Science & Tech

মঙ্গলে ছিল পানি, ছিল পরিবেশও—তবুও প্রাণ টেকেনি!

মঙ্গল গ্রহ নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। এক সময় বিশাল জলরাশি থাকলেও আজ কেন প্রাণহীন ও মরুভূমিতে পরিণত—বিজ্ঞানীরা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন বহু বছর ধরে। এবার নাসার কিউরিয়োসিটি রোভার পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এক নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ ব্যাখ্যা।

নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, মঙ্গলে বিস্তৃতভাবে কার্বনেট খনিজে সমৃদ্ধ শিলার অস্তিত্ব রয়েছে। এসব শিলা পৃথিবীর চুনাপাথরের মতো, যা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে জমা রাখে। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও নাসার কিউরিয়োসিটি দলের সদস্য এডউইন কাইট এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন।

কাইট বলেন, ‘‘মঙ্গলের কোনো কোনো অংশে কিছু সময়ের জন্য প্রাণের অনুকূল পরিবেশ ছিল, তবে তা ছিল ব্যতিক্রম।’’ কারণ, প্রাণের জন্য দরকারি প্রায় সব উপাদান থাকলেও, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান জল ছিল অস্থায়ী। কিউরিয়োসিটি ও ২০২১ সালে পার্সিভারেন্স রোভারও কার্বনেট শিলার প্রমাণ পেয়েছে মঙ্গলের শুকিয়ে যাওয়া হ্রদের আশপাশে।

গবেষণা বলছে, পৃথিবীতে কার্বনচক্রের একটি সুষম ঘূর্ণন রয়েছে—বায়ুমণ্ডলে থাকা কার্বন ডাই-অক্সাইড আগ্নেয়গিরির মাধ্যমে বের হয় আবার চুনাপাথরে আটকে যায়। কিন্তু মঙ্গলে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের হার কম হওয়ায় সেই চক্র বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে গ্রহটি ঠান্ডা, অনুর্বর ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে।

নতুন তথ্য অনুযায়ী, কোটি কোটি বছর আগে কিছু সময়ের জন্য মঙ্গলে পানি ছিল। তারপর প্রায় ১০ কোটির বেশি বছর ধরে মঙ্গল পরিণত হয়েছে এক বিশাল মরুভূমিতে। এমন দীর্ঘ প্রতিকূলতায় প্রাণ টিকে থাকা সম্ভব হয়নি।

তবে বিজ্ঞানীরা এখনো আশাবাদী। কাইট বলেন, মঙ্গলের গভীর ভূগর্ভে হয়তো এখনও পানি আছে, কিন্তু আমরা তা খুঁজে পাইনি। কার্বনেট জাতীয় শিলার আরও প্রমাণ পাওয়া গেলে এ নিয়ে স্পষ্ট ধারণা করা সম্ভব হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto