কুইপার বেল্টে রহস্যময় বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের সুবারু টেলিস্কোপ ব্যবহার করে কুইপার বেল্টে (আমাদের সৌরজগতে থাকা নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে থাকা অঞ্চল) রহস্যময় বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বরফযুক্ত রহস্যময় বস্তুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘২০২৩ কেকিউ১৪’, ডাকনাম অ্যামোনাইট। নতুন এই বস্তু নেপচুনের অনেক দূরে অবস্থিত হলেও সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। নতুন বস্তুটিকে গ্রহ বা বামন গ্রহ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার বদলে সেডনয়েড (ট্রান্স-নেপচুনিয়ান বস্তু) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, ‘ফরমেশন অব দ্য আউটার সোলার সিস্টেম: অ্যান আইস লিগেসি’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে হাওয়াইয়ের সুবারু টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বস্তুটির খোঁজ মিলেছে। এটি প্রথম শনাক্ত করা হয় ২০২৩ সালে। এরপর ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বস্তুটির অবস্থান নিশ্চিত হন বিজ্ঞানীরা। বস্তুটির ব্যাস ৩০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার বলে অনুমান করা হচ্ছে। রহস্যময় বস্তুটি সম্ভবত বরফ, শিলা ও জৈব যৌগ দিয়ে গঠিত। এটি ভিন্ন এক কক্ষপথে অবস্থান করছে। বস্তুটি সূর্যের সবচেয়ে কাছে আসার অবস্থায় পেরিহেলিয়ন ৬৬টি জ্যোতির্বিদ্যা ইউনিট আর সবচেয়ে দূরে থাকার অবস্থার অ্যাফিলিয়ন হলো ২৫২ জ্যোতির্বিদ্যা ইউনিট। কমপক্ষে সাড়ে চার শ কোটি বছর একটি স্থিতিশীল কক্ষপথ অনুসরণ করেছে বস্তুটি।
ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি অব জাপানের বিজ্ঞানী ইউকুন হুয়াং জানিয়েছেন, ২০২৩ কেকিউ১৪ বস্তুটির বর্তমান কক্ষপথ অন্য তিনটি সেডনয়েডের কক্ষপথের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। নতুন বস্তুটি প্ল্যানেট নাইন হওয়ার সম্ভাবনা কম। বস্তুটি হয়তো সৌরজগতে একসময় গ্রহ হিসেবে টিকে ছিল, পরবর্তী সময়ে তা সৌরজগতের বাইরে চলে যায়। অস্বাভাবিক কক্ষপথ রয়েছে সেখানে।
বিজ্ঞানী ফুমি ইয়োশিদা জানান, নেপচুনের কারণে সেই এলাকার ট্রান্স-নেপচুনিয়ান বস্তুও সেডনয়েড বস্তুর কক্ষপথের আকৃতি দিতে পারে। সেখান থেকে অ্যামোনাইট বেশ দূরে অবস্থিত। ২০২৩ কেকিউ১৪ বন্তুটি যেখানে পাওয়া গেছে সেখানে নেপচুনের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব খুব কম। ২০২৩ কেকিউ ১৪ তৈরি হওয়ার সময় অসাধারণ কিছু হয়তো সেখানে ঘটেছিল। বস্তুটিকে প্রাথমিক সৌরজগতের একটি জীবাশ্ম হিসেবে বিবেচনা করা যায়।