ফরেনসিকে যেভাবে হাসিনার কণ্ঠস্বর শনাক্ত হয়

ট্রাইব্যুনাল-১ এক দিনে ৬ জনের জবানবন্দী
ফরেনসিকে ব্যবহৃত এল-আর রেশিও (স্কোর) অনুযায়ী, যদি স্কোর ১-এর বেশি হয়, তাহলে ধরে নেয়া হয় বিতর্কিত ও নমুনা কণ্ঠস্বর একই ব্যক্তির। এই পরীক্ষায় শেখ হাসিনার নমুনা কণ্ঠস্বর ও বিতর্কিত নারী কণ্ঠস্বরের এল-আর রেশিও (স্কোর) ছিল ২.৭৫১৪৫।
সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক মাকসুদ কামালের একটি অডিও ক্লিপ যাচাই করে উভয়ের কণ্ঠস্বর শনাক্ত করা হয়েছে।
বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তার মাধ্যমে চলতি বছরের ১২ মে মামলার আলামত হিসেবে একটি সিডি ও একটি ডিভিডি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। সিডিটিতে সংরক্ষিত ছিল বিতর্কিত কথোপকথন, আর ডিভিডিটিতে ছিল শেখ হাসিনা ও মাকসুদ কামালের নমুনা কণ্ঠস্বর।
গতকাল মঙ্গলবার জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ১৪তম দিনের শেষ সাক্ষী হিসেবে সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে কর্মরত সাব-ইন্সপেক্টর মো: শাহেদ জোবায়ের লরেন্স এই তথ্য জানান। তিনি এই মামলার ৪৫তম সাক্ষী হিসাবে জবানবন্দী দিয়েছেন। এ দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে তার আগে আরো পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালে সদস্য হিসেবে আছেন বিচারপতি মো: শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে কর্মরত সাব-ইন্সপেক্টর মো: শাহেদ জোবায়ের লরেন্স জানান, পরীক্ষার সময় প্রথমে নারী ও পুরুষ কণ্ঠস্বর আলাদা করা হয়। এরপর ফরেনসিকে ব্যবহৃত আন্তর্জাতিক মানের সফটওয়্যারের সাহায্যে বিতর্কিত কণ্ঠস্বর দু’টি নমুনার সাথে তুলনা করা হয়। ফরেনসিকে ব্যবহৃত এল-আর রেশিও (স্কোর) অনুযায়ী, যদি স্কোর ১-এর বেশি হয়, তাহলে ধরে নেয়া হয় বিতর্কিত ও নমুনা কণ্ঠস্বর একই ব্যক্তির।
এই পরীক্ষায় শেখ হাসিনার নমুনা কণ্ঠস্বর ও বিতর্কিত নারী কণ্ঠস্বরের এল-আর রেশিও (স্কোর) ছিল ২.৭৫১৪৫। অধ্যাপক মাকসুদ কামালের কণ্ঠস্বরের সাথে বিতর্কিত পুরুষ কণ্ঠস্বরের এল-আর রেশিও (স্কোর) ছিল ৪.৬৪১৫৩। এই ফলাফলের ভিত্তিতে, ফরেনসিক ল্যাবের পক্ষ থেকে মতামত দেয়া হয় যে, বিতর্কিত কণ্ঠস্বর দু’টি যথাক্রমে শেখ হাসিনা এবং অধ্যাপক মাকসুদ কামালের। ফরেনসিক পরীক্ষার ফলাফল সম্বলিত মতামতের সত্যায়িত কপি তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজে সংগ্রহ করেন। যদিও মূল মতামতটি জমা দেয়া হয়নি, কারণ তা একাধিক মামলায় ব্যবহৃত হবে বলে জানানো হয়েছে।
স্বেচ্ছায় জবানবন্দী দিয়েছেন আইজিপি মামুন : ম্যাজিস্ট্রেট
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান এক মামলায় স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার শেখ হাসিনার মামলায় ৪০তম সাক্ষী হিসাবে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাকির হোসাইন এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ফরোয়ার্ডিংয়ের ভিত্তিতে, চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকা মহানগরের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জবানবন্দী রেকর্ডের নির্দেশ দেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রুলস অব প্রসিডিউরের বিধি ২৪ ও ২৫(১) অনুযায়ী এই জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ৩ মার্চ চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: আলমগীর, পিপিএমের উপস্থাপনায় বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে ম্যাজিস্ট্রেটের খাস কামরায় উপস্থিত করা হয়। সাথে ছিলেন তার নিয়োজিত আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, জবানবন্দী দেয়ার আগে আসামিকে চিন্তা করার ও বিশ্রামের জন্য ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় দেয়া হয়, যা তার উপস্থিতিতেই সম্পন্ন হয়। নির্ধারিত সময় শেষে, আসামি স্বেচ্ছায় জবানবন্দী দিতে সম্মত হন এবং তার বক্তব্য বিস্তারিতভাবে টাইপ করে লিপিবদ্ধ করা হয়।
তিনি আরো জানান, জবানবন্দী শেষে আসামি তা নিজে পড়ে দেখেন এবং শুদ্ধ ও সঠিক মেনে তা স্বাক্ষর করেন। তিনি ছয় পাতার জবানবন্দীতে পূর্ণ নামসহ পাঁচটি এবং সংক্ষিপ্তভাবে পাঁচটি স্বাক্ষর করেন। ম্যাজিস্ট্রেট নিজেও ছয়টি স্বাক্ষর প্রদান করেন। এটা জবানবন্দী নামে খণ্ড নথিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং স্বাক্ষরগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেট তার প্রত্যয়নে উল্লেখ করেন, আসামি সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায়, তার আইনজীবীর উপস্থিতিতে, অনুতপ্ত মনোভাব নিয়ে স্বেচ্ছায় এ জবানবন্দী প্রদান করেন।
জবানবন্দী রেকর্ডের পর, একটি অফিসিয়াল আদেশের মাধ্যমে জবানবন্দীসহ খণ্ড নথিটি মাননীয় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রেরণ করা হয়। ওই খণ্ড নথির আদেশ নং ২-এ ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের দুইটি স্বাক্ষর রয়েছে এবং আদেশ নং ১ ও ৩-এ মাননীয় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের চারটি স্বাক্ষর রয়েছে, যেগুলো ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন নিশ্চিতভাবে চিনতে পেরেছেন।
সবশেষে, দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণ শেষে আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
জুলাই আন্দোলন চলাকালে পঙ্গু হাসপাতালে মারা যায় ৮ জন : জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়ে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় এবং বাকি ছয়জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এ বিষয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪১ নম্বর সাক্ষী হিসাবে গতকাল মঙ্গলবার পঙ্গু হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ সিরাজুস সালেহীন জানান, তিনি ১২ জুন ২০২৪ তারিখে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে যোগদান করেন। ১৯ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার, তার ডিউটি না থাকলেও বিকেলে হাসপাতালের পরিচালক ফোন করে জানান যে, বহু গুলিবিদ্ধ রোগী হাসপাতালে আসছে এবং দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানোর অনুরোধ জানান।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে তিনি দেখতে পান, অনেক আহত রোগী শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এসেছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন। কেউ কেউ ছিলেন রিকশাচালক, ভ্যানচালক এবং সাধারণ পথচারী।
রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অনেককে অস্ত্রোপচারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। ১৯ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত হাসপাতালে ধারাবাহিকভাবে গুলিবিদ্ধ রোগীরা ভর্তি হতে থাকেন।
এই সময়ে, ৮ জন রোগী মারা যান। এ ছাড়া অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৩ জনের একটি করে হাত এবং ১৭ জনের একটি করে পা কেটে ফেলতে (অ্যামপুটেশন) হয়।
ডা: সালেহীন আরো জানান, এই ধরনের সঙ্কটপূর্ণ মুহূর্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টরা নিরলসভাবে কাজ করেছেন রোগীদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য।
এই ঘটনাগুলো আন্দোলনের সময়কার পরিস্থিতির ভয়াবহতা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর বিপুল চাপের একটি চিত্র তুলে ধরে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ মতামত : সিআইডির আলোকচিত্র শাখার বিশেষজ্ঞ মো: গোলাম ইফতেখার আলম শেখ হাসিনার মামলায় ৪২ নম্বর সাক্ষী হিসাবে গতকাল মঙ্গলবার এক তদন্তকারী কর্মকর্তার অনুরোধে প্রাপ্ত ১২টি ভিডিও পরীক্ষা করে জানান যে, উক্ত ভিডিওগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দ্বারা তৈরি এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
চলতি বছরের ১১ মার্চ সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একটি পেনড্রাইভে সংরক্ষিত ১২টি ভিডিও পরীক্ষা করার জন্য সিআইডির আলোকচিত্র শাখায় প্রেরণ করেন। ভিডিওগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে কি না সে বিষয়ে মতামত প্রদান ছিল পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য।
পরীক্ষা শেষে ১৩ মার্চ ২০২৫ তারিখে মতামতসহ পেনড্রাইভটি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ফেরত প্রদান করা হয়। বিশেষজ্ঞ মতামতে উল্লেখ করা হয়, উক্ত ভিডিওগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা জেনারেটেড মর্মে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এই সংক্রান্ত মতামতের একটি সত্যায়িত কপি তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হয়েছে, যা মামলার আলামত হিসেবে প্রদর্শনী-১৭ নামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সত্যায়িত কপিতে মো: গোলাম ইফতেখার আলমের স্বাক্ষর রয়েছে (প্রদর্শনী-১৭/১)। তবে মূল মতামতটি দাখিল করা হয়নি, কারণ সেটি বিভিন্ন মামলায় উপস্থাপন করা হবে। বর্তমানে মূল কপি বিশেষজ্ঞের হেফাজতে সংরক্ষিত রয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি বর্তমানে ভিডিও বিকৃতি, তথ্য জালিয়াতি ও বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট তৈরিতে ব্যবহৃত হওয়ায় এমন প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ বিচারিক প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ব্যালিস্টিক বিশ্লেষণ ও মতামত দাখিলের বিবরণ : সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশারদ শেখ নজরুল ইসলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার মামলার আলামত পরীক্ষার পর মতামত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। মামলার ৪৩তম এই সাক্ষী বর্তমানে সিআইডি, ঢাকা-এর ব্যালিস্টিক শাখায় বিশারদ হিসেবে কর্মরত আছেন।
তথ্য মতে, চলতি বছর ১০ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে পরীক্ষার জন্য ২টি বুলেট ও ৩টি ধাতব পিলেট গ্রহণ করেন তিনি। পরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে তিনি মতামত প্রস্তুত করেন এবং ১৯ মার্চ তারিখে উক্ত মতামতসংবলিত প্রতিবেদন তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেন।
ব্যালিস্টিক বিশারদ শেখ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এটি সেই মতামতের সত্যায়িত কপি, যা তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন। উক্ত কপিতে তার স্বাক্ষর সংযুক্ত রয়েছে। তবে মূল মতামত প্রতিবেদনটি তিনি দাখিল করেননি, কারণ এটি ভবিষ্যতে অন্যান্য মামলায় দাখিলের প্রয়োজন হতে পারে। বর্তমানে মূল প্রতিবেদনটি তার হেফাজতে সংরক্ষিত রয়েছে।
ডিজিটাল ফরেনসিকে আলামত পরিদর্শন ও কণ্ঠ মিল যাচাই : সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষিত একাধিক ডিজিটাল আলামতের মাধ্যমে তর্কিত অডিও ও ভিডিও ফাইলের কণ্ঠস্বর বিশ্লেষণ করে তা প্রামাণ্য ব্যক্তিদের কণ্ঠস্বরের সাথে মিল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা।
সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মো: রুকুনুজ্জামান গতকাল মঙ্গলবার শেখ হাসিনার মামলায় ৪৪তম সাক্ষ্য দিতে এসে জানান, তিনি বর্তমানে উক্ত ল্যাবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং গত কয়েক মাসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার আলামত হিসেবে ডিভিডি, হার্ডড্রাইভ এবং পেনড্রাইভে সংরক্ষিত অডিও-ভিডিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।
তিনি জানান, চলতি বছরের ১৫ তারিখে তিনি মামলার বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে থেকে একটি ডিভিডি-আর ও একটি হার্ড ড্রাইভ গ্রহণ করেন। ডিভিডি-আর-এ একটি তর্কিত অডিও এবং হার্ডড্রাইভে প্রামাণ্য কণ্ঠস্বর সংরক্ষিত ছিল। বিশ্লেষণে দেখা যায়, তর্কিত নারী কণ্ঠস্বরটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সাথে মিলে যায়। এ সংক্রান্ত মতামতের সত্যায়িত কপি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে (প্রদর্শনী-১৯), যার সাথে রয়েছে তার স্বাক্ষরিত কপি (প্রদর্শনী-১৯/১ সিরিজ)।
একই ডিভিডি-আর-এ থাকা একটি পুরুষ কণ্ঠস্বর পরীক্ষায় জানা যায়, সেটি শেখ ফজলে নূর তাপসের প্রামাণ্য কণ্ঠস্বরের সাথে মিলে গেছে। এ সম্পর্কিত মতামতের সত্যায়িত কপি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদান করা হয়েছে (প্রদর্শনী-২০, ২০/১ সিরিজ)।
পুলিশ পরিদর্শক রুকুনুজ্জামান আরো জানান, উল্লিখিত প্রতিটি মতামতের মূলকপি দাখিল করা হয়নি, কারণ এসব প্রতিবেদন একাধিক মামলায় প্রাসঙ্গিক হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সব মূল প্রতিবেদন তার হেফাজতে রয়েছে।
পরে চলতি বছর ১৯ মার্চ তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে একটি পেনড্রাইভ গ্রহণ করেন, যাতে দু’টি ভিডিও সংরক্ষিত ছিল। একটি ভিডিওতে তর্কিত কথোপকথন এবং অপরটিতে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বক্তব্য ছিল। ভিডিও বিশ্লেষণের পর তিনি রিপোর্টে উল্লেখ করেন যে, তর্কিত কণ্ঠস্বরটি হাবিবুর রহমানের কণ্ঠস্বরের সাথে মিলে যায়। এ সংক্রান্ত মতামতের সত্যায়িত কপি প্রেরণ করা হয়, যার সাথে রয়েছে।
পরিদর্শক রুকুনুজ্জামান জানান, প্রতিটি মতামত যথাযথভাবে ফরেনসিক নিয়ম মেনে প্রদান করা হয়েছে এবং সবকিছুরই যথাযথ নথিপত্র সংরক্ষিত রয়েছে।