Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

উৎপাদন ক্ষমতা ও ব্যয় বৃদ্ধির নথি পাওয়া যাচ্ছে না

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার যথাযথ অনুমোদনের কাগজপত্র পায়নি বলে জানিয়েছে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিএজি)। 
এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সিএজি জানায়, এই প্রকল্পের অবকাঠামো চুক্তির প্রক্রিয়া এবং ব্যয় ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও স্বচ্ছতার ঘাটতির তথ্য পাওয়া গেছে। গত এপ্রিলে দেওয়া এই প্রতিবেদনে রূপপুর প্রকল্পের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় হোটেল ও আবাসন ভাড়া নিয়ে কিছু অনিয়মের কথাও বলা হয়েছে। 

বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সরকারের মধ্যে ২০১১ সালে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হয়। এতে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে প্রতিটি এক হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিটের মাধ্যমে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়। ২০১৫ সালে রাশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি হয়। তাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি ইউনিটে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট করে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়। 

সিএজির প্রতিবেদনে বলা হয়, রূপপুর কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত কোথায়, কীভাবে নেওয়া হয়েছে, সে-সংক্রান্ত কোনো নথি তারা নিরীক্ষার সময় খুঁজে পায়নি। উৎপাদন বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় সোয়া লাখ কোটি টাকা (১৩.১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। 

অতিরিক্ত মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (পরীক্ষা ও পরিদর্শন) কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন গত মে মাসে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কোম্পানির কাছে পাঠানো হয়। সিএজি প্রকল্পটির ২০১৬-১৭ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসাব নিরীক্ষা করেছে।

রূপপুর প্রকল্পের ‍দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক)।

রূপপুরে দেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা করছে রাশিয়া। প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ঋণের জোগান দিচ্ছে দেশটি। এ বছর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে আসার কথা থাকলেও তা এক বছর পিছিয়েছে। এ পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটম এটি নির্মাণ করছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পারমাণবিক প্রকল্প একটি দেশের মর্যাদার প্রতীক। তবে এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও উঠছে। তাই এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত।

তবে এর আগে এই প্রকল্প নিয়ে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে রোসাটম এবং ঢাকায় রাশিয়ান দূতাবাস থেকে প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। 

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রূপপুর প্রকল্প শুরু থেকেই বিতর্কিত। কারণ, এত বড় ও ব্যয়বহুল একটি প্রকল্প প্রতিযোগিতা ছাড়াই রাশিয়ার সহযোগিতায় নির্মাণ করা হচ্ছে। বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে দুর্নীতির সূচকে রাশিয়ার অবস্থানও অনেক ওপরে। এ ছাড়া নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রোসাটম নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এদের সহযোগিতায় নির্মিত প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এসব অনিয়মের জন্য শুধু পতিত সরকারকে দায়ী করলে চলবে না, এর সঙ্গে জড়িত আমলাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। 

বেড়েছে খরচ, মেলেনি নথি 
নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলা হয়, ২০১২ সালের জানুয়ারিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রকল্প খরচ চূড়ান্ত করতে সমঝোতা দল গঠন করা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, বিদ্যুৎ বিভাগ ও পরমাণু শক্তি কমিশনের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ওই দলের দায়িত্ব ছিল রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে খরচ নির্ধারণ। বৈঠকে সতর্কতার সঙ্গে সমঝোতা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

তবে সমঝোতা ছাড়াই ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে ভিভিইআরএ ইএস-২০০৬ প্রযুক্তির এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট নির্মাণে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের নির্মাণ চুক্তি সই হয়। এর আগে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে একই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য আরও চারটি চুক্তি হয়, যার মূল্য ছিল প্রায় ০.৫৪৫৯ বিলিয়ন ডলার। ফলে প্রকল্পের মোট খরচ দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রাথমিক অনুমানের দ্বিগুণের বেশি। অথচ দুই হাজার মেগাওয়াট থেকে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণের অনুমোদন, খরচ বাড়ানোর যৌক্তিকতা কিংবা কোনো নথি নিরীক্ষকরা পাননি।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সরকারি সমঝোতা দল থাকলেও তাদের আলোচনার কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। খরচ কেন বাড়ানো হলো, কোন যুক্তিতে দুই হাজার মেগাওয়াট থেকে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট করা হলো– এর কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়নি। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় জবাবদিহি ও সুশাসনের অভাব প্রকট হয়েছে।
এই চুক্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন ড. মসিউর রহমান, তৎকালীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। বক্তব্য জানার জন্য সমকাল তাদের মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করে। তবে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

রূপপুর প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর এখন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত নন। এই যুক্তিতে তিনি এখন কথা বলতে রাজি হননি। তবে চুক্তির সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত একজন অতিরিক্ত সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি তত্ত্বাবধানে রূপপুর প্রকল্পের সব কাজ হতো। অন্যদের খুব বেশি ভূমিকা রাখার সুযোগ ছিল না।
রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক ড. কবির হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনিও সাড়া দেননি। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য খুদেবার্তা পাঠানো হয়। তাতেও তিনি সাড়া দেননি।
তবে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানির (এনপিসিবিএল) হিসাব বিভাগ থেকে জানানো হয়, নিরীক্ষা প্রতিবেদন এখনও তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি।

হোটেল ভাড়া বাবদ কোটি টাকা খরচ
প্রকল্পের আওতায় রাশিয়ার তিনটি শহরে যন্ত্রপাতি পরীক্ষার জন্য কোয়ালিটি ইন্সপেকশন ইউনিট ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। সরকারি নথিতে এসব আবাসনের জন্য ভাড়া দেওয়ার প্রমাণ থাকলেও একই সময়ে ইন্সপেকশন টিমকে হোটেলে অবস্থান দেখিয়ে ভাড়া বাবদ আরও অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে।
২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে শুধু হোটেল ভাড়া বাবদ দেখানো হয়েছে দুই কোটি ৭৯ লাখ ৫৩ হাজার ৬০০ টাকা। ইন্সপেকশন ইউনিট থাকার পরও হোটেল খরচ দেখানোকে ‘অযৌক্তিক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন নিরীক্ষকরা।

অনুমোদন ছাড়া নগদ টাকা উত্তোলন
নিরীক্ষায় দেখা যায়, প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাছান (এনপিসিবিএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক) ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রাশিয়ায় আবাসন ভাড়ার নামে ৭৭ লাখ ৩ হাজার ৪২৯ টাকা তুলেছেন।

প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল, এ ধরনের ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। সেটি পাশ কাটিয়ে সরাসরি রাশিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভাড়ার চুক্তি করা হয়েছে। তা ছাড়া এই নগদ উত্তোলনের অর্থ যথাযথভাবে সমন্বয় হয়েছে কিনা, তারও তথ্য পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জাহেদুল হাছানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছে সমকাল। তিনি ফোন ধরেননি।

ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্র
আইএইএর তথ্য থেকে জানা যায়, রাশিয়ার সর্বশেষ ভিভিআর-১২০০ প্রযুক্তিতে নির্মিত হচ্ছে রূপপুর কেন্দ্র। একই প্রযুক্তিতে রাশিয়ায় নির্মিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কিলোওয়াটপ্রতি খরচ হয় চার হাজার ৭৫ ডলার। রূপপুর প্রকল্পে কিলোওয়াটপ্রতি খরচ পাঁচ হাজার ৮৯০ ডলার।

রূপপুরে নির্মাতা রাশিয়ার রোসাটম ফিনল্যান্ড, তুরস্ক, ইরান, বুলগেরিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশে ভিভিআর-১২০০ প্রযুক্তিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। ফিনল্যান্ডে কিলোওয়াটপ্রতি খরচ পাঁচ হাজার ডলার আর তুরস্কের আক্কুইউ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের (১২০০ মেগাওয়াট করে চার ইউনিট) প্রতি কিলোওয়াটের নির্মাণ ব্যয় তিন হাজার ২০০ ডলার।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
toto 4d
slot toto
slot gacor
toto slot
toto 4d
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot gacor
slot gacor
bacan4d
slot gacor
paito hk
bacan4d
slot gacor
bacansports
slot gacor
fenomena1688
pasaran togel
bacan4d
slot demo
bacan4d
slot toto
slot toto
slot toto