Bangladesh

এনসিসির প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে ঐকমত্য কমিশন : অধ্যাপক আলী রীয়াজ

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদের (এনসিসি) প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ষষ্ঠদিনের মতো দ্বিতীয় পর্যায়ের দিনব্যাপী আলোচনার পর বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা জানান।

এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো: এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো: আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আলী রীয়াজ বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মতের মিল না থাকায় জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ নতুন কমিটির কাঠামোতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ কমিটি শুধু সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধানের নিয়োগ এ কমিটির অন্তর্ভুক্ত হবে না।

এ সময় তিনি জানান, কমিশনের দেয়া প্রস্তাবে প্রায় সকল দলই মত দিয়েছে, এরপরও এর বিভিন্ন বিশদ প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি নিয়ে অধিকতর আলোচনা চলবে।

কমিশনের সহসভাপতি আরো জানান, আজকের আলোচনায় রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যেহেতু সংবিধান এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে এখনো উপনীত হওয়া যায়নি, তাই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার বিদ্যমান মূলনীতি অটুট রাখার বিষয়ে কয়েকটি দল মত দিয়েছে, আবার কিছু দল ভিন্নমতও পোষণ করেছে। তাই এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্য হয়নি। তবে, সাম্য ও মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি এবং পক্ষপাতিত্বহীনতা – এ পাঁচ বিষয়ে অধিকাংশ দলের সমর্থন রয়েছে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সাথেও আলোচনা করছি। আশা করি, এ অব্যাহত আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন-সংযোজনের মধ্য দিয়ে আমরা অভীষ্ট লক্ষ্যে অর্থাৎ একটি জাতীয় সনদে পৌঁছাতে পারব।

তিনি আরো বলেন, আলোচনায় ক্ষেত্র বিশেষে মতপার্থক্য থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দ কমিশনের বৈঠক ছাড়াও আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে পরষ্পরের মধ্যে মতবিনিময় করছেন। এটি অবশ্যই সকলের জন্য একটি ইতিবাচক বিষয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ।

দ্রুত ঐকমত্য গঠনের মধ্য দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নে আগামী রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আবারো আলোচনায় বসবে ঐকমত্য কমিশন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto