বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা প্রথম ছবিতে সন্ধান মিলল লাখো গ্যালাক্সির

চিলিতে অবস্থিত রুবিন অবজারভেটরিতে থাকা বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা মহাকাশের প্রথম ছবিতে দুই হাজারের বেশি গ্রহাণু ও লাখ লাখ গ্যালাক্সির (ছায়াপথ) সন্ধান মিলেছে। জ্যোতির্বিদ ভেরা রুবিনের নামে নামকরণ করা মানমন্দিরটিতে থাকা ক্যামেরাটির নাম লার্জ সিনপটিক সার্ভে টেলিস্কোপ (এলএসএসটি)। বিশাল আকারের এই ডিজিটাল ক্যামেরাটিতে তোলা প্রথম ছবিতে লাখ লাখ গ্যালাক্সি থেকে অভূতপূর্ব আলো ধারণ করেছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, বিশাল এই ডিজিটাল ক্যামেরার মাধ্যমে হাজার হাজার বছর আগের অদেখা গ্রহাণুর ছবি তোলা যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের চিফ অফ স্টাফ ব্রায়ান স্টোন জানিয়েছেন, রুবিন অবজারভেটরি আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে ইতিহাসের সব অপটিক্যাল টেলিস্কোপের চেয়েও বেশি তথ্য সংগ্রহ করবে। নতুন এই অবজারভেটরির মাধ্যমে এরই মধ্যে ২ হাজার ১০৪টি গ্রহাণু আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা, যার মধ্যে সাতটি গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি অবস্থান করছে। আমাদের সৌরজগতে আগে কখনো এসব গ্রহাণু দেখা যায়নি। ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, আমাদের সৌরজগতের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করতে পারে, এমন যেকোনো আন্তনাক্ষত্রিক ধূমকেতু বা গ্রহাণু শনাক্ত করার জন্য ডিজিটাল ক্যামেরাটি ব্যবহার করা হবে।

এলএসএসটি ক্যামেরাস্পেস ডটকম
রুবিন অবজারভেটরি মানমন্দিরটি দুই দশক ধরে নির্মাণ করা হয়েছে। মানমন্দিরটিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি, সংবেদনশীল ক্যামেরা ও টেলিস্কোপের মাধ্যমে গ্রহাণুর মতো ক্ষুদ্র ও ক্ষীণ বস্তু শনাক্ত করা যাবে। মানমন্দির থেকে প্রতি রাতে ক্রমাগত হাজার হাজার ছবি তোলা হচ্ছে। উজ্জ্বলতার পরিবর্তনের তালিকা তৈরি করে গ্রহাণুর মতো লুকানো মহাকাশ শিলার তথ্য সংগ্রহ করবে। এই টেলিস্কোপের ক্যামেরায় তোলায় ১১০০টিরও বেশি চিত্র থেকে তৈরি একটি ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা ত্রিফিড ও লেগুন নীহারিকার একটি মোজাইকও প্রকাশ করেছেন। মাত্র ৭ ঘণ্টা ধরে তোলা ৬৭৮টি পৃথক ছবির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মোজাইকটি। মোজাইকটিতে পৃথিবী থেকে কয়েক হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত নীহারিকার গ্যাস ও ধুলার মেঘের মতো ক্ষীণ বস্তু দেখা যায়। রুবিন অবজারভেটরির বিজ্ঞানী ইউসরা আল সাইয়্যাদ বলেন, টেলিস্কোপের মাধ্যমে বিশাল দৃশ্য ক্ষেত্র প্রদর্শনের জন্য প্রাথমিকভাবে এই ছবি নির্বাচন করা হয়েছে।