Bangladesh

ফার্মাসিস্টের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রোগীরা

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে গড়ে প্রতিদিন সাত হাজার মানুষ ওষুধ নিয়ে থাকে। এই ফার্মেসিতে নিয়োগ পাওয়া চারজনই ডিপ্লোমাধারী। পদ রাখা হয়নি গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের। একই অবস্থা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালের।

অথচ ২০১৯ সালে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, সরকারি হাসপাতালের ফার্মেসিতে একজন ও অন্তর্বিভাগে প্রতি ৫০ শয্যার বিপরীতে একজন গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে। কিন্তু গত চার বছরেও এই নিয়ম বাস্তবায়ন করা হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ওষুধশিল্প বিশ্বমানের হলেও ফার্মেসি সেবা খুবই নিম্নমানের। দক্ষ ও গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টের অভাবে, ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার, ভুল ওষুধের ব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়েছে।

এতে একদিকে রোগীরা শারীরিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে কার্যকারিতা হারাচ্ছে ওষুধের। বেশির ভাগ ফার্মেসিতে মানা হচ্ছে না তাপমাত্রা অনুযায়ী ওষুধ সংরক্ষণ।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস-২০২৩। এ বছর ওয়ার্ল্ড ফার্মাসিস্ট সোসাইটির উদ্যোগে দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমৃদ্ধিতে ফার্মেসি’।

এই প্রতিপাদ্যে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসেবার ওপর ফার্মাসিস্টের ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। পেশাজীবী ফার্মাসিস্টদের মধ্যে সংহতি ও একাত্মতা জোরদার করার কথা বলা হয়েছে। দিবসটি উদযাপনে সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

রোগীর ওষুধবিষয়ক জিজ্ঞাসা যেমন, ডোজ বা মাত্রা, মাত্রার সমন্বয়, ওষুধ সেবনের নিয়ম, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ যাবতীয় নির্দেশ রোগীকে দিয়ে থাকেন একজন ফার্মাসিস্ট। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর চার থেকে সাড়ে চার হাজার গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট বের হচ্ছেন।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে নিবন্ধিত ফার্মেসি রয়েছে প্রায় দুই লাখ। এর বাইরে অনিবন্ধিত ফার্মেসি আছে আরো দুই লাখ।

ফার্মাসি কাউন্সিলের তথ্য মতে, দেশে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টের সংখ্যা ১৮ হাজার ৯২১। ডিপ্লোমাধারী ফার্মাসিস্ট পাঁচ হাজার ৭৩১ এবং ফার্মেসি টেকনিশিয়ান রয়েছেন এক লাখ ৪৮ হাজার ২০২ জন।

ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস ফর হেলথের বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের কারিগরি উপদেষ্টা রাইয়ান আমজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে উন্নত দেশের স্ট্যান্ডার্ড হলো, ১০ হাজার মানুষের জন্য ২.৫টি ফার্মেসি থাকবে। বাংলাদেশে ১০ হাজার মানুষের জন্য ১৯টির বেশি ফার্মেসি রয়েছে। আইন অনুযায়ী প্রতিটি ফার্মেসি একজন পরিদর্শক দুইবার পরিদর্শন করবেন। কিন্তু আমাদের ওষুধ প্রশাসনে মাত্র কয়েকজন পরিদর্শক আছেন। যে কারণে এই ফার্মেসিগুলোতে তদারকি হয় না।  আমরা যদি এই ফার্মেসিগুলো কমিয়ে আনতে পারি, তবে তা ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে।’

বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. আসিফ হাসান বলেন, ‘আমরা এখনো হাসপাতালগুলোতে  গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট চালু করতে পারিনি। একই সঙ্গে খুচরা ফার্মেসি বা কমিউনিটিতে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে আমাদের রোগীরা ফার্মেসি সেবা থেকে বঞ্চিত। তারা ওষুধের ব্যবহারবিধি জানতে পারছে না। সেটি একেবারে নেই বললেই চলে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘দিনে ২০ লাখ মানুষ ওষুধ কেনে ফার্মেসি দোকানদারের কাছ থেকে; যিনি তিন মাসের কোর্স করে ফার্মেসি চালাচ্ছেন। এর বাইরে কম শিক্ষিত লোকও ওষুধের দোকান পরিচালনা করছেন। তাঁদের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিত গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের হাতে দোকান তত্ত্বাবধানে থাকা নিরাপদ।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d online