Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ হাতবদল আওয়ামী লীগ থেকে জামায়াতলীগ

পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে সব দফতরই দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল আওয়ামী লীগ। চব্বিশে ৫ আগস্ট সেই সরকারের পতন হলেও চিত্র বদলায়নি শিক্ষাখাতের। শুধুই যেন হাতবদল হয়েছে। আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর বিভিন্ন বিভাগ-প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ উঠেছে জামায়াতলীগের হাতে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ আমলে তাদের সঙ্গে মিলেমিশে ১৫ বছর যারা শিক্ষাখাতের মধু খেয়েছেন; এখন তারাই গিরগিটির মতো খোলস পাল্টে জামায়াত রূপ ধারণ করে শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরসহ প্রতিষ্ঠানগুলোতে জেঁকে বসেছেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব থেকে শুরু করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজেদের লোক বসিয়ে পুরো শিক্ষাখাতকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে জামায়াত। সরকার যখন নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তখন নির্বাচন পেছাতে মরিয়া জামায়াত সাধারণ শিক্ষকদের ভুল বুঝিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫ আগস্ট-পরবর্তী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একজন সিনিয়র সচিবের হাত ধরেই মূলত শিক্ষাখাতকে জামায়াতিকরণে পরিণত করার কার্যক্রম শুরু হয়। তার সময়ে মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন অধিদফতর, বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, প্রক্টর, প্রভোস্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জামায়াতপন্থিদের বেছে বেছে নিয়োগ দেয়া হয়। পরবর্তীতে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর, বোর্ড, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসহ মাদরাসা বিভাগের সব দফতর ও প্রতিষ্ঠানকে জামায়াতের আখড়ায় পরিণত করেছেন। গতকাল ১৪ আগস্ট তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন তাকে চুক্তিভিত্তিক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়ার লক্ষ্যে জামায়াত দৌড়ঝাঁপ করছে। এ লক্ষ্যে জামায়াতপন্থি ও সাবেক আওয়ামী সুবিধাভোগী নেতা দেলোয়ার হোসেন আজিজীর নেতৃত্বে সমাধান হওয়া ইস্যুতে শিক্ষক সমাবেশের নামে সাধারণ শিক্ষকদের মাঠে নামিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চায় জামায়াত। অথচ এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া মাওলানা দেলোয়ার হোসেন আজিজী পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ময়মনসিংহ কাতলাসেন কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল হয়েছেন। চাকরিতে যোগদান করেই হাসিনাকে খুশি করতে ছুটে গেছেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় শেখ মুজিবের কবরে। শেখ মুজিবের কবর জিয়ারতে শেখ হাসিনাকে আজীবন ক্ষমতায় রাখার জন্য আল্লাহর প্রতি ফরিয়াদ করে মোনাজাত পরিচালনা করেছেন নিজেই। যেকোনো কর্মসূচি পালন করলেই তার পেছনে ব্যানারে জ্বলজ্বল করত মুজিব-হাসিনার ঢাউস ছবি। আওয়ামী সুবিধাভোগী সেই মাওলানা দেলোয়ার হোসেন আজিজীই ৫ আগস্টের পর এখন খোলস পাল্টে ধারণ করেছেন জামায়াতি রূপ। জামায়াত এই নেতা এখন শিক্ষকদের সংগঠিত করে সমাধান হওয়া দাবির ইস্যুতে রাজপথে নেমে দলীয় অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। গত বুধবার এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ-প্রত্যাশী জোট নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় জমায়েত হয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন দেলোয়ার হোসেন আজিজীর নেতৃত্বে জামায়াতপন্থি শিক্ষকরা। শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিবের সাথে তাদের যে সাক্ষাৎকার হয়েছে সেখানে নেতৃত্বদান করেন জামায়াত-সমর্থিত শিক্ষক ফোরাম নামে ফেসবুক-সর্বস্ব সংগঠনের আহŸায়ক ময়মনসিংহের কাতলাসেন কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন আজিজী। অথচ যেসব দাবি নিয়ে তারা আন্দোলন করছেন সেই দাবি ইতোমধ্যেই শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা ও সাবেক শিক্ষা সচিবের সাথে আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব-ভাতা চিকিৎস-ভাতা ও বাড়িভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাবনা নিয়ে কাজ চলছে। এরই মধ্যে সাধারণ শিক্ষকদের ঢাল বানিয়ে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা চলছে। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা নিজেদের ভোল পাল্টে নানা অজুহাতে সরকারকে বিব্রত করা ও আগামী নির্বাচন বানচাল করার নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ করে চলেছে। যারা এসব অপকৌশল করছে তাদের অতীত পর্যালোচনা করলেই প্রমাণিত হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি যখন চলছে; তখন হঠাৎ করে জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের এ ধরনের কর্মসূচি নিয়ে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হয়েছে বিএনপিপন্থি ও অরাজনৈতিক অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের মধ্যে। তাদের আশঙ্কাÑ এই আন্দোলনে সাথে নির্বাচন পেছানোর দাবির যোগসূত্র থাকতে পারে। এসব সংগঠনের নেতারা বলেন, আগামী ফেব্রæয়ারির ঘোষিত জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে জামায়াত-এনসিপিসহ কয়েকটি দল। আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ ১৪ আগস্ট শেষ হয়েছে এবং তাকে চুক্তিভিত্তিক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য জামায়াত নানাভাবে চেষ্টা ও তৎপরতা চালাচ্ছে, সে জন্য শিক্ষক সমাবেশের নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চায় জামায়াত। এছাড়া নির্বাচন পেছাতে শিক্ষকদের দিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিরও অপচেষ্টা হিসেবে দেখছেন অনেকে।

মাদরাসা শিক্ষার বিভিন্ন দফতর ও প্রতিষ্ঠান দখলের তথ্য জানিয়ে জামায়াতের এসব দখলের বিরুদ্ধে থাকা শিক্ষকরা বলেন, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর ও মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটÑ এসব দফতরসমূহ দেশের আলিয়া মাদরাসা, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে থাকে। কিন্তু চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পরে উল্লিখিত দফতরসমূহ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের দ্বারা দখল হয়ে আছে এবং তারা নিজেদের মতাদর্শ বস্তবায়নের জন্য মাদরাসা শিক্ষার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ভুল আখ্যা দিয়ে পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তনসহ শিক্ষার্থীদের আকিদা বিনষ্টের চক্রান্ত করছে। এত্থেকে পরিত্রাণের জন্য অতিদ্রæত এসব দফতরকে জামায়াতের কবল থেকে মুক্ত করার দাবি জানান। তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন। একই সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, পরিদর্শকসহ উপরস্থ কর্মকর্তাদের বেশির ভাগই জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পদের নেতা। এছাড়াও সেকশন অফিসার, অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিকসহ অন্যান্য পদে যারা কর্মরত রয়েছেন তাদের মধ্যে জামায়াত ও শিবির মতাদর্শের ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুুবিধা দেয়া হচ্ছে। দেশে যেসব মাদরাসা জামায়াতে ইসলামীর নেতারা পরিচালনায় রয়েছে, সেখানে নিয়ম বহিভর্‚তভাবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে মাদরাসাগুলোর উচ্চস্তরের কামিল শ্রেণিতে বিভিন্ন বিভাগ অনুমোদনের মহোৎসব চলছে।

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে যে সব কমিটি উপ-কমিটিতে মাদরাসা প্রধানদের বিভিন্ন দায়িত্ব দেয়া হয়, সে সব স্তরে শতভাগ জামায়াতিকরণ করা হয়েছে। মাদরাসাগুলো পরিচালনার জন্য দেশের সব মাদরাসার গভর্নিং বডিতে ব্যাপকভাবে জামায়াত নেতাদের মনোনয়নের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোতে জামায়াতকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শূন্য ও নতুন সৃষ্টপদে শতভাগ জামায়াতপন্থিদের নিয়োগ দানের চ‚ড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা, কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ একজন কট্টর সালাফি মতাদর্শের যা জামায়াতে ইসলামীর আদর্শের সাদৃশ, এ ছাড়াও রেজিস্ট্র্রার, উপ-রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সব কর্মকর্তা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো না কোনো পদভুক্ত নেতা। বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদসহ সব কমিটি, উপ-কমিটিতে জামায়াত নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত হয়ে পরিচালিত হচ্ছে। মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ বেশির ভাগ কর্মকর্তা জামায়াতে ইসলামী থেকে উঠে এসেছে।

মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল ও ভাইস-প্রিন্সিপাল জামায়াত নেতা, তাছাড়া বিভিন্নভাবে দেশের একমাত্র মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে শিক্ষকদের জাময়াতিকরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশে তিনটি সরকারি আলীয়া মাদরাসা রয়েছে। বিগত এক বছর যাবৎ এই তিনটি মাদরাসায় যাদের পদায়ন করা হয়েছে, তারা সবাই জামায়াতের রোকন।

আরবী বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসার শিক্ষা বোর্ড ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ছত্রছায়ায় সরকারি অর্থ ব্যায় করে দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মাদরাসা শিক্ষকদের একত্রিত করে সভা-সেমিনার, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের নামে বিগত এক বছর যাবৎ জামায়াতের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির শিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে শতভাগ জাতীয়করণ করা হবে। কিন্তু যখন নির্বাচনের জন্য সবাই অগ্রসর হচ্ছে, তখন এ নিয়ে রাজনীতি করা, অপতৎপরতা চালানোর কোনো মানে হয় না। আওয়ামী সুবিধাভোগীরা জামায়াতি হিসেবে আবির্ভাবের বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে জামায়াতের অনেকে আওয়ামী লীগে গোপনে-চুপেচাপে ছিল, সুবিধা গ্রহণ করেছে, নানা নাম ধারণ করেছিল। এখন তারা ধীরে ধীরে আত্মপ্রকাশ করছে। এরা কখনোই জনগণের চাহিদা-আকাক্সক্ষা অনুযায়ী কাজ করতে পারেনি।

সমাধান হওয়া ইস্যুতে শিক্ষকদের রাজপথে নামানোকে নির্বাচন বানচালের উদ্দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্যই বলে মনে করেন এই শিক্ষক নেতা। তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে তাদের ফাঁদে পা দিয়েছে। তাদেরকে প্রশ্রয় নিয়েছে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়োগ দিয়েছে, দিচ্ছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত পুরোপুরি জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d login
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot toto