এবার বিপুলসংখ্যক রিজার্ভ সৈন্য নামাবে ইসরাইল

দক্ষিণের রাফা এবং উত্তরের কিছু অংশে হামাস একটি বিকেন্দ্রীভূত গেরিলা সংগঠনের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এবার গাজা যুদ্ধে আরো বিপুলসংখ্যক রিজার্ভ সৈন্য নামাবে ইসরাইল। শনিবার রাতে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় এবার আরো পরিকল্পিতভাবে হামলা চালাবে ইসরাইল। এ সময় তারা আরো কয়েক হাজার রিজার্ভ সৈন্য বাহিনীতে যুক্ত করবে। রিজার্ভ সৈন্যদের বাহিনীতে যোগদানের নির্দেশ শিগগির দেয়া হবে। তারা আগামী সপ্তাহ থেকে সেনাবাহিনীতে যোগদান করবে।
আইডিএফ-এর মতে, এই রিজার্ভ সৈন্যদের গাজা নয়, বরং লেবানন, সিরিয়া এবং পশ্চিমতীরে মোতায়েন করা হবে। যেন স্থায়ী সেনা সদস্যদের গাজা উপত্যকায় পাঠানো যায়। সেনাবাহিনীর ভাষ্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপ পুরোপুরি ‘ব্যবহারিক ও কৌশলগত কারণে’ নেয়া হয়েছে।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা পরামর্শ সভায় আইডিএফ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় সম্ভাব্য পর্যায়ক্রমিক অভিযান সম্পর্কে অবহিত করে। এর জন্য পর্যাপ্ত সেনা সমাবেশ অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা রোববার বৈঠকে বসে সামরিক পরিকল্পনার অনুমোদন নিয়ে ভোট দেবে।
বর্তমানে আইডিএফের তিনটি ডিভিশন গাজায় সক্রিয় রয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের মূল লক্ষ্য হামাসকে বন্দী বিনিময়ে রাজি করানো। তবে নেতানিয়াহু এর আগে হামাসের ওপর ‘পূর্ণ বিজয়’-কেই প্রধান লক্ষ্য বলে ঘোষণা করেছেন।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হামাসের ওপর চাপ বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং রিজার্ভ সৈন্য ডাকার সিদ্ধান্ত ওই চাপ তৈরির কৌশলেরই অংশ। আইডিএফ আরো জানায়, গাজার কিছু এলাকায়, বিশেষ করে কেন্দ্রস্থলে হামাস কিশোরদের নিয়োগ দিয়েছে। তারা নিজেদের অভিজ্ঞ যোদ্ধাদের সংরক্ষণে সচেষ্ট।
আইডিএফ-এর মতে, দক্ষিণের রাফা এবং উত্তরের কিছু অংশে হামাস একটি বিকেন্দ্রীভূত গেরিলা সংগঠনের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
গাজায় বর্তমানে ৫৯ জন বন্দী রয়েছে। তাদের মধ্যে ২০১৪ সালের যুদ্ধে নিহত এক সৈনিকের লাশও রয়েছে। আইডিএফ এই বন্দীদের উদ্ধারকেই যুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে দেখছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর চলমান গাজা যুদ্ধের সূচনা হয়। এতে প্রায় ১,২০০ জন ইসরাইলি নিহত হন এবং ২৫১ জন বন্দী হয়।
অপরদিকে, জানুয়ারি পর্যন্ত ৫২ হাজার ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তবে এই পরিসংখ্যানগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব নয় এবং বেসামরিক ও যোদ্ধাদের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করাও কঠিন।
এ পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলি অভিযানে ৪১৪ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বেসামরিক ঠিকাদারও রয়েছেন।