Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

একতরফা সিদ্ধান্তে লাভবান বাংলাদেশ

বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের শুল্ক পুনঃনির্ধারণ ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কমায় স্বস্তি, তবে রফতানির ভবিষ্যৎ এখনো নির্ভর করছে চীনের ওপর : সেলিম রায়হান ষ নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট কী নিয়ে, সেটি স্পষ্ট হওয়া দরকার : কামাল আহমেদ ষ মৌলিক সমস্যার সমাধান করতে হবে : ড. জাহিদ হোসেন

বাংলাদেশসহ ৯০টির বেশি দেশের জন্য নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পণ্যের ওপর ১০ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন। অধিকাংশ দেশেরই ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও শুল্ক আলোচনার জন্য বাংলাদেশের সরকারি প্রতিনিধিদল এখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলে আছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল থেকে এই প্রতিনিধিদলকে প্রশংসায় ভাসানো হচ্ছে। অথচ ট্রাম্পের শুল্ক আদেশে এই প্রতিনিধিদলের কোনো সাফল্য নেই। এটি ট্রাম্পের একটি একতরফা সিদ্ধান্ত। যাতে বাংলাদেশসহ অধিকাংশ দেশ লাভবান হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য আলাদা কোনো আদেশ নয়; এই আদেশ অধিকাংশ দেশের জন্যই সমান। মেক্সিকো-কানাডা বাদে অন্য কোনো দেশের জন্য পৃথক কিছু নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামানো রফতানি খাতের জন্য একটি স্বাগতযোগ্য অগ্রগতি। যদিও আত্মতুষ্টির কোনো জায়গা নেই; বরং এটি বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ এবং একই সঙ্গে সতর্কবার্তা, যাতে একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ, প্রতিযোগিতামূলক ও সহনশীল বাণিজ্য কৌশল গড়ে তোলা যায়। তবে বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিবেশে একটি উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা এখনো রয়ে গেছেÑ চীনের ওপর পাল্টা শুল্কহার এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিশ্বব্যাপী উৎপাদন কাঠামোয় চীনের মুখ্য ভূমিকা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন রফতানি খাতে প্রতিযোগিতার কারণে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের জন্য কী ধরনের শুল্ক নির্ধারণ করে, সেটি আগামী দিনের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবাহ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

একই সঙ্গে যদিও এই শুল্ক হ্রাস স্বল্পমেয়াদে স্বস্তি এনেছে, তবে এটি একটি প্রশ্নও উত্থাপন করেÑ বাংলাদেশ এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কী দিয়েছে? কিছু প্রতিশ্রুতি, যেমনÑ গম, তুলা ও বিমান আমদানির বিষয়টি জনসমক্ষে এসেছে। তবে অনুমান করা যায়, আরো কিছু সংবেদনশীল প্রতিশ্রুতি গোপনীয়তা চুক্তির আওতায় দেয়া হয়েছে, যা নিকট ভবিষ্যতে প্রকাশ পাবে না। এটি বাংলাদেশের বাণিজ্য কূটনীতিতে আরো স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তাকে সামনে নিয়ে আসে বলে উল্লেখ করেন ড. সেলিম রায়হান।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্টের (এনডিএ) কথা বলা হচ্ছে সেটি আসলে কী? বাণিজ্য আলোচনার সময়ে দরকষাকষির কোনো তথ্য প্রকাশ না করার শর্ত, নাকি কোনো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে কোনো দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি?

তিনি বলেন, দর-কষাকষির তথ্য আলোচনার সময়ে গোপন রাখার শর্ত একটি স্বাভাবিক ব্যাপার, যাতে প্রতিদ্বন্দ্বীরা কোনো সুযোগ নিতে না পারে। (এ রকম এনডিএ চুক্তি পেশাগত অনেক কাজের জন্য আমাকেও করতে হয়। কাজ হয়ে যাওয়ার পর তার বিস্তারিত প্রকাশে আর কোনো বাধা থাকে না।) কিন্তু বিষয়টি যদি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কোনো বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি শর্ত হয় যেমনটি ছিল ভারত-বাংলাদেশ ২৫ বছরের মৈত্রী চুক্তি, তাহলে সেটি অবশ্যই চিন্তার বিষয়। সুতরাং, নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট কী নিয়ে, সেটি স্পষ্ট হওয়া দরকার।

সূত্র মতে, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা হয়েছে। যদিও আগে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। এখন নতুন করে আরো ২০ শতাংশ শুল্ক যোগ হতে যাচ্ছে এর সঙ্গে। আগে বলা হয়েছিলÑ ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি না হলে শুল্ক কার্যকর হবে। কিন্তু এখন ৯০টির বেশি দেশের জন্য নতুন ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আগামী সাত দিনের মধ্যে চালু হবে। কিন্তু এখানে আবার বিশেষ কিছু নিয়ম রাখা হয়েছে। কিছু দেশের ক্ষেত্রে নতুন শুল্কহার কার্যকর হওয়ার সময়সূচি বদলেছে। তা হলোÑ আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে যেসব পণ্য জাহাজে তোলা হবে অথবা ইতোমধ্যে পথে আছে, সেগুলো আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালে নতুন শুল্ক তাদের ওপর প্রযোজ্য হবে না। এদিকে কানাডার ওপর শুল্ক হার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। এই দফায় সবচেয়ে বেশি, ৪১ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সিরিয়ার ওপর। এছাড়া মেক্সিকোর সঙ্গে আগের বাণিজ্যচুক্তিটি আরো ৯০ দিনের জন্য বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চুক্তি করতে পেরেছে, তাদের ওপর তুলনামূলক কম শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই তালিকায় থাকা দেশগুলো হলোÑ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন। এদের ওপর আরোপিত শুল্ক হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে। এদিকে, বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের জন্য দেশের ভেতরে আইনি বাধার মুখেও পড়তে হয়েছে ট্রাম্পকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানিকারক পাঁচটি ক্ষুদ্র ব্যবসার পক্ষে মামলা দায়ের করেছিল রাজনৈতিক সংস্থা লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার। ওই মামলা ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত ‘লিবারেশন ডে’ ট্যারিফের বিরুদ্ধে প্রথম বড় ধরনের কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ। গত মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড রায় দেয়, যে জরুরি আইনের অজুহাত দেখিয়ে হোয়াইট হাউজ এই শুল্ক আরোপ করেছে, সেই আইন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে একচেটিয়াভাবে বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে শুল্ক বসানোর এখতিয়ার দেয় না। কারণ এই শুল্ক ভোক্তাদের ওপর পড়বে, তাদেরই বহন করতে হবে। তবে এক দিন পরই এই রায় বাতিল হয়ে যায়। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের এই চাপের কারণে ট্রাম্প তার আগের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হন। অবশ্য ট্রাম্পসহ যুক্তরাষ্ট্রের মূল চার্গেট চীন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমদানির ওপর নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করেছেন, যা কোনো ক্ষেত্রে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। আলোচনার অংশ হিসেবে দেশগুলোকে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে মার্কিন পণ্য কেনার স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে। প্রেস উইং জানায়, বিষয়বস্তুর কারণে আলোচনার প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ ছিল। যদিও বাংলাদেশের ট্যারিফ ছাড় পাওয়ার সঙ্গে শুধু মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কহার কমানোর বিষয়টিই যুক্ত ছিল না; বরং অশুল্ক বাধা, বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা ও নিরাপত্তার মতো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের বিভিন্ন বিষয় জড়িত ছিল। প্রেসডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে এটি স্পষ্ট হয়েছে, প্রতিটি দেশের শুল্কহারের ক্ষেত্রে এই সবগুলো বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতির গভীরতা প্রতিফলিত হবে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ২০ শতাংশ শুল্ক হার অর্জন করেছেÑ যা শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো পোশাক খাতের প্রধান প্রতিযোগীদের সমতুল্য, যারা ১৯ থেকে ২০ শতাংশ শুল্কহার পেয়েছে। ফলে পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের তুলনামূলক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান এখনো প্রভাবিত হয়নি বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কহার সংক্রান্ত দুটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এই আদেশ অনুযায়ী, বিশ্বের বহু দেশ ও অঞ্চলের পণ্যের ওপর এ শুল্ক কার্যকর হবে। প্রথম আদেশে ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নীতির আওতায় ৬৯টি দেশের ওপর শুল্ক বসানো হয়। এই আদেশ অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের মতো প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ভারত ও তাইওয়ানের মতো কিছু দেশের পণ্যে তুলনামূলক উচ্চ হারে যথাক্রমেÑ ২৫ ও ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি এখনো অমীমাংসিত থাকায় এ হার নির্ধারণ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় আদেশে কানাডার কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, কানাডা সীমান্ত দিয়ে ফেন্টানিলসহ অবৈধ মাদকের প্রবাহ ঠেকাতে কার্যকর সহযোগিতা করছে না। ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ন্যায্যতার অভাব রয়েছে। তাই আমি কিছু নির্দিষ্ট দেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করাকে জরুরি ও উপযুক্ত মনে করছি। তবে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তির আওতায় যেসব পণ্য অগ্রাধিকার পায়, সেগুলো এই শুল্কের আওতায় পড়বে না। কানাডার শুল্কহার বাড়ানোর বিষয়েও হোয়াইট হাউজ একটি তথ্যপত্র প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, উত্তর সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবেশ রোধে কানাডা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি; বরং প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এ কারণে ট্রাম্প কানাডার পণ্যে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করেছেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো দুই দেশের আগের বাণিজ্যচুক্তিটি আরো ৯০ দিনের জন্য বহাল রাখা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বিষয়ে বলেন, আমরা একে অপরকে আরো ভালোভাবে জানছি ও বুঝতে পারছি। মেক্সিকোর সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি অন্য অনেক দেশের থেকে আলাদা, কারণ আমাদের মধ্যে সীমান্ত রয়েছে, যেখানে অনেক সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সম্ভাবনাও রয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, মেক্সিকো আগামী ৯০ দিন আগের মতোই যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ করবে। এর মধ্যে রয়েছেÑ ফেন্টানিলে ২৫ শতাংশ শুল্ক, গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও কপারের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক। এছাড়া, মেক্সিকো তাদের সব ধরনের অশুল্ক বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা (যেমনÑ কাগজপত্রের জটিলতা, আমদানি সীমাবদ্ধতা) তুলে নেয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প আরো জানান, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে দুই দেশ একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যচুক্তির জন্য আলোচনা চালিয়ে যাবে। প্রয়োজনে সময় আরো বাড়ানো হতে পারে।

হোয়াইট হাউজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ট্রাম্পের নতুন শুল্কহার এরকমÑ ১০ শতাংশ : ব্রাজিল, ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ, যুক্তরাজ্য ও নির্বাহী আদেশে তালিকাভুক্ত নয় এমন অন্যান্য সব দেশ। ১৫ শতাংশ : আফগানিস্তান, অ্যাঙ্গোলা, বলিভিয়া, বতসোয়ানা, ক্যামেরুন, চাঁদ, কোস্টারিকা, আইভরি কোস্ট, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো, ইকুয়েডর, নিরক্ষীয় গিনি, ফিজি, ঘানা, গায়ানা, আইসল্যান্ড, ইসরাইল, জাপান, জর্ডান, লেসোথো, লিচেনস্টাইন, মাদাগাস্কার, মালাউই, মরিশাস, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, নাউরু, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া, উত্তর ম্যাসেডোনিয়া, নরওয়ে, পাপুয়া নিউগিনি, দক্ষিণ কোরিয়া, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, তুরস্ক, উগান্ডা, ভানুয়াতু, ভেনিজুয়েলা, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে। ১৮ শতাংশ : নিকারাগুয়া, ১৯ শতাংশ : কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও ফিলিপাইন। ২০ শতাংশ : বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান ও ভিয়েতনাম। ২৫ শতাংশ : ব্রুনাই, ভারত, কাজাখস্তান, মলদোভা ও তিউনিসিয়া। ৩০ শতাংশ : আলজেরিয়া, বসনিয়া এবং হার্জেগোভিনা, লিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৫ শতাংশ : ইরাক ও সার্বিয়া, ৩৯ শতাংশ : সুইজারল্যান্ড, ৪০ শতাংশ : লাওস ও মিয়ানমার এবং ৪১ শতাংশ : সিরিয়া।
মার্কিন শুল্কারোপ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেছেন, আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ মোটামুটি স্বাভাবিক অবস্থানেই রয়েছে। ফলে আমরা ধীরে ধীরে এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে পারব। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বায়ারদের (ক্রেতা) এখন আগের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেশি শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এতে তাদের ক্রয়ক্ষমতা এবং স্থানীয় ভোক্তাদের ভোগব্যয় কমে যেতে পারে। ফলে প্রাথমিকভাবে আমাদের রফতানিতে কিছুটা ধাক্কা লাগতে পারে এবং মূল্য নিয়ে চাপ তৈরি হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে আবার এই সমস্যা কাটিয়েও উঠতে পারবে, কেননা প্রতিদ্বন্দ্বী দেশেগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে আমরা বলতে গেলে স্বাভাবিক অবস্থানেই আছি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবীদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, ট্যারিফ কমলেই লাভ হবে না। আমাদের আমাদের কিছু মৌলিক সমস্যা আছে, সেগুলোর সমাধান করতে হবে। যেমনÑ ধরুন গ্যাসের সঙ্কটে অনেক কারখানাই ঠিকমতো চলতে পারে না। ফলে, নির্দিষ্ট সময়ে ডেলিভারি দেয়া যায় না। রাস্তাঘাটে যদি অস্থিরতা বা অশান্তি থাকে, তাহলে পণ্যবাহী ট্রাক ঠিকমতো চলতে পারে না। অনেক সময় এয়ার ফ্রেইট করতে বাধ্য হতে হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যা। কারণ মালামাল চট্টগ্রামে সময়মতো পৌঁছে না। এগুলো হচ্ছে সবচেয়ে মৌলিক চ্যালেঞ্জ। ড. জাহিদ হোসেন বলেন, অনেক সময় কনটেইনার বন্দরে পড়ে থাকে। পড়ে থাকতে থাকতে বিলম্ব হয়। ডকুমেন্ট ক্লিয়ারেন্স (শুল্ক ফাঁকি বা দেরি) হয় না। এনবিআরের সঙ্গে প্রক্রিয়াগত জটিলতাও আছে। এসব কারণে অপ্রয়োজনীয় সময় নষ্ট হয়, ফলে লিড টাইম বেড়ে যায়। অর্থাৎÑ পণ্য পৌঁছাতে সময় লাগে বেশি। এ ধরনের সাপ্লাই চেইন সমস্যা যদি আমরা নিজেরা ঠিক করতে না পারি, তাহলে দায়টা আমাদেরই। ট্যারিফ কমার কারণে যে নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে মার্কেটে, সেটি তখন কাজে লাগানো কঠিন হয়ে পড়বে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto