ব্র্যাক-সুজনের রহস্যজনক জরিপ

সংসদে আ.লীগের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে ‘পিআর’ আনতে চাচ্ছে ১২৬১৭০৯০০ ভোটারের মধ্যে ১৩৭৩ জন ভোটারের মতামতের জরিপ কি দেশের জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটায়? জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ব্যক্তি ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্তে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছেন, তিনিই জরিপ করছেনÑ এটা কতটুকু নৈতিক
ড. বদিউল আলম মজুমদার দেশের সুশীল সমাজের প্রভাবশালী প্রতিনিধি ও এনজিওকর্মী। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নামে এনজিওর মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী আইন ও ভোট-সংক্রান্ত গবেষণা করেন। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে প্রধান করে ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হয়। অতঃপর রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে তাকে সদস্য করা হয়।
বদিউল আলম মজুমদার ইতোমধ্যেই নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাবনা জমা দিয়েছেন। সংস্কার নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে জাতীয় সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ধারাবাহিক সংলাপ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে দেখা যায়, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় প্রথম দিকে সংস্কার ইস্যুতে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়টি ছিল না। কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়ে যে চিঠি দিয়েছে তাতেও কোনো দল পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি করেনি। হঠাৎ জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি (জামায়াতের এক্সটেনশন) পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি তোলে। শুরু হয় পিআর পদ্ধতি নির্বাচনের দাবি নিয়ে আলোচনা। একই দিন ড. বদিউল আলম মজুমদারের সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নির্বাচন নিয়ে একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। সারা দেশে এক হাজার ৩৭৩ জনের মতামত নিয়ে পরিচালিত জরিপের ফলাফলে দাবি করা হয়Ñ ৭১ শতাংশ মানুষ চায় উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে আসন বণ্টন। প্রশ্ন হচ্ছে, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দায়িত্বরত ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান নৈতিকভাবে নির্বাচন-সংক্রান্ত এমন জরিপ করতে পারে কি-না? তাহলে কী আগামীর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদে সংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতেই সরকারের ভেতরে থেকেই পিআর পদ্ধতি নির্বাচনের দিকে দেশকে ঠেলে দিতে নীলনকশা করা হচ্ছে? এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক চলছে। সরকারের ভেতরে থেকে একই ব্যক্তি খেলার মাঠে এক পক্ষের খেলোয়াড় হয়ে রেফারিং করতে পারেন কী? শুধু বদিউল আলম মজুমদারই নন, আরো কয়েকজন এনজিওকর্মী ও বিদেশি নাগরিক এমন ব্যক্তিদের হায়ারে এনে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে।
দেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা এবং মনন সম্পর্কে ধারণা না থাকা এই ব্যক্তিদের কার স্বার্থরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত মেঘনাদবধ কাব্যে লিখেছেনÑ ‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে, জানিনু কেমনে আসি লক্ষ্মণ পশিল রক্ষঃপুরে!’ অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতার মেয়াদ এক বছর অতিক্রমের পর মানুষ বুঝতে শুরু করল এনজিও ও বিদেশ থেকে হায়ারে এনে প্রশাসনযন্ত্রে ভাড়াটেদের কেন বসানো হয়েছে? জুলাই-২০২৪ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী ১৪শ ছাত্র-জনতা প্রাণ দিয়েছে। হাজারো মানুষ খুন করে হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। অথচ আন্দোলনের সঙ্গে দূরতম সম্পর্ক ছিল না এমন এনজিওকর্তা এবং বিদেশে ছিলেন এমন কয়েক জনকে সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে বসানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আগামী রমজানের আগে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছেন। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মানুষ যখন ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে তখন বিদেশ থেকে ধার করা পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের ইস্যু নিয়ে এত হৈচৈ কেন? হাসিনা পালালেও দেশে এখনো আওয়ামী লীগের ভোটার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ রয়ে গেছে। সুজন কী আওয়ামী লীগকে আগামী সংসদে নিতে পিআর পদ্ধতির ভোটের পক্ষে উকালতি করছে? প্রায় সাড়ে ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে মাত্র এক হাজার ৩৭৩ জন ভোটারের মতামত নিয়ে জরিপের ফলাফল জাতির উপর চাপিয়ে দেয়ার নেপথ্যের রহস্য কী?
সুজনের জরিপের ফলাফলে দাবি করা হয়েছেÑ তাদের জরিপে অংশগ্রহণ করেছেন সারা দেশের এক হাজার ৩৭৩ জন। যার মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৩৩ জন, নারী ৩৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের পাঁচজন। জরিপটি মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়। এতে মোট ৪০টি প্রশ্ন রাখা হয়, যার উত্তর দেন অংশগ্রহণকারীরা। জরিপ চলাকালে ১৫টি নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ তাদের মতামত জানান। জাতীয় সংসদ (নিম্নকক্ষ) ও সিনেট (উচ্চকক্ষ) নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে মত দিয়েছেন জরিপে অংশ নেয়া ৬৯ শতাংশ মানুষ। আনুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে ৭১ শতাংশ মানুষ। নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জন। জরিপে মতামত নেয়া হয় এক হাজর ৩৭৩ জনের। শতকরা হিসাবে দেখা যায়, দেশের মোট ভোটারের .০০১ শতাংশ ভোটারের মতামত নিয়ে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছেÑ এটি কী জনগণের মতের প্রতিফলন? নাকি আওয়ামী লীগকে আগামী সংসদে পুনর্বাসনের লক্ষে ইঙ্গ-মার্কিন অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে এমন জরিপ? শুধু সুজন নয়, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) তিনটি এবং সাউথ এশিয়ান মডেল নেটওয়ার্কিং অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) নির্বাচন নিয়ে একটি জরিপ করেছে। কাকতালীয়ভাবে এসব জরিপে বিএনপি ও জামায়াতের জনসমর্থন কাছাকাছি দেখানো হয়। মূলত এসব প্রতিষ্ঠান বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলের ১৫ বছর নানাভাবে আওয়ামী লীগের সহায়তা পেয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি সহায়তায় ফুলেফেঁপে উঠেছে। ফলে তারা এখন আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে এমন কা-কারখানা করছেন পরিকল্পিতভাবে। বিদেশিদের অর্থে এসব জরিপের নেপথ্যের রহস্য কী বোঝা সত্যিই দুষ্কর? এর আগে ১১ আগস্ট প্রকাশিত ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ‘পালস সার্ভে-৩
ফলাফল নিয়ে অনেকেই হিন্দি প্রবাদ ‘আস্তে কন, ঘোড়া ভি হাসবো’ অবস্থা। ব্র্যাকের জরিপে দাবি করা হয়েছেÑ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন এই প্রশ্নে ১২ শতাংশ বিএনপি, ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ জামায়াতে ইসলামী এবং ২ দশমিক ৮০ শতাংশ মানুষ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভোট দেয়ার কথা বলেছেন। তাদের দাবি আট মাস আগে গত অক্টোবর মাসে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ বিএনপি, ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ জামায়াত ও ২ শতাংশ মানুষ এনসিপিকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। এ জরিপের ফলাফল দেখে জামায়াতের নেতারাও কী হাসেননি?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) জরিপ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকায় কর্মরত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় ভারপ্রাপ্ত দূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠকÑ সব কিছুই সূত্রে গাঁথা। বিএনপিকে ঠেকাতে আগামী সংসদে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্র তৈরির চেষ্টা চলছে। ইঙ্গ-মার্কিন শক্তি কি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে বাধ্য করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়? আর তাদের হয়ে এনজিওগুলো এমন জরিপের নামে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে?
সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ইংরেজিতে প্রপোরশোনাল রিপ্রেজেন্টেটিভ (পিআর) নির্বাচন হচ্ছেÑ নির্বাচনে কোনো দলের একক প্রার্থী থাকবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতীকে ভোটাররা ভোট দেবেন। নির্বাচনের পর ভোটের আনুপাতিক হারে আসন বণ্ঠন হবে। এতে ভোটাররা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেয়ার সুযোগ হারাবেন। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো জনপ্রতিনিধি মনোনীত করবে। কোটি কোটি টাকায় এমপি পদ বিক্রি করবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মূলত আওয়ামী লীগকে সংসদে ফেরাতে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি ‘আমদানি’ করা হয়। কারণ গত ৩০ বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেনÑ বিএনপি ৩৩ থেকে ৪০ শতাংশ এবং আওয়ামী লীগ ৩৩ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে থাকে। ফলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটলেও দেশে এখনো কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ভোটার রয়ে গেছে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে ২০ শতাংশ ভোটার ভোট দিলে এমনিতেই ৬০টি আসন আওয়ামী লীগ পাবে। এ ছাড়াও সংরক্ষিত আসন যোগ হবে কমপক্ষে ১০টি। ফলে আওয়ামী লীগ ৭০ আসন পাবে। আওয়ামী লীগকে সংসদে নিতেই এ ধরনের পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি হঠাৎ উঠেছে এবং সুজন, ব্র্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এ নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। আবার অনেকেই অবাক হচ্ছেন, আওয়ামী লীগের বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে কেন? নেপথ্যের রহস্য কী? মূলত ১৯৪২ সালে জন্ম নেয়ার পর থেকে জামায়াত সবসময় জনমতের বিরুদ্ধে রাজনীতি করেছে। সাতচল্লিশে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার সময় জামায়াত ভারতের পক্ষে ছিল। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। স্বৈরশাসক এরশাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে ’৮৬ সালে জনমনের বিরুদ্ধে গিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। নব্বই-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে বিএনপির বিরুদ্ধে মাঠে আন্দোলন করেছে। ২০০১ সালে আবার বিএনপির অনুকম্পায় মন্ত্রিত্ব নিয়েছে। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, জামায়াত সবসময় ¯্রােতের বিপরীতে ছিল। আবার নাম ‘জামায়াতে ইসলামী’ হলেও হেফাজতে ইসলাম এবং দেশের অন্য ইসলামী দলগুলো জাময়াতকে কখনোই ইসলামী দল মনে করে না। এমনকি পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে যে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে ঐক্য গড়েছে সে দলটির নেতাও বলেছেন, জামায়াত যার সঙ্গে যাবে সে দল ধ্বংস হয়ে যাবে। আর নতুন দল এবি পার্টি জামায়াতের এক্সেটেনশন। সাবেক শিবির নেতাকর্মীরা মিলে দলটি গড়েছে। চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন বিগত ১৫ বছর হাসিনা সরকারের হালুয়া-রুটি খেয়ে ফুলেফেঁপে উঠেছে। বিগত ৩০ বছরের নির্বাচনে সংসদে তাদের কোনো প্রতিনিধি ছিল না এবং ভোটের হিসেবেও একেবারেই কম। আর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখে শেখ হাসিনার বিচার ও ভারত-বিরোধিতা করলেও জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন দাবিতে জামায়াতের সঙ্গে দলটির মতো মিল রয়েছে। এ ছাড়াও পিআর পদ্ধতি নির্বাচনে দাবির নীল-নকশার নেপথ্যে ভারতের সাউথ ব্লক রয়েছে, এমন তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচন নিয়ে জামায়াত-এনসিপির দাবি নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক এম এ আজিজ বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতির নির্বাচন যদি হয় তাহলে আওয়ামী লীগ লাভবান হবে। আওয়ামী লীগ ফিরে এলে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে বিপদ বাড়বে। আর আওয়ামী লীগ ফিরে এলে প্রথমে জামায়াত ও এনসিপিকে শায়েস্তা করবে। তারপরও ওই দল দু’টি কেন পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি করছে তা রীতিমতো গবেষণার বিষয়। এ দাবির নেপথ্যে কিছু না কিছু রয়েছে যা দেশবাসী জানে না।
এদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এ কমিশনের মেয়াদ আরো এক মাস বাড়ানোর দিনই কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদারের এনজিও পিআর পদ্ধতির পক্ষে জনমত এমন বার্তা দেশবাসীর সামনে হাজির করলেন। তাহলে কি ‘জাতীয় সনদে’ পিআর পদ্ধতির নির্বাচন সংযোজনের চেষ্টা হবে? কারণ এনসিপি নেতারা ১১ আগস্ট মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় ভারপ্রাপ্ত দূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সাথে বৈঠক করেন। পরের দিন ১২ আগস্ট জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় ভারপ্রাপ্ত দূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সাথে বৈঠক করেন। মার্কিন ভারপ্রাপ্ত দূত ইসলামী আন্দোলনের সাথেও বৈঠক করেন। এর আগে জামায়াত নেতারাও বৈঠক করেছেন। আবার জামায়াতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মডারেট ইসলামী দলের সার্টিফিকেট দিয়েছে। এদিকে গতকাল এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অনেকটা হুমকির সুরে বলেছেন, ‘জুলাই ঘোষণায় ছাড় দিলেও জুলাই সনদে ছাড় দেয়া হবে না। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যেতে পারবে না।’