অবৈধ অভিবাসীদের উগান্ডা পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতির অংশ হিসাবে হন্ডুরাস ও উগান্ডার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নতুন এই চুক্তি অনুযায়ী, নিজেদের নাগরিক নন এমন অভিবাসীদের গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছে দেশ দুটি। এটি ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টার অংশ এবং আন্তর্জাতিকভাবে অভিবাসী পুনর্বাসনের একটি বড় পদক্ষেপ।
তবে এই পদক্ষেপটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তবে চুক্তিটি ঠিক কবে হয়েছে তা প্রকাশ করেনি দেশগুলো।
বৃহস্পতিবার উগান্ডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব বাগিইর ভিনসেন্ট ওয়াইসওয়া জানিয়েছেন, দুই দেশ এখন চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, সিবিএস।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, উগান্ডা প্রায় ২০ লাখ শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীকে আশ্রয় দিতে সম্মত হয়েছে। যাদের অধিকাংশই ডেমেক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কংগো, ইথিওপিয়া, ইরিত্রিয়া, দক্ষিণ সুদান এবং সুদানসহ পূর্ব আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে এসেছে।
বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উগান্ডা যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থী এশীয় ও আফ্রিকান অভিবাসীদের একটি অনির্দিষ্ট সংখ্যাকে গ্রহণ করবে। অন্যদিকে, হন্ডুরাস দুই বছরের মধ্যে স্প্যানিশভাষী দেশগুলোর কয়েকশ নির্বাসিত ব্যক্তিকে গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। তবে চুক্তিতে বলা হয়েছে, এই অভিবাসীদের কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড থাকা চলবে না।
চুক্তি অনুযায়ী, মোট কতজন পুনর্বাসিত হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন মহাদেশের একাধিক দেশের সঙ্গে একই ধরনের নির্বাসন চুক্তি করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে।
এর আগে প্যারাগুয়ে, রুয়ান্ডা, পানামা এবং কোস্টারিকার মতো দেশগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘নিরাপদ তৃতীয় দেশ’ হিসাবে অভিবাসী গ্রহণে সম্মত হয়েছে। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনি প্রচারণার অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। সম্প্রতি মার্কিন সুপ্রিমকোর্টর এক রায়ে প্রশাসনকে অভিবাসীদের তাদের নিজ দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে নির্বাসিত করার অনুমতি দিয়েছেন। যা এই নীতি বাস্তবায়নের পথকে আরও সুগম করেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের চুক্তির ফলে আশ্রয়প্রার্থীদের এমন দেশে পাঠানো হতে পারে যেখানে তাদের জীবন ও নিরাপত্তা মারাÍক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এই নীতিকে আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনের লঙ্ঘন বলেও অভিহিত করেছেন অনেকেই। সমালোচকরা বলছেন, ‘অভিবাসীদেরকে রাজনৈতিক খেলায় ব্যবহার করা হচ্ছে।’