বাংলাদেশে মোবাইল ফোনে চালু হচ্ছে জিও লোকেশন, এ প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে?
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই আলোচনায় এসেছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মানুষের জিও লোকেশন বা অবস্থান শনাক্ত করার প্রযুক্তি, যা আগামী মাস থেকেই মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে কার্যকর হওয়ার কথা।
এটি চালু হলে অপারেটরদের সহায়তা নিয়ে কিংবা সহায়তা ছাড়াই একজন বা এক সঙ্গে অনেক মানুষের সুনির্দিষ্ট অবস্থান শনাক্ত করতে পারবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বা নজরদারির সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলো। অর্থাৎ লোকটি ঠিক কোথায় আছেন এটি চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
আবার এ প্রযুক্তির সাথে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সমন্বয় করে ব্যক্তির জিও লোকেশন ছাড়াও এক সঙ্গে বহু মানুষের গতিবিধি বা মুভমেন্ট সম্পর্কেও জানতে পারবে নজরদারিতে জড়িত সংস্থাগুলো।
এজন্য মোবাইল অপারেটরদের নিজ খরচে নতুন সফটওয়্যার ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সংযোজন করতে চাপ দেয়া হলেও বিটিআরসি কিংবা সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।
“বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর বিষয়। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী দেশ ও জনগণের স্বার্থে যা করা যায় সেটাই তারা করে থাকে। আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানা নেই, বলছিলেন তিনি।
তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এবং নাগরিক অধিকার পরিস্থিতির আলোকে নতুন এই প্রযুক্তি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে অনেকের মধ্যে। কারণ অনেকের আশঙ্কা এটি নির্বাচনের আগে বিরোধীদের দমনের ‘ব্যাপক ভিত্তিক নজরদারি বা আড়িপাতায়’ অপব্যবহার হতে পারে।
তথ্যযোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাষ্ট্রের নিরাপত্তার কথা বলে গণ-নজরদারির একটি সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে এবং তাদের আশঙ্কা এটি বিরোধী মত দমনে অপব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী টেলিকম অপারেটররা সরকারি সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে বাধ্য। যদিও অপারেটররা এসব বিষয়ে কোন মন্তব্যই করতে রাজী হয়নি।