Bangladesh

বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি রূপান্তরে ৩৯৫ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ

৩৯৫ মিলিয়ন ইউরোর মধ্যে পুরোটাই ঋণ নয়, এরমধ্যে অনুদান হিসেবে ৪৫ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাকি ৩৫০ মিলিয়ন ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে বলে জানান অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা।

নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে বাংলাদেশের রূপান্তর বড় একটি সহায়তা পেতে চলেছে। এখাতে ৩৯৫ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর ঋণদাতা সংস্থা– ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি)। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ঋণের অর্থে বাংলাদেশে গ্রিন এনার্জি বা পরিবেশসম্মত বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোয় অর্থায়ন করা হবে।

৩৯৫ মিলিয়ন ইউরোর মধ্যে পুরোটাই ঋণ নয়, এরমধ্যে অনুদান হিসেবে ৪৫ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাকি ৩৫০ মিলিয়ন ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে বলে জানান অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা।

আগামী ২৪-২৫ অক্টোবর বেলজিয়ামে এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক চুক্তি হবে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান ইআরডির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় শেখ হাসিনার উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এবিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান টিবিএস’কে বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সরকার আরও মনোযোগ দিচ্ছে। ইইউ’র অর্থায়ন বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির উদ্যোগ গ্রহণ এবং এই খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করছে। এ বছরের আগস্টে সৌদি আরবের অ্যাকোয়া পাওয়ার কোম্পানি এবং দুই দেশীয় দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে ৩০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সম্মত হয়েছে। এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে ৪৩০ মিলিয়ন ডলার।  

একইমাসে, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জানান, বাংলাদেশের সৌরবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাই করছে মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোন।

ইআইবির সাম্প্রতিক ঋণটিই এপর্যন্ত বাংলাদেশ ও ইআইবির মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থায়নের চুক্তি হতে চলেছে। ইআইবির আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট অনুসারে, বাংলাদেশকে দেওয়া তাদের মোট আর্থিক সমর্থন ৮০০ মিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছেছে।

এরমধ্যে মহামারির সময় ইআইবি বাজেট সহায়তা হিসেবে দেয় ২৫০ মিলিয়ন ইউরো। এছাড়া, রেলওয়ের অন্তত দুটি প্রকল্প এবং ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পে অর্থায়নের প্রধান অংশীদার ছিল।

ইআরডি কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রকল্পে ঋণ দিতে আগ্রহ জানায় ইআইবি। পরে ঋণের সাথে অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব দেয় ইইউ। ঋণ ও অনুদান চুক্তি সাক্ষরের সব রকমের প্রস্তুতিমূলক কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

চলতি সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঋণ চুক্তি ও অনুদান চুক্তির বিষয়ে সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছে ইআরডি। এখন তার সম্মতি পাওয়া গেলেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। তবে নির্দিষ্ট কোন কোন প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানান ইআরডির কর্মকর্তারা।

মো. হাবিবুর রহমান ‍বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এই অর্থের নিশ্চিয়তা পাওয়া গেলেও এখনও আমরা প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেইনি। শুধুমাত্র একটি প্রকল্প আমরা বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারণ করেছি। আরও প্রকল্প বাছাইয়ে কাজ করেছে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)। দ্রুততর সময়ে প্রকল্পগুলো চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’  

ইআরডির কর্মকর্তা জানান, সাধারণত ইআইবি এ ধরণের ঋণে শর্তাবলী নির্ধারণ করে না। প্রতি কিস্তির অর্থ ছাড়ের, সুদহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে বাংলাদেশ। মূলত বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ স্থায়ী সুদহার  অথবা ভ্যারিয়েবল সুদহারে এই ঋণ নিতে পারবে।

দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক ঋণের সুদহার

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা বিশ্বব্যাংক। তারপরেই আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)।

ইআইবির ঋণে সুদহার ছয় মাসের ইউরিবোর (ইউরো ইন্টারব্যাংক অফার রেট) এর মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। বর্তমানে যা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। সে তুলনায়, দেশের বৃহৎ দুটি ঋণদাতা– বিশ্বব্যাংক ও এডিবি – ২ শতাংশ স্থায়ী সুদহারে ঋণ দেয়। এছাড়া, তারা সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) সুদহার অনুযায়ীও ঋণ প্রস্তাব দেয়, যা বর্তমানে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।  

বাংলাদেশের পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা

টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)-র তথ্যমতে, অফ-গ্রিড ও অন-গ্রিড মিলিয়ে বাংলাদেশ বর্তমানে ১ হাজার ১৯৪.৬৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করে।এরমধ্যে ৮২৫.৪৫ মেগাওয়াট অন-গ্রিড এবং অফ-গ্রিড হলো ৩৬৯.১৬ মেগাওয়াট।

মোট নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের মধ্যে ৯৬০ দশমিক ৬৪ মেগাওয়াট আসে সৌরশক্তি থেকে। এছাড়া, ২ দশমিক ৯ মেগাওয়াট বায়ুশক্তি থেকে এবং ২৩০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১০ বছরের বাংলাদেশের উৎপাদিত বিদ্যুতের মাত্র ২ দশমিক ৯ শতাংশ এসেছে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৩২৯ মেগাওয়াট, যা ২০২২ সালে ৭৭৫ মেগাওয়াটে পৌঁছায়।

পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রোডম্যাপ

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোন বাংলাদেশও নবায়নযোগ্য জ্বালানির একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এর আওতায়, ২০৩০ সাল নাগাদ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ৪ হাজার ১০০ মেগাওয়াটে নিতে চায় সরকার।

প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি (জ্বালানি ও বিদ্যুতের) মহাপরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে।  

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সরকার, ২০৪১ সাল নাগাদ দেশের মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে উৎপাদন, এবং প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করে।

বর্তমানে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য উৎস-সহ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে, পিক মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে সাড়ে ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট।

২০২১ সালে অনুষ্ঠিত গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ ৮৯.৪৭ মিলিয়ন টন হ্রাস করার ঘোষণা দেয়। নবায়নযোগ্য শক্তির প্রচলন, বিদ্যুৎ ব্যবহারের কার্যকারিতা ও সাশ্রয় বাড়ানোর মাধ্যমে এটি করার লক্ষ্য রয়েছে।

নবায়নযোগ্য বিদ্যুতে নতুন কিছু বিনিয়োগ

এবছরের জুলাইয়ে ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার তিস্তা সোলার প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এপর্যন্ত এটিই বাংলাদেশে স্থাপিত সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। বেক্সিমকো গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান- বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এটি গড়ে তুলেছে।  

এছাড়া, ওরিয়ন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এনার্জি রিনিউয়েবলস রামপালে ৩৫০ একর জমিতে একটি সোলার পার্ক নির্মাণ করেছে।  এখান থেকে ১৩৪ দশমিক ৩ মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, দেশের ডিজেল-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ২২ টাকা।

সে তুলনায়, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ হয় ১০ টাকা। বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ ৪ টাকা; আমদানিকৃত কয়লায় তা ৬ টাকা প্রতি ইউনিট। ফার্নেস অয়েল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ হয় ১২ টাকা। তবে বিদ্যুতের এসব প্রচলিত উৎস পরিবেশবান্ধব নয়।

বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিটপ্রতি খরচ ৮ থেকে ১০ টাকা। এছাড়া, দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কাপ্তাই’য়ে মৌসুমের ওপর নির্ভর করে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ৩০ পয়সা থেকে ১ টাকা পর্যন্ত হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d