International

ড্রাকুলার দেশে অন্যরকম পর্যটন র‌্যাভেনস নেস্ট

রক্তচোষা ড্রাকুলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে রোমানিয়া, বিশেষ করে ট্রানসিলভেনিয়ার নাম। ২০২২ সালে প্রায় দশ লাখ বিদেশি পর্যটক রোমানিয়ায় গিয়েছিলেন। তবে তাদের ৭০ থেকে ৮০ ভাগই ড্রাকুলা-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সাইট পরিদর্শন করতে যান। কিন্তু ট্রানসিলভেনিয়ায় ড্রাকুলা ছাড়াও পর্যটন আকর্ষণ করার মতো আরো দর্শনীয় বিষয় আছে। তেমনই এক জায়গা র‌্যাভেনস নেস্ট। এটি ট্রানসিলভেনিয়ার পাহাড়ের গহীনে লুকানো একটি অভিজাত থাকার জায়গা।

র‌্যাভেনস নেস্টে পরিত্যক্ত শেড, শস্যাগার আর আস্তাবল থেকে তৈরি করা হয়েছে, যেগুলো একসময় স্থানীয়রা তাদের পশু চরানোর জন্য ব্যবহার করতেন। রোমানিয়ান বংশোদ্ভূত ভ্রমণপ্রিয় মানুষ হ্যান্স এটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় জ্বালানি, হিট পাম্প আমরা নিজেরাই তৈরি করি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারেরও সুযোগ আছে। কাছের এলাকা থেকে খাবার আসে। সেরা মাংস, আর বাগান থেকে সবজি আসে।’ স্থানীয় অর্থনীতিও এ থেকে উপকৃত হচ্ছে। স্থানীয় মিস্ত্রিরা কাঠের ঘরগুলো তৈরি করেছেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ফার্নিচার তৈরি করা হয়েছে। সবচেয়ে পুরনো বাড়িটি ১৮৯৬ সালের। হ্যান্স বলেন, ‘অনেক অর্থ ব্যয় করে বাড়িগুলো সংস্কার করা হয়েছে। সঙ্গে ভালোবাসাও ছিল। প্রতিটি অংশ সংস্কার করা হয়েছে, অনেকটা লেগো দিয়ে তৈরির মতো।’ সাসটেইনেবিলিটি, মিনিমালিজম, শান্তি এবং প্রকৃতি: এটি কি এমন এক অভিজাত কৌশল, যেটা ব্যবহার করে রোমানিয়া আরও পর্যটক আকর্ষণ করতে পারে?

এসোসিয়েশন অফ রোমানিয়ান ট্র্যাভেল এজেন্সির আদ্রিয়ান ভোইকান বলেন, ‘এখানে এমন সব জায়গা আছে যেখানে বিলাসবহুলভাবে থাকার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু রোমানিয়াতে আসা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ শুধু ড্রাকুলার জন্য আসেন। কারণ তারা শুধু সে সম্পর্কেই জানেন। পর্যটন শিল্পে কাজ করা আমাদের ইংলিশ সহকর্মীরা একদিন দারুন একটা কথা বলেছিলেন: ‘ভয়ংকর ভ্যাম্পায়ারদের ভুলে যান! রোমানিয়ায় পাগল প্রকৃতি আর সংস্কৃতি আছে।’ ২০২২ সালে প্রায় দশ লাখ বিদেশি পর্যটক রোমানিয়ায় গিয়েছিলেন। ইউরোপের পরিচিত দেশগুলোর তুলনায় সংখ্যাটি খুবই কম। রোমানিয়া পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যের মধ্যে পড়ে না। তবে এমন ‘সেøা টুরিজম’ এর সুযোগ তৈরি করে রোমানিয়া পর্যটকদের টানতে পারে। র‌্যাভেনস নেস্টে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও অনেক প্রকৃতি উপভোগ করা যায়। টুর অপারেটররা পাহাড় পরিদর্শনেরও ব্যবস্থা করেন যেখানে দায়িত্বশীলভাবে প্রকৃতির সান্নিধ্যে যাওয়া যায়। তারার নীচে মুভি প্রদর্শনী আর ক্যাম্পফায়ার। ব্যাভেনস নেস্টে সন্ধ্যার কর্মসূচিগুলোও দারুন উপভোগ্য হয়ে থাকে। সূত্র : ডয়চে ভেলে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button