হার্ভার্ডের তহবিল আরও ৪৫ কোটি ডলার কাটছাঁট ট্রাম্প প্রশাসনের

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল নতুন করে কাটছাঁটের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। গত মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগের দিন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে অনেক বিষয়ে তাদের ‘দৃষ্টিভঙ্গির মিল’ আছে।
মঙ্গলবার মার্কিন স্বাস্থ্য ও মানবসেবা দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, ‘হার্ভার্ডের ৪৫ কোটি ডলারের অনুদান বাতিল করা হয়েছে।’ আগের সপ্তাহেই কাটা হয়েছিল ২২০ কোটি ডলার। বিশ্ববিদ্যালয়টি বৈষম্যমূলক ‘গভীর সমস্যায়’ জর্জরিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
হার্ভার্ড বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে গেছে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসন অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে।
হোয়াইট হাউসের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লাগামহীন ইহুদিবিদ্বেষ হচ্ছে। তাই সংখ্যালঘুদের জন্য নেওয়া বৈচিত্র্যভিত্তিক কর্মসূচিগুলো বন্ধ করা জরুরি। এই যুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর নানাভাবে চাপ দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার সোমবার শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহনের কাছে এক চিঠিতে লেখেন, ‘অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির মিল রয়েছে।’
তিনি জানান, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর বিশ্ববিদ্যালয় একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
চিঠিতে গারবার লেখেন, ‘গত শিক্ষাবর্ষের চ্যালেঞ্জ আমাদের ক্যাম্পাস থেকে ইহুদিবিদ্বেষ ও ঘৃণার অন্য রূপ দূর করতে সংস্কারের পথ দেখিয়েছে।’
তবে এসব সংস্কার করে নিজেদের তহবিল কাটছাঁট বন্ধ করতে পারেনি হার্ভার্ড। মঙ্গলবার এক মামলার নথিতে বিষয়টি উঠে আসে। এতে দেখা যায়, মে মাসে হার্ভার্ডকে জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটস তহবিল বন্ধের চিঠি দেয়। সেখানে বলা হয়, যারা তহবিল পায়, তাদের সাধারণত সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে ‘কোনো সংশোধনের সুযোগ নেই।’
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কোনো রাজনৈতিক দল বা মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত নয় দাবি করে প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে মতের আরও বৈচিত্র্য প্রয়োজন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের তাঁদের ব্যক্তিগত গুণ ও যোগ্যতা দেখে ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়, বর্ণ দেখে নয়।
তবে মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসনের ‘অ্যান্টি-সেমিটিজম টাস্কফোর্স’ এক বিবৃতিতে হার্ভার্ডকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘নৈতিকতার বাহাদুরি ও বৈষম্যের উর্বর জমি’ বলে আখ্যা দেয়।
টাস্কফোর্সের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হার্ভার্ডের নিজস্ব তদন্তেই দেখা গেছে, ইহুদি শিক্ষার্থীরা নিয়মিত অপমান, হামলা ও ভীতি প্রদর্শনের শিকার হয়েছেন।
তাদের দাবি, ‘হার্ভার্ড এবং এর নেতৃত্ব একাধিক গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। আইনসম্মত ও উচ্চশিক্ষার মানদণ্ড হিসেবে হারানো সুনাম ফিরে পেতে তারা কঠিন লড়াইয়ের মুখে রয়েছে।’