বাংলাদেশীদের জন্য নতুন ধরনের গোল্ডেন ভিসা চালু করল আমিরাত

এই মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা মূলত ইউএই’র সিইপিএ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তি) অংশীদার দেশগুলোর জন্য চালু করা হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে নতুন ধরনের গোল্ডেন ভিসা কর্মসূচি চালু করেছে। পাইলট প্রকল্পের আওতায় ‘মনোনয়ন-ভিত্তিক’ এই ভিসা কর্মসূচির মাধ্যমে আগের তুলনায় অনেক সহজ শর্তে আজীবনের আবাসনের সুযোগ পাচ্ছেন পেশাজীবী ও সৃজনশীল ব্যক্তিরা।
নতুন এই কর্মসূচিতে নার্স, স্কুলশিক্ষক, অধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ইউটিউবার, পডকাস্টার, ই-স্পোর্টস পেশাজীবী, বিলাসবহুল ইয়টের মালিক, মেরিটাইম নির্বাহীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এর ফলে আগে যেখানে কেবল বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, মেধাবী শিক্ষার্থী ও বিশেষজ্ঞদের জন্য গোল্ডেন ভিসা সীমিত ছিল, এখন তা আরো বিস্তৃত হয়েছে।
২০১৯ সালে সম্পদশালী ও বিনিয়োগকারী বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে আমিরাত প্রথম গোল্ডেন ভিসা চালু করে। তখন মূলত রিয়েল এস্টেট খাতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগকারীরা এই ভিসা পেতেন। পএর ২০২২ সালে ১০ বছরের ভিসার জন্য বিনিয়োগের ন্যূনতম সীমা ২০ লাখ দিরহাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু নতুন মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসায় আর এমন বিনিয়োগের শর্ত নেই।
নতুন কর্মসূচিতে ভিসার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি প্রায় ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা)। পিটিআই-কে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আগামী তিন মাসে ৫ হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিক এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রায়াদ গ্রুপ এই ভিসা কর্মসূচি বাস্তবায়নে দায়িত্ব পেয়েছে। তাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব জানান, আবেদনকারীদের ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা হবে, যার মধ্যে অর্থপাচার, অপরাধমূলক রেকর্ড এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্য বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, ইউএই’র অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে কিভাবে তারা অবদান রাখতে পারেন তা-ও বিবেচনায় নেয়া হবে।
আবেদন প্রক্রিয়ায় নিজ দেশের কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক অনুমোদন লাগতে পারে। তবে ভিসা পেতে দুবাইয়ে যেতে হবে না। আবেদন করা যাবে ওয়ান ভাস্কো সেন্টার, নিবন্ধিত অফিস, অনলাইন পোর্টাল কিংবা কল সেন্টারের মাধ্যমে।
গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার পর আবেদনকারী পরিবারসহ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করতে পারবেন। তারা গৃহকর্মী ও চালক নিয়োগের পাশাপাশি ব্যবসা বা পেশাগত কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। সম্পত্তি পরিবর্তনের কারণে আগের ধরণের ভিসা বাতিল হলেও এই নতুন মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা স্থায়ী থাকবে।
এই মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা মূলত ইউএই’র সিইপিএ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তি) অংশীদার দেশগুলোর জন্য চালু করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই তালিকায় চীনসহ অন্যান্য দেশ যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।