সৌর বিস্ফোরণ বুঝতে ও মহাকাশ আবহাওয়া পূর্বাভাসে নাসার এআই ‘সূর্য’

নাসা সূর্যের জটিল আচরণ বোঝা ও মহাকাশের আবহাওয়া পূর্বাভাস দিতে নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল চালু করেছে। মডেলটির নাম ‘সূর্য হেলিওফিজিক্স ফাউন্ডেশনাল মডেল’।
মডেলটি তৈরি হয়েছে নাসার সোলার ডায়নামিকস অবজারভেটরি (এসডিও) মহাকাশযানের টানা নয় বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে। ২০১০ সাল থেকে এসডিও প্রতি ১২ সেকেন্ড পরপর সূর্যের বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ছবি ও চৌম্বক ক্ষেত্রের তথ্য সংগ্রহ করে আসছে।
এই দীর্ঘ ১৫ বছরের তথ্যভান্ডার (যা সূর্যের এক পূর্ণ সৌরচক্রকে কভার করে) সূর্যের সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
‘সূর্য’ মডেল মূলত সূর্যের বিস্ফোরণ বা সৌরঝড় শনাক্ত ও তার প্রভাবের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, এটি দুই ঘণ্টা আগেই ভিজ্যুয়াল পূর্বাভাস দিতে পারে এবং বর্তমান পদ্ধতির চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি নির্ভুল।
নাসা জানিয়েছে, এই মডেল উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। গবেষক, শিক্ষক বা উদ্ভাবকেরা চাইলে ‘হাগিংফেস’ প্ল্যাটফর্মে মডেলটি ব্যবহার করতে পারবেন। এর কোডও গিটহাবে পাওয়া যাচ্ছে।
মডেলটি তৈরি হয়েছে আইবিএমসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার সহায়তায় এর জন্য বিশেষ সুপারকম্পিউটার ব্যবহৃত হয়েছে।
নাসার হেলিওফিজিক্স বিভাগের পরিচালক জোসেফ ওয়েস্টলেক বলেন, পৃথিবীর আবহাওয়ার মতোই মহাকাশের আবহাওয়া আগেভাগে জানা জরুরি। কারণ সৌরঝড় সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে স্যাটেলাইট, বিদ্যুৎ সরবরাহ, জিপিএস ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর। এআই ব্যবহার করে মহাকাশের এমন কার্যকলাপ বোঝা গেলে মহাকাশচারী, মহাকাশযান এবং পৃথিবীর প্রযুক্তি আরও সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে।
নাসার বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ‘সূর্য’ মডেল তাদের মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।