নতুন শুল্ক রাজস্বও সামাল দিতে পারল না ঘাটতি: জুলাইয়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যয় রেকর্ডে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ব্যয় জুলাই মাসে সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা ও ঋণের সুদ মেটাতে বিপুল ব্যয়ের ফলে মাসিক বাজেট ঘাটতি গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯১ বিলিয়ন ডলার (২৪৮ বিলিয়ন ইউরোতে সমমান)। যা গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোর অন্যতম বড় উল্লম্ফন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্য এ চিত্রই দেখিয়েছে।
জুলাই মাসে এটি ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যয় হলেও কোভিড-১৯ মহামারির সময়ের প্রণোদনা প্যাকেজ চলাকালে কয়েক মাসে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল।
শুল্ক থেকে আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও ঘাটতি কমেনি। জুলাই ২০২৪-এ যেখানে শুল্ক আদায় হয়েছিল প্রায় ৭.১ বিলিয়ন ডলার (৬.০৬ বিলিয়ন ইউরো), চলতি বছরের জুলাইয়ে তা চার গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৭.৭ বিলিয়ন ডলার (২৩.৭ বিলিয়ন ইউরো)। কিন্তু এই রাজস্ব বৃদ্ধিও বিপুল ব্যয়ের চাপ সামাল দিতে যথেষ্ট হয়নি।
কেন বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি?
জুলাইয়ে ঘাটতি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায় মূলত বড় অঙ্কের সামাজিক নিরাপত্তা চেক, মেডিকেয়ার ও মেডিকেড খরচ বৃদ্ধি, জাতীয় ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় এবং প্রতিরক্ষা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় অতিরিক্ত বরাদ্দের কারণে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ঘাটতি ওঠানামা করছে। এর পেছনে নতুন শুল্ক আরোপ থেকে পাওয়া রাজস্ব এবং আর্থিক বর্ষপঞ্জির তারতম্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
মে মাসে ঘাটতি কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৩১৬ বিলিয়ন ডলারে (২৬৯.৮ বিলিয়ন ইউরো), বা সময়সূচি সামঞ্জস্য করার পর ২১৯ বিলিয়ন ডলারে (১৮৭ বিলিয়ন ইউরো)। এর পেছনে নতুন শুল্ক থেকে আসা রাজস্বের অবদান ছিল বড়। জুন মাসে প্রথমে উদ্বৃত্ত দেখালেও পরিশোধ তারিখের পরিবর্তন বিবেচনায় নিলে মাসটি আসলে ৭১ বিলিয়ন ডলারের (৬০.৬ বিলিয়ন ইউরো) ঘাটতি দেখিয়েছে।
শুল্ক রাজস্বের সীমাবদ্ধতা
জুলাইয়ের ব্যাপক ঘাটতি স্পষ্ট করেছে বড় একটি বাস্তবতা। শুল্ক রাজস্ব সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রেজারিতে কয়েক দশক বিলিয়ন ডলার যোগ করলেও এটি মূল কাঠামোগত ভারসাম্যহীনতা বদলাতে পারেনি। আয়কে ছাড়িয়ে ব্যয় ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, এমনকি শুল্ক থেকে শক্তিশালী রাজস্ব আসার পরও।
জুন মাসের অস্থায়ী উদ্বৃত্ত বাদ দিলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি এখনো ব্যাপক। শুল্ক রাজস্ব থেকে এককালীন বাড়তি আয় ব্যয়ের লাগামহীন বৃদ্ধিকে থামাতে পারছে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, রেকর্ড শুল্ক সংগ্রহের পরও দেশটির রাজস্ব ঘাটতির গতি খুব একটা শ্লথ হয়নি।