়ন ও মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না-প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের অভিমত * নিয়ন্ত্রণ ও কুক্ষিগত করার প্রবণতা থেকে তারা এখন অধ্যাদেশটি তাদের মতো করে করতে চান-কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তারা

‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই, মনোহরণ চপলচরণ সোনার হরিণ চাই।’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত এ গানের মর্মার্থ বা প্রয়োজনীয়তা কখনো কখনো আমাদের বাস্তব জীবনে নানাভাবে প্রভাবিত কিংবা প্রকাশিত হয়। ঠিক তেমনই সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের সম্ভাব্য দুটি সচিব পদের ‘কর্তৃত্ব’ নিয়ে অবস্থাদৃষ্টে এরকম এক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। দপ্তরটির নাম জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যাকে রাষ্ট্রের লাইফলাইন বা চালিকাশক্তিও বলা হয়। যেখান থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার বেশির ভাগ অর্থসংস্থান হয়। জনগণের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আয়কর ছাড়াও শুল্ক ও ভ্যাট আদায় করা হয়। জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এখানে কর্মরতদের মেধা ও দক্ষতার যথাযথ মূল্যায়ন এবং রাজস্ব আহরণ, বিনিয়োগবান্ধব রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার দাবি দীর্ঘদিনের। এ লক্ষ্যে এনবিআরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। বিভিন্ন ধাপ পার হয়ে ইতোমধ্যে উপদেষ্টা পরিষদে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদনও হয়েছে। কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে দুই বিভাগের সচিব পদের ‘দখল’ নিয়ে। 

বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার কর্মকর্তারা চাইছেন অতীতের মতো এসব পদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে। বিপরীতে বাস্তবতা ও ন্যায্যতার প্রশ্নে বিসিএস (ট্যাক্সেশন) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও ভ্যাট) ক্যাডার কর্মকর্তারা চান-সচিব পদে তারাই দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া অভিযোগ উঠেছে, উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত খসড়ার মধ্যে বেশ কিছু সূক্ষ্ম শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে; যা বহাল থাকলে কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার এখতিয়ার অনেকাংশে ক্ষুণ্ন হবে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এখন পর্যন্ত যে ধরনের মতামত দিয়েছেন তাতে অনেকেই মনে করেন, রাজস্বনীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিবের দুটি পদে বিসিএস (ট্যাক্সেশন) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও ভ্যাট) ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতা ছাড়াও সততা ও যোগ্যতা-দক্ষতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া উচিত হবে। কারণ একেবারে মাঠপর্যায় থেকে তারা এ বিষয়ে কাজ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের দক্ষতা অর্জন করেছেন। এ সংক্রান্ত নীতি ও ব্যবস্থাপনা কাজে তাদেরই রয়েছে বাস্তব অভিজ্ঞতা। মূলত তারাই ভালো করে জানেন, জনস্বার্থকে ঠিক রেখে আন্তর্জাতিকমান অনুযায়ী জনমুখী ও বিনিয়োগবান্ধব রাজস্ব আদায় কিভাবে বাড়ানো সম্ভব; একই সঙ্গে এজন্য কি ধরনের পলিসি প্রণয়ন প্রয়োজন। 

যদিও প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের একেবারে ভিন্ন মেরুতে অবস্থান স্পষ্ট। তারা এক কথায়, ধারাবাহিক প্রেক্ষাপটকে সামনে আনতে চান। কিভাবে এতদিন এনবিআর চলেছে, কারা এখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন, বিভাগ হিসাবে ভাগ হলে সরকার কিভাবে কাদের সচিব নিয়োগ দেন এবং সর্বোপরি এর ঐতিহাসিক সিলসিলা ও ডিসকোর্সকে তারা তাদের মতো করে উপস্থাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিশেষ করে তারা যেটি বেশি করে বলতে চান, যার হাতে অস্ত্র-তাকে গুলি করার ক্ষমতা দেওয়া মোটেই ঠিক হবে না। অর্থাৎ যার হাতে রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা-তাকে পলিসি প্রণয়ন ও মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। এজন্য তাদের ভাষায়, এতদিন যেভাবে চলেছে সেভাবেই চলতে দিতে হবে। এনবিআর ভেঙে দুটি বিভাগ হলেও এখানে সরকার যাকে অধিকতর যোগ্য মনে করবে তাকে বা তাদের এ দুটি বিভাগে সিনিয়র সচিব হিসাবে নিয়োগ দেবে। যদিও প্রশাসন ক্যাডারের কোনো কর্মকর্তা কিংবা তাদের অ্যাসোসিয়েশনের কোনো নেতা এ বিষয়ে নাম-পরিচয় প্রকাশ করে কিছু বলতে চাননি। অন্তত বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে গত কয়েকদিনে সাংবাদিক হিসাবে আমার এক রকম তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। তারা এ নিয়ে বক্তব্য-বিবৃতি কিছুই দেবেন না। এমনকি এ বিষয়ে প্রশাসন ক্যাডারে যারা ‘বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি’ হিসাবে কাজ করছেন বলে পরিচিতি পেয়েছেন তাদেরও যেন কথা বলার সময় নেই। তারা সারা দিন মিটিং নিয়ে খুবই ব্যস্ত। কিন্তু অর্থ উপদেষ্টাসহ সরকারের যেখানে যাকে যেভাবে বলা দরকার, সেটি তারা ঠিকই করে যাচ্ছেন। 

যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসন ক্যাডারের কয়েকজন কর্মকর্তা প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টিকে প্রশাসন ক্যাডারের গোষ্ঠী স্বার্থ হিসাবে দেখানো হচ্ছে। বাস্তবে যার কোনো ভিত্তি ও যুক্তি নেই। তারা মনে করেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আড়াল করে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে। তাদের মতে, মন্ত্রণালয় ভেঙে এ রকম বিভাগ করার নজির তো অনেক রয়েছে। যেমন-স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তখন তো অধ্যাদেশ বা আইন করে করতে হয়নি। এটি শুধু সরকারের নির্বাহী প্রধানের সিদ্ধান্তই যথেষ্ট। কিন্তু এখানে অধ্যাদেশ বা আইন করতে হচ্ছে। অর্থাৎ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী এটি সংসদের এখতিয়ার। ফলে যখন সংসদ গঠিত হবে, তখন বৈধতার জন্য সেখানে অধ্যাদেশটি নিতেই হবে। 

তারা বলেন, এনবিআরকে দুই ভাগ করার পরামর্শ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। কারণ ছিল, একই স্থানে পলিসি প্রণয়ন ও রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। এর ফলে জনহয়রানিসহ নানারকম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। তারা মনে করেন, এখানে প্রয়োজন ছিল পলিসি প্রণয়ন করবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং সেটি বাস্তবায়ন করে রাজস্ব আদায় করবে এনবিআর বা রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ। কিন্তু অধ্যাদেশের যে খসড়া এনবিআর থেকে উপদেষ্টা পরিষদে এক রকম সরাসরি পাঠানো হয়েছে, সেখানে সবকিছু বাতিল করে একেবারে দুটি বিভাগ করার কথা বলা হচ্ছে কেন? যেখানে তারাই সব কিছু করবে। তাদের ক্যাডার থেকেই দুই বিভাগে সিনিয়র সচিব নিয়োগ দিতে হবে। তাহলে তো সেই একই অবস্থায় সব কিছু থেকে যাবে। যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেটির সুফল কেউ পাবে না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সচিব তো কোনো সুনির্দিষ্ট ক্যাডারের পদ নয়। সরকার যাকে উপযুক্ত মনে করবে তাকে সচিব হিসাবে নিয়োগ দেবে। এছাড়া জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে সেখানে তো এনবিআরকে এভাবে দুই বিভাগে ভাগ করার কথা বলা হয়নি।

অপরদিকে বিসিএস (ট্যাক্সেশন) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও ভ্যাট) ক্যাডারের কয়েকজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, শুরু থেকেই প্রশাসন ক্যাডার সবার ওপর ছড়ি ঘুরাতে অভ্যস্ত। তারা গাছের নিচের ও উপরের সবকিছু খেতে চায়। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো-সবসময় তাদের মধ্যে সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করার একধরনের মানসিকতা লক্ষ করা যায়। অথচ সবাই বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখে ক্যাডার সার্ভিসে এসেছেন। তারা বলেন, যে কাজে তারা শুরু থেকে দক্ষতা অর্জন করেছেন, একেবারে মাঠ পর্যায় থেকে তারা যে বিষয়ে প্র্যাকটিক্যালি দক্ষতা অর্জন করেছেন, সেখানে কীভাবে দুই বিভাগের সচিব পদে বসার এখতিয়ার রাখে প্রশাসন ক্যাডার। বাস্তবে তো তাদের এ সেক্টরের নীতি প্রণয়নসহ রাজস্ব আদায়ের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তারা তো ঠিকই তাদের লাইনপোস্টে ইউএনও, ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারসহ সব পদ ভোগ করে মন্ত্রণালয়ে এসে পদোন্নতি পেয়ে সচিব পদে বসে যান। 

তারা বলেন, এর আগে অনেকবার মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সব ক্যাডার থেকে বিশেষায়িত কর্মকর্তার পুল গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন ক্যাডারের বাধার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। প্রশ্ন হলো-তারা যদি তাদের লাইন পোস্টে কাজ করে মন্ত্রণালয়ে সচিব হতে পারেন, তাহলে তারা কেন তাদের লাইন পোস্টের শীর্ষ পদে বসতে পারবেন না। মূলত নিয়ন্ত্রণ ও কুক্ষিগত করার প্রবণতা থেকে তারা এখন অধ্যাদেশটি তাদের মতো করে করতে চান। তারা সবসময় মন্ত্রী/উপদেষ্টাদের পাশে থাকেন। এজন্য নানা পন্থায় অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায়সংগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ কাজে লাগান, যা সম্পূর্ণ অন্যায়। তারা প্রত্যাশা করতে চান, অতীতে তারা সফল হলেও এখন আর সেটি হবে না। 

মোদ্দা কথা, বিষয়টির নানামুখী গোষ্ঠীস্বার্থ ও তাৎপর্য নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করলে আমার মতো অনেকের কাছে মনে হতে পারে, এনবিআর ভেঙে সৃষ্টি হতে যাওয়া বিভাগ দুটির সিনিয়র সচিবের পদ ‘সোনার হরিণ’ তো বটেই, এমনকি এর চেয়েও বেশি কিছু। যা পাওয়া বা ধরে রাখার জন্য পর্দার আড়ালে মহলবিশেষের প্রাণন্তকর চেষ্টা চলছে বললেও কম বলা হবে। কাউকে আহত কিংবা বিব্রত করার জন্য এরকম প্রশ্ন সামনে আনা হচ্ছে না। কিন্তু যারা এ দুটি সচিবের পদ নিয়ে একরকম কাড়াকাড়ি করছেন, তারা জনস্বার্থকে প্রধান্য দেওয়াসহ সবদিক আরও একবার বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখতে পারেন। আমার মনে হয়, প্রত্যেকের বিবেক সঠিক জবাবটা দিতে সক্ষম। অথবা উন্মুক্ত একটা সেমিনার করা যেতে পারে। যেখানে সব পক্ষের উপস্থিতিতে বাস্তবসম্মত ও বিশ্লেষণধর্মী যৌক্তিক আলোচনার মধ্য দিয়ে এর একটা সঠিক সিদ্ধান্তে আসা কঠিন কিছু হবে না। 

প্রসঙ্গত, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে ১৭ এপ্রিল উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়। সেখানে এনবিআরকে ভেঙে দুটি বিভাগ করতে নীতিগত অনুমোদনও দেওয়া হয়। এরপর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও আইনগত ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সময় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক থেকে কিছু অবজারভেশন যুক্ত করে দেওয়া হয়, যা ভেটিংয়ের আওতাভুক্ত হবে। 

এদিকে এর আগে এ বিষয়ে সরকার পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটি গঠন করে। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদের নেতৃত্বে ৯ অক্টোবর গঠিত এ কমিটির সদস্যরা হলেন সাবেক চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সদস্য (কর) মো. দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সদস্য (শুল্ক) ফরিদউদ্দীন আহমেদ ও সাবেক সদস্য (কর) আমিনুর রহমান। ইতোমধ্যে এ কমিটি সুপারিশ রিপোর্ট দিয়েছে। এছাড়া এ বিষয়ে ১৩ এপ্রিল বিসিএস (ট্যাক্সেশন) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে দুই পৃষ্ঠার বিশদ স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ২৬ এপ্রিল বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিশেষ সাধারণ সভা করা হয়। সেখানে তারা উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত চূড়ান্ত খসড়া অধ্যাদেশে নতুন করে যুক্ত করা বেশকিছু শব্দগত বিভিন্ন ত্রুটি চিহ্নিত করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। 

এনবিআরকে ভেঙে নীতি ও রাজস্ব প্রশাসন করার প্রথম প্রস্তাব দিয়েছিল আইএমএফ। ১৯৯৩ সালে তারা এ বিষয়ে সরকারকে চাপ দেয়। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিলে তখন বিশ্বব্যাংকও এ নিয়ে চাপ প্রয়োগ করে। 

যাইহোক পরিশেষে এটিই বলতে চাই, এনবিআর ভেঙে দুটি বিভাগ হোক। এতে হয়তো অনেকের আপত্তি থাকবে না। কিন্তু একটি বিষয় সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে। সেটি হলো-সংস্কারের নামে যা কিছু হচ্ছে, সেখানে প্রকৃত অর্থে জনগণ তথা সাধারণ মানুষের স্বার্থ কতখানি প্রতিফলিত হচ্ছে। একজন ভিক্ষুকও কিন্তু পরোক্ষভাবে সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের কর, ভ্যাট ও শুল্ক আদায়ের যে ব্যবস্থাপনা চালু আছে, সেখানে সাধারণ মানুষ কতখানি সুফল পেয়ে থাকে, সেটিই বড় প্রশ্ন। প্রতিবছর বিশেষ কৃতিত্ব জাহির করে যে বাজটে দেওয়া হয়, সেখানে একজন সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুরের জীবনে কি কোনো পরিবর্তন আসে? যে মানুষটি সবসময় ফুটপাতে ঘুমায়, যারা সমাজে হতদরিদ্র, তাদের কাছে রাষ্ট্র থাকা-না-থাকা কোনো কিছু কি ম্যাটার করে? হয়তো করে, হয়তো করেও না। অথচ রাষ্ট্র, সমাজ, এই আমি, আপনি, আমরা-আমাদের সবার দায়িত্ব একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনে এগিয়ে আসা, কাজ করা। এনবিআরকে দুই বিভাগে বিভক্ত করা এবং দুই বিভাগের সচিবের দায় ও দায়িত্ব যাদের দেওয়া হবে, বা কথিত ‘সোনার হরিণ’ হিসাবে শেষ পর্যন্ত যারা এ চেয়ার দুটিতে বসবেন, তাদেরকে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় এসব প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই দিতে হবে। দেওয়া উচিত। অন্তত বিবেককে দিতেই হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
bacan4d
bacansport login
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
bacan4d
bacan4d login
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo
bacan4d toto slot
bacan4d toto slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacansports
bacansports