Trending

২০২৪-২৫ অর্থবছরে পোশাক রফতানি ৮.৮৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে

ইউরোপীয় বাজারে বাংলাদেশের আরএমজি রফতানি হয়েছে ১৯.৭১ বিলিয়ন ডলার। যা দেশে মোট আরএমজি রফতানির ৫০.১০ শতাংশ।

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বাংলাদেশ তৈরি পোশাক (আরএমজি) রফতানি খাতে ৮.৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে ৩৯.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত দেশের তৈরি পোশাকের দেশভিত্তিক রফতানি হিসাব অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এ খাতের সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে অবস্থান করছে। ইউরোপীয় বাজারে বাংলাদেশের আরএমজি রফতানি হয়েছে ১৯.৭১ বিলিয়ন ডলার। যা দেশে মোট আরএমজি রফতানির ৫০.১০ শতাংশ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হয়েছে ৭.৫৪ বিলিয়ন ডলার (১৯.১৮ শতাংশ)। কানাডা ও যুক্তরাজ্যে রফতানি হয়েছে যথাক্রমে ১.৩০ বিলিয়ন ডলার (৩.৩১ শতাংশ) এবং ৪.৩৫ বিলিয়ন ডলার (১১.০৫ শতাংশ)।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৯.১০ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৩.৭৯ শতাংশ এবং কানাডায় ১২.০৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যুক্তরাজ্যে রফতানিতে ৩.৬৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ইউরোপের মধ্যে জার্মানি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার, যেখানে রফতানি হয়েছে ৪.৯৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর রয়েছে স্পেন (৩.৪০ বিলিয়ন ডলার), ফ্রান্স (২.১৬ বিলিয়ন ডলার), নেদারল্যান্ডস (২.০৯ বিলিয়ন ডলার), পোল্যান্ড (১.৭০ বিলিয়ন ডলার), ইতালি (১.৫৪ বিলিয়ন ডলার) ও ডেনমার্ক (১.০৪ বিলিয়ন ডলার)।

কিছু ইউরোপীয় দেশে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যেমন নেদারল্যান্ডসে ২১.২১ শতাংশ, সুইডেনে ১৬.৪১ শতাংশ, পোল্যান্ডে ৯.৭৭ শতাংশ এবং জার্মানিতে ৯.৪৭ শতাংশ।

নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে বাংলাদেশের আরএমজি রফতানি ৫.৬১ শতাংশ বেড়ে ৬.৪৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা দেশের মোট রফতানির ১৬.৩৬ শতাংশ। এই বাজারে জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। তুরস্কে রফতানি ২৫.৬২ শতাংশ, ভারতে ১৭.৩৯ শতাংশ এবং জাপানে ৯.১৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের পোশাক রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

আরএমজি শিল্পে নিটওয়্যার খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.৭৩ শতাংশ এবং ওভেন খাতে ৭.৮২ শতাংশ।

শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাজারের চাহিদা ও বাস্তবতা দ্রুত বদলে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

ট্র্যাডিশনাল বাজারগুলোতে বাংলাদেশের রফতানি এখনো শক্ত অবস্থানে রয়েছে, যেখানে মোট পোশাক রফতানির প্রায় ৮৪ শতাংশই এই বাজার থেকে আসে। তবে, নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারের অংশীদারিত্ব এখনো তুলনামূলক কম, যা মাত্র ১৬ শতাংশ।

ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের (আইটিসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক পোশাক বাজারের আকার ছিল প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারের আকার ছিল প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে ৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব ধরে রেখেছে, যেখানে আরো বিস্তারের সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৪ সালে জাপানের মোট পোশাক আমদানির ৫.৫০ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার মোট আমদানির ১১.৫৩ শতাংশ এসেছে বাংলাদেশ থেকে। যা ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক সম্ভাবনা নির্দেশ করে।

বাসস’র সাথে আলাপকালে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক বাজারে টিকে থাকতে হলে নতুন বাজার ও নতুন পণ্যের দিকে মনোযোগী হতে হবে।

তিনি বলেন, ‘নতুন বাজারে প্রবেশ এবং উদ্ভাবন শুধু কৌশলগত বিষয় নয়, এটি বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একটি অপরিহার্যতা। আমাদের এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাজার বৈচিত্র্য এবং সম্প্রসারণের দিকে এগোতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান বাজারে প্রতিযোগিতা শুধু দামের ওপর নির্ভর করে না। প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে শুধু দাম যথেষ্ট নয়। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর তুলনায় নিজস্ব সুবিধা তৈরি করতে হবে, যাতে ক্রেতারা বারবার বাংলাদেশেই ফিরে আসে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto