এবার জাপানের রাতের আকাশ আলোকিত করে কী নামলো পৃথিবীতে?

রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে জাপানের কাগসীমার আকাশে দেখা মিলল এক রহস্যময় আগুনের গোলার। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার কিছু পরেই উজ্জ্বল রঙিন আভা ছড়িয়ে আকাশজুড়ে ছুটে চলে নীলচে আগুনের এই গোলাটি। মুহূর্তের মধ্যে পুরো অঞ্চল আলোকিত হয়ে ওঠে, যেন রাতের আঁধার ভেদ করে দিনের আলো নেমে এসেছে। চার সেকেন্ডেরও কম সময় স্থায়ী এ দৃশ্য কাগসীমার রাতকে পরিণত করে এক জাদুকরী মঞ্চে।
ঘটনার সত্যতা ও বিস্তার
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কাগসীমার বিভিন্ন ভবন, সেতু, আগ্নেয়গিরির স্যাটেলাইট চিত্র এবং পূর্বের রেকর্ডের সাথে মেলানোর পর ঘটনাটি নিশ্চিত করা হয়েছে। শুধু কাগসীমাই নয়, আগুনের উজ্জ্বল গোলাটি কিউসু ও শিকুর একাধিক অঞ্চল থেকেও দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রহস্যময় বস্তুটি ছিল একটি ফায়ারবল—অত্যন্ত উজ্জ্বল উল্কা। ধারণা করা হচ্ছে, এর খণ্ড কোনো সমুদ্রে গিয়ে আছড়ে পড়েছে।
ফায়ারবল কীভাবে তৈরি হয়
স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেছেন, ফায়ারবল আসলে এক ধরনের উল্কা। মহাকাশ থেকে আসা সূক্ষ্ম ধুলিকণা বা গ্রহাণুর খণ্ড যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তখন বায়ুর সাথে ঘর্ষণের ফলে তা জ্বলে ওঠে। এই ঘর্ষণ থেকে তৈরি হয় এক উজ্জ্বল আলোকবলয়, যা মুহূর্তের মধ্যে রাতের আকাশ আলোকিত করে তোলে।
আগের রহস্যময় দৃশ্য
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও জাপানের বিভিন্ন স্থানে এমন মহাজাগতিক ঘটনার দেখা মিলেছে।
২০২৪ সালের মে মাসে তাতোয়া শহরে একসঙ্গে নয়টি আলোর স্তম্ভ দেখা গিয়েছিল। সে সময় অনেকেই ঘটনাটির সাথে বহির্জাগতিক প্রাণীর যোগসূত্র খুঁজেছিলেন, যদিও বিশেষজ্ঞরা মিথ উড়িয়ে দেন।
প্রায় দেড় বছর আগে ফুজি পর্বতের আকাশেও দেখা গিয়েছিল রহস্যময় আগুনের গোলা।
কাগসীমা এবং আশপাশের এলাকায় একাধিকবার অদ্ভুত আলোক ঝলকানি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
জনমনে কৌতূহল
রঙিন আভা ছড়ানো এই উজ্জ্বল ফায়ারবলকে ঘিরে জাপানজুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। স্থানীয় গণমাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সবখানেই ছড়িয়ে পড়েছে রাতের সেই বিরল দৃশ্যের ভিডিও ও ছবি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি একেবারেই প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও সাধারণ মানুষের কাছে এটি মহাজাগতিক জাদুর মতোই।